যদি আকাশের গায়ে কান না পাতি.....
পোস্টটি ১৬২৪৪ বার পঠিত হয়েছে
আর দশটা দিনের মতোই। সেহরির সেই চক্র, হল-চানখারপুল-ভীড়-ফ্লাইওভার থেকে নামা ট্রাকের সারি। তবুও, ভোরটা একটু আলাদা। ঘুমানোর তাড়া আছে। চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে সরিয়ে রাখার ব্যাপার আছে। কী হবে, না হবে- এই চক্রে পড়ে গেলেই খেল খতম। ঘুমের বারোটা-একটা বেজে যেতে পারে। ত্বকি ভাইয়ের সাথে দেখা সেখানেই। ত্বকি ভাই প্যাভিলিয়নের বড় ভাই, কদিন বাদেই উড়াল দেবেন সেই দূর আমেরিকায়। ঘুমজড়ানো চোখে সেহরি করতে ঢুকবেন, আমি বের হচ্ছি।
‘কী মনে হচ্ছে?’
‘চিন্তা করা যাবে না।’
‘সেটাই ভাবতেছি, কিছু মাথায় না রেখে খেলা দেখতে বসবো।’
‘কাল অফিস আইসেন কিন্তু।’
চানখারপুল থেকে হলে ফিরি। হুট করে কারেন্ট চলে যায়। আজকের দিনটা কি একটু আলাদা?
**
হোস্টেলে থাকি। দিনাজপুর জিলা স্কুল। বিশ্বকাপ তখনও শুরু হয়নি। আমি প্রথম আলোর একনিষ্ঠ পাঠক। পড়ি, কেটে রাখি। খাতা-কলম-পেন্সিল দিয়ে হিজিবিজি করার অভ্যাস তখনও আছে। একটা বড় কাগজে একটা ছবি আঁকি। একটা মাঠ, মাঝখানে উইকেট। ওই বিশ্বকাপের লোগো। আর বাংলাদেশ স্কোয়াডের সব ক্রিকেটারের নাম। কাউকে দেখাই না, ট্রাঙ্কে থাকে। রাত গভীর হলে একা একা খুলে দেখি।
সব ম্যাচ দেখি আমি। ভারতের সঙ্গে সেই ম্যাচে সঙ্গী হয় সবাই। ডাইনিংয়ে শব্দ করার মতো থালা-বাটির মেয়াদ সেদিন অনেকখানি কমিয়ে ফেলি আমরা। খেলার মাঝবিরতিতে ছাদে উঠে অ্যান্টেনা ঠিক করি। পরের পরদিন প্রথম আলোর হেডলাইন আসে, ‘স্বপ্ন এখন সেমিফাইনাল’।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, ভারতকে-শ্রীলঙ্কার-হারানোর সমীকরণ পেরিয়ে সুপার এইটেই আটকে যাই আমরা। আয়ারল্যান্ড চোখ রাঙিয়ে দেয়। তাতে কী! আমরা সুপার এইট খেলেছি তো!
তারও ছয় বছর পর। তল্লাবাগের একটা ফ্ল্যাটে থাকি, ভাইয়ের সঙ্গে। একটা পুরোনো মনিটরে ক্রিকেট দেখি। অশ্বিনের শেষ বলে মিস করে গেলেন জেমস ট্রেডওয়েল। উল্লাসে মাতলো ভারতীয় দল। বাংলাদেশ সে টুর্নামেন্টে ছিল না। সেরা আট দলের টুর্নামেন্ট যে সেটা!
