বিশ্ব একাদশ বনাম এশিয়া একাদশ, ভুলে যাওয়া এক স্মৃতি
পোস্টটি ৫৩১৫ বার পঠিত হয়েছেটি টোয়েন্টি লীগগুলোর কল্যাণে এখন ক্রিকেট ভুলেছে দেশ, কাল আর সীমানার গণ্ডি। আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশে একসাথে খেলছেন সাকিব আল হাসান আর শেন ওয়াটসনরা। এমনই এক বহুজাতিক ম্যাচের গল্প বলব আজ। তবে তা টি টোয়েন্টি যুগের অনেক আগের কথা।
আইসিসি ক্রিকেট সপ্তাহ উপলক্ষে ২০০০ সালের ৮ এপ্রিল ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিসিবি আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমী ম্যাচ। এশিয়ার তিন ক্রিকেট পরাশক্তি বনাম অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশ। এশিয়া একাদশের হয়ে টেন্ডুলকার, গাঙ্গুলি, জয়সুরিয়া, ওয়াসিম আকরাম, মুরালি, অরবিন্দ ডি সিলভারা মুখোমুখি হলেন অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের মার্ক ওয়াহ, ক্যালিস, গিলক্রিস্ট, ক্রিস কেয়ারন্স, ল্যান্স ক্লুজনারদের।
প্রথমে ব্যাট করে টেন্ডুলকারের ৭৭ বলে ৮০, গাঙ্গুলির ৬৬ বলে ৬৭, অরবিন্দ ডি সিলভার ৪২ বলে ৩৯ আর মঈন খানের ৩৪ বলে ৩১ রানে এশিয়া একাদশ ৩২০ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে। জবাব দিতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বিশ্ব একাদশ। ৩৬ ওভারে ১৮৬ রান উঠতেই আউট মার্ক ওয়াহ, ক্যালিস, গিলক্রিস্ট, ক্রিস কেয়ারন্স, ল্যান্স ক্লুজনারসহ প্রথম ৬ ব্যাটসম্যান। ১৯৬ রানে ৭ম ব্যাটসম্যান হিসাবে ফিরে যান ফ্রাঙ্কলিন রোজ। এই অবস্থায় নবম ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের আন্ড্রু ক্যাডিককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন “দ্যা ফিনিশার” মাইকেল বেভান। একাই দেয়াল হয়ে দাঁড়ান মুরালি, ওয়াসিম, কুম্বলে, ভাসদের সামনে। তাঁর তাণ্ডবে ৪৯ ওভার শেষে বিশ্ব একাদশের স্কোর ৩০১, জয়ের জন্য দরকার ২০ রান। আব্দুল রাজ্জাককে পরপর ৩টি চার মেরে অসম্ভবকে সম্ভব করার ইঙ্গিত দিলেন, কিন্তু ৫ম বলে ২ রান নিতে গিয়ে নন স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট ক্যাডিক। ২৩ রান করে আউট হলেন ক্যাডিক, ভাঙল ১১৯ রানের জুটি।
শেষ বলে জয়ের জন্য চাই ৬ রান। মাঠে দর্শক, খেলোয়াড় সবাই স্নায়ুচাপে ভুগছেন, কি করবেন বেভান। রাজ্জাকের ফুল লেন্থ বলটা আম্পায়ারের মাথার উপর দিয়ে তুলে দিলেন ৬য়ের জন্য। গ্যালারির ২০ হাজার চোখ তখন লং অন বাউন্ডারির দিকে, কিন্তু না বল সীমানার বাইরে যাবার আগে একবার মাটি ছুঁয়ে গেল, এক রানে হারল বিশ্ব একাদশ। ১৯ চার আর ৫টি বিশাল ছক্কায় ১৩২ বলে ১৮৫ রানের এক অবিস্মরণীয় ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হলেন ট্র্যাজিক হিরো মাইকেল বেভান।
কেউ চাইলে ম্যাচটি দেখতে পারেন এই লিঙ্ক এ-
https://www.youtube.com/watch?v=eKnjSRIBdc8
- 0 মন্তব্য