বিলবাওকে হারিয়ে রেকর্ডের আরও কাছে বার্সা
আগের তিন অ্যাওয়ে ম্যাচেই অ্যাথলেটিক বিলবাও হেরেছিল ২-০ ব্যবধানে। ন্যু ক্যাম্পের যাত্রাটা যে শুভ হবে না সেটা বোধ হয় আগে জানা ছিল তাদের। তবে কাতালুনিয়া থেকে বাস্ক কান্ট্রিতে ফিরে যাওয়ার সময় হয়ত আরও একটি দুই গোলের হার নিয়ে খুব বেশি আফসোস থাকবে না বিলবাওয়ের। এবারেরটা যে বার্সেলোনার বিপক্ষে, আর ম্যাচের যে পরিসংখ্যান সেটা তো বলছে হারের ব্যবধানটা আরও বড়ই হতে পারত বিলবাওয়ের হারের। পাকো আলকাসের আর লিওনেল মেসির গোলে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা আরও ৩৬ এ নিয়ে গেছে বার্সেলোনা। আর দুই ম্যাচ জিতলেই টানা জয়ের স্প্যানিশ রেকর্ডটা ছুঁয়ে ফেলবে বার্সা।
ন্যু ক্যাম্পে বিলবাওয়ের বিপক্ষে দলে ছিলেন না লুইস সুয়ারেজ, সার্জিও বুস্কেটস। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও ছিলেন বেঞ্চে। আক্রমণভাগে লিওনেল মেসি, উসমান ডেম্বেলেদের সাথে শুরু করেছিলেন পাকো আলকাসের। দলে নিয়মিত সুযোগ পান না, তবে আজ পেয়েই কাজে লাগালেন তিনি, সময় নিলেন মাত্র ৮ মিনিট। বাঁ দিক থেকে আসা জর্দি আলবার ক্রস থেকে গোল করেন শুরুতেই দলকে এগিয়ে দেন আলকাসের। ম্যাচের ৩০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের আগ পর্যন্ত অবশ্য বিলবাও রক্ষণকে দম ফেলারই সুযোগ দিচ্ছিলেন না মেসি, কুতিনিয়োরা। একবার বারপোস্টে লেগে ফেরত আসে মেসির ভলি। এরপর গোছানো এক আক্রমণ থেকে কুতিনিয়ো, মেসি, ডেম্বেলে তিন জনের যে কেউই গোলটা পেতে পারতেন, কিন্তু শট করতে পারেননি কেউই।
ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচের ঘড়ি আধ ঘন্টা কাঁটা ছোঁয়ার আগেই অবশ্য বার্সাকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন মেসি। এই মৌসুমে বেশ কয়েকবার ফ্রি-কিক থেকে গোল ছাড়া ডিবক্সের বাইরে থেকে গোলরক্ষককে হারাতে পারেননি এই আর্জেন্টাইন। ডান দিক থেকে ডেম্বেলের দেওয়া পাসে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে গোল করে আজ সেটাও করে ফেললেন। গোলের পর হয়ত তাই স্বাভাববিরুদ্ধ এক উদযাপন করেই ক্ষণটা স্মরণীয় করে রেখেছেন মেসি।
প্রথমার্ধে বার্সার রক্ষণ সামলে আর আক্রমণেই ওঠা হয়নি বিলবাওয়ের। বার্সার ৯ শট অন টার্গেটের বিপরীতে প্রথমার্ধে বিলবাও কোনো শটই নিতে পারেনি গোলে। সেটা অবশ্য যতো না বেশি অস্বস্তির ছিল, তার চেয়ে বেশি স্বস্তির ছিল বার্সার কাছে আর কোনো গোল হজম না করা। ৩৪ আর ৪৪ মিনিটে ফিলিপ কুতিনিয়ো আর পলিনিয়োর শট দুবার বারপোস্টে লেগে ফেরত না আসলে তো হারটা লজ্জারই হত তাদের জন্য।
প্রথমার্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও, বিরতির পর কিছুটা লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল বিলবাও। তবে সেটা স্থায়ী ছিল মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য। পরে অবশ্য আর্তিজ আদুরিজ নেমে কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছিলেন বার্সার রক্ষণের জন্য। তবে জেরার্ড পিকে, স্যামুয়েল উমতিতির দৃঢ়তায় বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারেননি। আর দ্বিতীয়ার্ধে বার্সাও তেমন একটা গোলের সুযোগ করতে পারেনি। মেসি অবশ্য ফ্রি কিক পেয়েছিলেন ভালো জায়গা থেকে, কিন্তু বিলবাওয়ের দেয়ালে বাধা পেয়ে আজ আর অতিমানব হয়ে ওঠা হয়নি তার। তাই মালাগার পর বিলবাও ম্যাচের গল্পটাও ছিল প্রায় একই রকম। প্রথমার্ধের দুই গোলের পর, পরের অর্ধে গোলশূন্য। ম্যাচের এক তৃতীয়াংশ পেরিয়ে যাওয়ার পর আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও নেমেছিলেন মাঠে। তবে, তিনিও আর সুবিধা করতে পারেননি। দুই গোলের জয় নিয়েই তাই লা লিগার শিরোপার দিকে আরেকটু এগিয়ে গেল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল।