জয় ছাড়াও অনেক কিছু পেল বার্সেলোনা
এক অর্থে ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে আজকের ম্যাচটা থেকে খুব বেশি কিছু পাওয়ার ছিল না বার্সেলোনার। লিগ জেতা হয়ে গেছে আগেই, আগের সপ্তাহে এল ক্লাসিকোও শেষ হয়ে গেছে। নিজেদের অপরাজেয় রেকর্ডটা ধরে রাখাই শুধু পাওয়ার ছিল। তবে বার্সেলোনা যেন পণ করেছে, ড্র করা দূরে থাক, বড় জয় ছাড়াই মাঠ ছাড়বে না। ভিয়ারিয়ালকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েই ধরে রেখেছে কোনো ম্যাচ না হারার রেকর্ড। দুই গোল করেছেন উসমান দেম্বেলে, একটি করে গোল করেছেন লিওনেল মেসি, ফিলিপ কুতিনহো ও পাওলিনহো।
একটু ভুল হয়ে গেল আসলে কথাটা। এই ম্যাচ থেকে অন্তত মেসির কিছু পাওনা ছিল। ৩৩ গোল নিয়ে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটে এক পা গলিয়ে রেখেছিলেন আগেই। আজ আরও এক গোল করে অন্য পায়েও বুটজোড়া পরেই ফেলেছেন। ৩৪ গোল নিয়ে মেসিই সবার ওপরে, ৩১ গোল নিয়ে দুইয়ে আছেন সালাহ।
তবে মেসির গোলটা যেভাবে হয়েছে সেটা হতে পারে পুরো ম্যাচে অসাধারণ বার্সেলোনার দারুণ একটা বিজ্ঞাপন। মেসির ফিরতি পাস থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে ঠিক যেন চামচের মতো তুলে দিয়েছিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। মেসি তেমনই প্রায় মখমলের মতো স্পর্শে বলটা জড়িয়ে দিলেন জালে। ন্যু ক্যাম্পে সময়টা শেষ হয়ে আসছে ইনিয়েস্তা, বার্সার হয়ে এতোদিন যা করেছেন, মেসির গোলে সেই আলোর কিছুটা অন্তত দেখা গেছে।
তবে প্রথমার্ধ শেষের ওই গোলের আগে হয়ে গেছে আরও দুই গোল। প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে বার্সাকে ১১ মিনিট। ডান দিক থেকে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন দেম্বেলে, বাঁ পায়ের শট ঠেকিয়েও দিয়েছিলেন ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক। কিন্তু ফিরতি বলটা ফাঁকায় পেয়ে যান কুতিনহো, জালে ঠেলে দিতে ভুল করেননি।
১৬ মিনিটে গোলের উৎসমুখে আবারও ইনিয়েস্তা। এবার তাঁর বাড়ানো বল থেকে লুকাস ডিনিয়ের ঠেলে দেওয়া বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন পাওলিনহো। এই মৌসুমে অনেকগুলো গোলের সময়ই জায়গামতো ছিলেন, আজ সেটা দেখিয়েছেন আরও একবার।
ভিয়ারিয়াল বিরতির আগেই সুযোগ পেয়েছিল ব্যবধান কমানোর, কাজে লাগাতে পারেনি। তবে বিরতির পর ৫৪ মিনিটে সেই সুযোগ পেয়ে যায়। তাতে অবশ্য ভাগ্যেরও অবদান আছে খানিকটা। পাবলো ফরলান্সের শটটা দিকবদল করে সতির্থ নিকোলা সানসোনের গায়ে লেগে ঢুকে যায় জালে।
পুরো ম্যাচেই দারুণ খেলছিলেন দেম্বেলে, তবে গোলটা পাওয়া হচ্ছিল না। ৮৭ মিনিটে অবশেষে গেরো কাটল, তাতে অবশ্য বেশির ভাগ কৃতিত্বই রাকিতিচের। ডান দিক থেকে যেভাবে কয়েকজনকে কাটিয়ে ঢুকে ক্রস করেছিলেন, তা থেকে দেম্বেলের গোল করা ছাড়াও উপায় ছিল না। তবে যোগ করা সময়ের গোলটা শুধুই দেম্বেলের নিজের। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক দৌড়ে ছিটকে দিয়েছেন দুজন ডিফেন্ডারকে, এরপর গোলরক্ষক মাথার ওপর চিপ করে করেছেন অনেক দিন মনে রাখার মতো একটা গোল।
৩৬ ম্যাচ শেষে বার্সার পয়েন্ট এখন ৯০। বাকি দুই ম্যাচ না হারলেই নিশ্চিত হবে, আধুনিক স্প্যানিশ ফুটবলে কোনো ক্লাবের প্রথম অপরাজেয় থাকার কীর্তি।