তারও চার বছর আগে। তেজকুনিপাড়ার এক ফ্ল্যাট। তখন তিন ভাই একসঙ্গে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পরের রাউন্ডে গেছে। সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় আরেকটা টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশ সেখানে নেই। ওই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখা। নিউজিল্যান্ড আর ভেট্টোরিকে দেখা। তিন বছর আগের চ্যাম্পিয়ন রিকি পন্টিংয়ের হাতেই ট্রফিটা ওঠে আবার। আইসিসি বিজয়ী দলের সবাইকে একটা করে সাদা ব্লেজার দেয়। বেশ অদ্ভূত।
**
রিকশা নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত যেতে রাজি হয়না। আজ একটা অন্যরকম দিন। ভার্সিটির গেটে নামিয়ে দেয়। যেন শেষ না হওয়া রিকশা-লেগুনা-গাড়ি-মানুষের ভীড় ঠেলে ওপারে যাই। বিকল্প-সেফটি বাসে সিট পেতে কপালের জোর লাগে। বাসে উঠে একটা সিট নজরে পড়ে। সেই পেছনে, যে সিটে বসলে শুধু নিজের না, আশেপাশের সবারই কষ্টটা বেড়ে যায়। এর চেয়ে এই প্রথম সিটের সামনের জায়গাটাতে দাঁড়িয়ে থাকাই ভাল। বিস্তর জায়গা সেখানে। এসব বাসে সাধারণত এমন থাকে না, সাত নম্বর-আট নম্বরে থাকে। কিন্তু আজ আলাদা দিন।
সায়েন্স ল্যাবে জ্যামে আটকা পড়ে ফোনের অ্যাপ খুলি। ক্রিকইনফো। হাতে সময় আছে, কোনও যদি আপডেট মেলে তবু! এখন ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করা যায়। এ ম্যাচটা আর দুই-একদিন পর হলে খারাপ হতো না। তবে এখন এটা ভবিতব্য, ঘড়ি ধরে কয়েক মিনিট। কলাবাগানের মোড়ে প্রত্যেকদিনের মতো রিকশা-মানুষে পার হওয়ার লড়াই। যতোই আলাদা হোক, এই সময়ে এটা নিত্য ঘটনা।
আমি প্যাভিলিয়নে যাই। একটা কি-বোর্ড দরকার ছিল। নতুন একটা প্যাকেট দেখি। দাকে জিজ্ঞাসা করে নিই। আজ একটা অন্যরকম দিন। আজ বাংলাদেশের সেমিফাইনাল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলছে বাংলাদেশ।
**
আমি তখনও হোস্টেলে। এক বন্ধুর বাসার পত্রিকা আমার কারণে ক্ষত-বিক্ষত হতো, রুম্মান আমার পাগলামো মেনে নিত তখন। তাদের এক চিলতে জায়গা ছিল বাসায়। সেখানে দুজন মিলে গল্প করতে করতে ক্রিকেট খেলতাম। সেখানেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচটা দেখি। শাহরিয়ার নাফিসের সেঞ্চুরিটা দেখি। ড্রইং রুমের পুরোনো আমলের সাদা-কালো টেলিভিশনে। ভেতরের রুমে রঙ্গিন টিভি ছিল, সে পর্যন্ত যেতাম না সবসময়। আদতে সে ম্যাচটা ছিল কোয়ালিফাইং। জিম্বাবুয়েকে তখন আমরা বলেকয়ে হারিয়ে দেই।
শ্রীলঙ্কা বা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পারি না। বিদায় নেই। সেই চক্র। অন্য দেশের খেলা দেখা। ইউনুস খান-পিসিবি নাটক। অস্ট্রেলিয়ানরা শারদ পাওয়ারকে মঞ্চ থেকে ঠেলে দেন উদযাপনের আগে। রিকি পন্টিংয়ের আক্ষেপ দূর হয়। সব জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটাই যে জেতা হয়নি! আমার পেপার-কাটিংয়ে নাফিস থাকেন। পন্টিংরাও থাকেন।
**
ত্বকি ভাই আমার পাশের চেয়ারে বসেন। তিনি খেলা দেখতে এসেছেন। পিএইচডি করতে আমেরিকা যাবেন, প্যাভিলিয়নের কাজ প্রায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়ে এসেছে তার। জাতীয় সঙ্গীতে উঠে দাঁড়িয়ে গলা মেলাই আমরা। এই দেশের প্রতি অনেক আক্ষেপ আছে, অনেক আক্ষেপ থাকবে। আমার সোনার বাংলা তবুও শরীরের কাঁটা দিয়ে যাবে।
সৌম্য আউট হন। ছ্যাত করে ওঠে বুকের মাঝে। ওই একই সৌম্য। ফর্মটা ফিরলো না আজও। ফিরবে আশা করি।
সাব্বির চড়াও হোন। ডট বলের চাপ বাড়ে। উইকেটটা কি আসলেই ব্যাটিংয়ের জন্য কঠিন! চাপে পড়ে সাব্বির জোরের ওপর কাট করতে যান। সাব্বির ড্রেসিংরুমেই চলে যান।
সেদিন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটির স্মৃতি যেন ফিরিয়ে আনেন তামিম-মুশফিক। তারপর কেদার যাদব। কোহলি আর ভারত ‘প্যানিক’ শুরু করেছিল যেন। কোহলি তার তুরুপের তাসটা খেলে দেন। নিতান্ত বাজি। অথবা ওভার শেষ করা। মাঝের ওভারগুলো দ্রুতগতিতে শেষ করে ফেলেন তিনি। তামিম, সেই চিরায়ত তামিম বড় শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন! তামিম সেঞ্চুরি পান না।
মুশফিক নিজেই ফাঁদ তৈরি করে ধরা দেন। ক্যামেরা এরপর স্লো মোশনে তার হেলমেটবন্দী মুখচ্ছবিটা দেখায়। ‘কী করলো না করলো’ এর ভিড়ে কি হারিয়ে যায় মুশফিকের নিজের হতাশাটা?
