কিক অফের আগেঃ বার্সার প্রতিশোধ না চেলসির ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
ন্যু ক্যাম্প, ২০১২ সাল, সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ। চেলসির মাঠে ১-০ গোলে হেরে আসা বার্সেলোনা এগিয়ে ২-০ গোলে, লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন চেলসি অধিনায়ক জন টেরিও। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বার্সা যখন আবারও ফাইনাল খেলার স্বপ্নে বিভোর, অল্প সময়ের ব্যবধানে রামেরিস ও তোরেসের গোলে সেটা ভেঙে চুরমার। ৬ বছর পর আবারও চেলসিকে ন্যু ক্যাম্পে আতিথিয়তা দিচ্ছে বার্সা। কী হবে আজ? গতবারের সেই হারের বদলা নিতে পারবে মেসিরা? নাকি আবারও কাতালানদের কাঁদিয়ে পরের রাউন্ডে উঠবে চেলসি?
কন্তের ভাবনা
প্রথম লেগে এগিয়ে গিয়েও লিওনেল মেসির গোলে ড্র নিয়েই খুশি থাকতে হয়েছে আন্তোনিও কন্তের দলকে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ম্যাচে একটাই ভুল করেছিল চেলসি, তাতেই পরে অ্যাওয়ে গোল হজম করে বসেছিল তারা। প্রতিপক্ষের মাঠে যে কাজটা সহজ হবে না, সেটা কন্তে ভালোমতোই জানেন, ‘ন্যু ক্যাম্পে খেলা কতটা কঠিন, সেটা বোধহয় আমাকে নতুন করে বলতে হবে না। বার্সেলোনার মাঠ থেকে জয় নিয়ে ফিরতে হলে বিশেষ কিছুই করে দেখাতে হবে আমাদের।’
নির্ভার ভালভের্দে
মার্চের ৪ তারিখে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েছিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। চেলসির বিপক্ষে মধ্যমাঠের প্রাণভোমরার খেলা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। শেষ পর্যন্ত মোটামুটি সুস্থ হয়েই দলে ফিরেছেন। এদিকে সন্তানের জন্মের কারণে লা লিগার আগের ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন মেসি, এই ম্যাচ দিয়েই দলে ফিরছেন। বার্সেলোনা কোচ এর্নেস্তো ভালভের্দে ম্যাচের আগে তাই খানিকটা নির্ভার, ‘এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। এরকম গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ইনিয়েস্তার মতো ফুটবলারের দলে ফেরা আমাদের জন্য বড় পাওনা। ম্যাচে এমন অনেক মুহূর্ত আসবে যখন তার অভিজ্ঞতাটাই আমাদের সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে।’
বার্সা না চেলসি, এগিয়ে কে?
পরিসংখ্যান কিংবা ইতিহাস, সবদিকেই খানিকটা এগিয়ে বার্সেলোনা। নকআউট পর্বের প্রথম লেগে প্রতিপক্ষের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে আসা ৬৮ শতাংশ দলই পরের রাউন্ডে গেছে। ইংলিশ ক্লাবের বিপক্ষে বার্সেলোনার রেকর্ড আরেকটু স্বস্তি যোগাচ্ছে কাতালানদের। এখন পর্যন্ত ইংলিশ ক্লাবের বিপক্ষে মোট ২৩ টি ম্যাচ জিতেছে বার্সা, যা টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
ঘরের মাঠে আরও ভয়ঙ্কর বার্সেলোনা। ৩৯ টি নকআউট ম্যাচের ভেতর ২৫ টিতেই জিতেছে তারা, হার ১০টিতে। একমাত্র ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ২০০৭ সালে ন্যু ক্যাম্পে বার্সাকে ২-১ গোলে হারিয়ে এসেছিল লিভারপুল।
চেলসিও কিন্তু কম যায়না। ন্যু ক্যাম্পে যেখানে অন্য দল নাকানি চুবানি খায় অহরহ, সেখানে শেষ ৪ ম্যাচের একটিতেও হারেনি চেলসি। হোম-অ্যাওয়ে মিলিয়ে বার্সার বিপক্ষে শেষ ৮ ম্যাচে ২টিতে জিতেছে চেলসি, ড্র হয়েছে বাকি ৬ ম্যাচ।
এই মৌসুমে এরই মাঝে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়েছে চেলসি। বার্সার বিপক্ষে জিতলে তারাই হবে এক মৌসুমে দুইটি স্প্যানিশ ক্লাবকে হারানো তৃতীয় ক্লাব। ২০০০-০১ মৌসুমে এসি মিলান হারিয়েছিল বার্সেলোনা ও দেপোর্তিভোকে। ২০০২-০৩ মৌসুমে আরেক ইতালিয়ান ক্লাব রোমা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে।