• পাকিস্তান - আয়ারল্যান্ড সিরিজ
  • " />

     

    নেট সেশন : আইরিশ সমুদ্রে টেস্ট ক্রিকেটের ঢেউ

    নেট সেশন : আইরিশ সমুদ্রে টেস্ট ক্রিকেটের ঢেউ    

    কবে, কখন
    মালাহাইড ক্রিকেট গ্রাউন্ড, দ্য ভিলেজ, ডাবলিন
    ১১-১৫ মে, ২০১৮
    বাংলাদেশ সময় ১৬.০০


    টসে নাঈমুর রহমান দূর্জয়ের সঙ্গী সৌরভ গাঙ্গুলি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ ভারত। ১৮ বছর পর টেস্ট খেলতে নামছে আরেকটি দেশ, এবার আয়ারল্যান্ডের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, যে পাকিস্তান প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারতের বিপক্ষেই, আজ থেকে ৬৬ বছর আগে। চক্রটা এখানে শেষ নয়, চক্রের ওপরে যখন আয়ারল্যান্ড, তখন পাকিস্তান একটা গুরুত্বপূর্ণ নাম। প্রায় একযুগ আগে জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে এই পাকিস্তানকে চমকে দিয়েই নতুনপথে যাত্রা শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। এবার আইরিশ সমুদ্রে টেস্ট ক্রিকেটের ঢেউ। 

    এওইন মরগান এরই মাঝে ইংল্যান্ড চলে গেছেন, এড জয়েস ও বয়েড র‍্যাঙ্কিন গিয়ে আবার ফিরেছেন আইরিশ শার্টে। ট্রেন্ট জনস্টন, জন মুনিরা গেছেন অবসরে। মানুষের জীবনে যেমন কতো আক্ষেপ, ক্রিকেটেও তাই। এর মধ্যে সবচেয়ে বড়টা বোধহয় টেস্ট খেলা। কেউ খেলতে পারেন না ভুল সময়ে জন্ম নিয়ে, কেউ পারেন না দেশের টেস্ট মর্যাদাই নেই বলে। সেই আক্ষেপে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে কতজনের! 

     

     

    পোর্টারফিল্ড, জয়েস, ও’ব্রায়েন ভাতৃদ্বয়- অন্তত এদের সেই আক্ষেপটা সঙ্গী হচ্ছে না। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে আগমণী বার্তা দেওয়া আয়ারল্যান্ড পৌঁছে গেছে টেস্ট স্টেশনে, এবার শুধু সবুজ পতাকা ওড়ার অপেক্ষা, এরপর আরেক ভ্রমণ। 

    ইতিহাসের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সবচেয়ে ভাল ফল জিম্বাবুয়ের। ভারতের সঙ্গে ড্র করেছিল তারা হারারেতে। অস্ট্রেলিয়া ইতিহাসের প্রথম টেস্টে হারিয়েছিল ইংল্যান্ডকে, নিজেদের প্রথম টেস্টে একমাত্র জয়ী দল তারাই। জয়ের জন্য অপেক্ষা অনেকেরই হয়েছে বেশ দীর্ঘ, নিউজিল্যান্ডের লেগেছিল ২৬ বছর, বাংলাদেশের ৩৫ ম্যাচ। 

    আয়ারল্যান্ড দেখাতে পারবে নতুন কোনও চমক? ২০০৭ বিশ্বকাপের মতো? না দেখালেও অবশ্য কিছু যায় আসবে না আয়ারল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হওয়া ১১ জনের, অথবা পুরো আয়ারল্যান্ডের। নিজেদের প্রথম টেস্ট, রোমাঞ্চ তো সবচেয়ে বেশি এতেই! 


    রঙ্গমঞ্চ
    ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওয়ানডে আয়োজন করতে সাময়িক স্ট্যান্ড বানানো হয়েছিল মালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ড, দ্য ভিলেজে। তবে টেস্ট ভেন্যু বানাতে আরও বেশি সংস্কারের প্রয়োজন হয়েছে, আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটকে খরচের হাতটাও করতে হয়েছে বেশ লম্বা। তাদের ওয়েবসাইটে টেস্ট ম্যাচ দেখতে আসা দর্শকদের জন্যও যেমন নির্দেশনার তালিকাটা বেশ লম্বা, আর যাই হোক, প্রথম টেস্ট ম্যাচের অভিজ্ঞতা বলে কথা। আর ডাবলিনের এই মাঠের উইকেট থাকার কথা সবুজাভই, নিজ কন্ডিশনে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শক্তি তো সিম বোলিং-ই। 

    যাঁদের ওপর চোখ

    ওরা ১১ জন
    দেশের যখন প্রথম টেস্ট, তখন আলাদা করে একজনের ওপর নজর রাখার কথাটা বাদ দেওয়াই যায়! ঐতিহাসিক ম্যাচে ১১ জনের অবদানের মাত্রাটা ভিন্ন হতে পারে, তবে সম্মিলিতভাবে তো আয়ারল্যান্ডে সবাই হবেন ইতিহাসের অংশ। 


    শাদাব খান
    পেস বোলিংয়ে পাকিস্তানের লাইন-আপ মোটামুটি নিয়মিতই। তবে ইউরোপ সফর শুরুর আগেই তারা ধাক্কা খেয়েছে মূল স্পিনার ইয়াসির শাহকে হারিয়ে। উরুর চোটে নেই এই লেগস্পিনার, দায়িত্বটা এসে পড়েছে এক টেস্টের অভিজ্ঞ শাদাব খানের ওপর। নর্দাম্পটনশায়ারের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে প্রত্যাশাটা নিজেই বাড়িয়েছেন তিনি। 

    সম্ভাব্য একাদশ

    শেষ মুহুর্তে চোট পেয়ে ছিটকে গেছেন পেসার ন্যাথান স্মিথ। তার জায়গায় ডাকা হয়েছে ক্রেইগ ইয়াংকে। তবে র‍্যাঙ্কিন ও মারটাঘের সঙ্গে তৃতীয় পেসার হিসেবে খেলতে পারেন স্টুয়ার্ট থম্পসন। অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের স্পিনের সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলবেন কেভিন ও’ব্রায়েন। 

    আয়ারল্যান্ড : উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড (অধিনায়ক), পল স্টার্লিং, এড জয়েস, নিয়াল ও’ব্রায়েন (উইকেটকিপার), অ্যান্ডি ব্যালবার্নি, গ্যারি উইলসন, কেভিন ও’ব্রায়েন, স্টুয়ার্ট থম্পসন, অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন, বয়েড র‍্যাঙ্কিন, টিম মারটাঘ

    ক্যারিবীয় বিশ্বকাপে আইরিশ রুপকথার ম্যাচে পাকিস্তান অধিনায়ক ছিলেন ইনজামাম-উল-হক। এবার আইরিশদের প্রথম টেস্টে অভিষেক হয়ে যেতে পারে আরেক উল-হকের, ইমাম আবার ইনজামামের ভাতিজাও। প্রস্তুতি ম্যাচেও ভুগেছেন আজহার আলি, সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা ব্যাটিং-ই। 

    পাকিস্তান : ইমাম-উল-হক, আজহার আলি, হারিস সোহেল, আসাদ শফিক, বাবর আজম, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), শাদাব খান, ফাহিম আশরাফ,মোহাম্মদ আমির, রাহাত আলি, মোহাম্মদ আব্বাস

     

    সংখ্যার খেলা 

    • টেস্ট খেলুড়ে ১১তম দেশ হচ্ছে আয়ারল্যান্ড, ১৮ বছরের ব্যবধানে আরেকটি দেশ পাচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট। 
    • এই ম্যাচে খেললে দুই দেশের হয়ে টেস্ট খেলা ১৫তম ক্রিকেটার হবেন বয়েড র‍্যাঙ্কিন। এর আগে ইংল্যান্ডের হয়ে ২০১৩ অ্যাশেজে একটি টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। 
    • ৩৯ বছর ২৩১ দিন বয়সে টেস্ট অভিষেক হতে পারে এড জয়েসের। তিনি হবেন এই শতাব্দীর সবচেয়ে বয়সী অভিষিক্ত ক্রিকেটার। 
    • ২০০০ সালে একটি টেস্ট খেলেছিল আয়ারল্যান্ড, এই পাকিস্তানের বিপক্ষেই। আইরিশ মেয়েদের একমাত্র টেস্ট সেটিই, সেখানে খেলেছিলেন আবার এড জয়েসের বোন ইসোবেল জয়েস। ইনিংস ব্যবধানে জিতেছিল আয়ারল্যান্ড।