**
আমাদের বাবুর্চিকে আমরা চাচা বলে ডাকতাম। শফিকুল নাম ছিল তার। স্যার ডাকতেন সফিয়াল। আমরা শুধুই চাচা। সেই চাচা, স্যার বেত আনতে বললে আমগাছের একটা ভঙ্গুর-পচা-শুকনো ডাল এনে দিতেন যিনি, যাতে স্যার মারতে গেলেই ভেঙ্গে যায়! চাচা আমাদের সাথে ক্রিকেট খেলতেন, অফস্পিন করতেন।
ব্রাউন-ব্র্যাডশর আলো-আঁধারির কাব্যটা সেই চাচার বাসায় দেখেছিলাম। চাচার বাড়িটা প্রথম দেখায় ভুতূড়ে মনে হতো। হোস্টেলে এমনিতেই অনেক অনেক ভূত-জ্বীনের কাহিনী প্রচলিত ছিল, জুনিয়রদের ভয় দেখানোর একটা মোক্ষম উপায়ঃ ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। এই সিলিংয়েই। গলায় দড়ি দিসিলেন একজন!’
বাংলাদেশের ইনিংস তখন ভুতূড়ে। ১০০-এর নিচে অল-আউট, কতো কতো বড় ব্যবধানে হার। ২০০৫ আর কার্ডিফ তখনও আসে নাই, ২০০৫ এর অ্যাশেজ তখনও আসে নাই।
**
তাসকিন এদিক-ওদিক মাথা নাড়েন। যেন ব্যাটিংটা বুঝে নিচ্ছেন তখন। ২৫ ওভারের পর প্রশ্ন উঠেছিল, বাংলাদেশ কতো করবে। পরের ২৫ ওভারে প্রশ্ন একটাই, বাংলাদেশ ওই ২৫ ওভার খেলতে পারবে কিনা। বাংলাদেশ খেলেছে। খেলেছে মূলত মাশরাফিতে ভর করে। ব্যাটসম্যান মাশরাফির ওপর ভর করে।
ইফতারের সময় হয়। আমরা ইফতার করি। ছোলা-পিঁয়াজুতে মন বসাতে হয়।
মাশরাফি নামেন। নেচে বেড়ান। সপাটে চালান। এপাশে লাফিয়ে যান, ওপাশে লাফিয়ে আসেন। চার হয়। মাশরাফির ক্যামিও চলে। কোহলি এসে জড়িয়ে ধরে হাসিমুখে কী যেন বলতে থাকেন। জাসপ্রিত বুমরাহর মতো মাশরাফির ব্যাটিং স্টাইলে তিনিও হয়তো মজা পেয়েছেন বেশ! মাশরাফি হাসতে থাকেন। এ দলে তার অনেক প্রিয় বন্ধু আছেন। যুবরাজ সিং। মাশরাফির মতো নিত্য লড়াই হয়তো তার নয়, তবে তিনিও তো জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, ক্যান্সারকে হার মানিয়েছেন!
**
যুবরাজ সিংয়ের অভিষেক সেবার। নিউজিল্যান্ড যেবার নিজেদের এখন পর্যন্ত একমাত্র ‘বড়’ শিরোপাটা জিতলো। কেনিয়া। নাইরোবি। জিমখানা।
আমি তখনও হোস্টেলে যাইনি। বাংলাদেশ তখনও টেস্ট খেলেনি। আমরা সার্কেল করে টেস্ট খেলি। দুই ইনিংসের। কে যেন কী ফলো-অনের নিয়ম বানায়।
আমরা তখনও কি রেডিওতে খেলা শুনি? ভরদুপুরে? চৌধুরি জাফরউল্লাহ শারাফাত। ‘মৃধা ভাই, আমার মনে হয়……!’
বাংলাদেশ তখনও কেনিয়ার কাছে হারে। তবে টেস্ট স্ট্যাটাসটা পাওয়া হয়ে গেছে। কদিন বাদেই আমিনুল ইসলামের কেজি ব্যাটটা ওপরে উঠবে। সুনীল জোশি নামের স্পিনারটার নাম শুনবো। বেলুন উড়বে। সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে টস করতে নামবেন নাইমুর রহমান দূর্জয়।
তখনও হয়নি এসব।
**
উইকেট পড়ে না। মাশরাফি একদিক থেকে বল করে যান। টানা। রোহিতের ব্যাটিং দেখে মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, ‘শঅঅট!’ ধাওয়ান-রোহিতের জুটি খেলেই যাচ্ছে। আমাদের দিন নয় আজ।
ওপাশ থেকে মুস্তাফিজকে বদলে তাসকিনকে আনেন মাশরাফি। সাকিবকে আনেন না, নিজেই আসেন। আজই এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবার রবীন্দ্র জাদেজা টানা দশ ওভার বোলিং করেছেন। মাশরাফি আট ওভার করে থামেন। এর আগেই উইকেটটা পান। দিনে বাংলাদেশের প্রাপ্ত একমাত্র উইকেটটা মাশরাফিরই।
বিশ্বকাপের পর থেকে আমাদের সেরা বোলার তিনি। দলের বদলে যাওয়ার পেছনে কতোজন শুধু অধিনায়কত্বকেই দেখতে চান তার। অথচ যে বোলার মাশরাফিকে পাওয়া যায়না বলে কতো হতাশা, সেই মাশরাফিই যখন নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন, অনেকেই তখন বলছেন ভিন্ন কথা!
আমরা চা খেতে যাই তারও আগেই।
**
আমার এক বন্ধুর ডাক নাম ওয়ারলেস। ওয়ালেস। ফিলো ওয়ালেস নামের সেই ব্যাটসম্যানের জন্য। প্রথম বলেই ছক্কা মারা সেই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান। আমাদের দেশে হওয়া মিনি বিশ্বকাপ। চোকার্স দক্ষিণ আফ্রিকা সেবার কেন ভেঙ্গে পড়েনি, সেটা নিয়ে কথা হয় না কেন!
ঘরের মাঠে খেলা। অথচ বাংলাদেশ নেই। সেটা নিয়ে তখন প্রশ্ন তোলার অবকাশ কই! আমরা খুশি খেলা দেখতে পেরে। লারা-টেন্ডুলকার-ওয়াহ-ক্রনিয়েকে টেলিভিশনে দেখেই খুশি আমরা তখন। পাশের বাসায় দেখি। কাকার বাসায় যাই।
আগের বছরই ঠিক হয়েছে পরের বছরের বিশ্বকাপে খেলবে বাংলাদেশ। তবে তখন বিশ্বকাপের চেয়েও আইসিসি ট্রফি জেতাটা বেশি কিছু ছিল যেন! এতো তাৎপর্য তখন কে বোঝে। রঙের উচ্ছ্বাসে ভাসতে আমাদের মতো পিচ্চিদের বেশি কিছু বোঝা লাগে না।
**
রোহিতের সেঞ্চুরি তখনও হয়েছে কি হয়নি। তামিম রোহিতকে অবশ্য সেঞ্চুরির পর অভিনন্দন জানাবেন।
তারও আগে বা পরে, সাকিব লাইনে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করেন। হঠাৎ মনে খেলে যায়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড বা শ্রীলঙ্কা যেখানে নেই! আগে থেকে ঠিক করে রাখা ওভালের সেমিফাইনালে আছে বাংলাদেশ।
এইতো কদিন আগেও একটা ক্রিকেটারের রেকর্ড দেখানোর সময় মোবাইল ফোন কোম্পানির অফারের মতো করে একটা তারকা চিহ্ন বা বন্ধনী দেয়া থাকতো। মানে রেকর্ডগুলো বাংলাদেশ বা জিম্বাবুয়ের মতো দলগুলোকে বাদ দিয়ে।
সেই যে জিওফ বয়কট কী বলেছিলেন! সেই বয়কট আজ টুইট করে প্রশংসা করছেন। এতোদিন ধরে কতো কথা বলা হয়েছে, এই দলটার মেধা আছে। সামর্থ্য আছে। শুধু দরকার প্রয়োগ।
সাকিবদের একসাথে খেলার সুফলটা চোখের সামনে। টেলিভিশনে, ওভালে। ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে হারলো, ফেবারিট হয়েও। নাসের হুসেইন পুরষ্কার বিতরণিতে ওইন মরগানকে প্রশ্ন করে বসলেন, ‘এই দলটা এর আগে কখনও নক-আউট খেলেনি, এটাও কি একটা সমস্যা?’ মরগান মেনে নিলেন। এই দলটারও সময় লাগবে।
বাংলাদেশ এর আগে শুধু একটা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। সেমিফাইনাল খেলেনি কখনও। এই দলটার কি আরেকটু সময় লাগবে না!
**
প্যাভিলিয়ন থেকে বের হই আমি।
অর্ণব, প্যাভিলিয়নে গ্রাফিকসের কাজ করে। হাত ভাল বেশ। তার গল্প শুনি। পরিকল্পনা শুনি। নীলক্ষেতের মোড়ে নামি। যে মোড়ে নেমেছিলাম ওই দুপুর গড়ানো সময়ে, সেই মোড়েই। একটা নতুন দিন ছিল আজ।
আড্ডা শেষ করি। হলে ফিরি। কিছু একটা লিখবো বলে কম্পিউটার চালু করি। সকালের মতো বেরসিক কারেন্টটা চলে যায়। আবার আসে।
পিসিতে একটা ছবি ভেসে ওঠে আমার। একটা ওয়ালপেপার। পেছনে দুই লেখা একটা জার্সি পরিহিত একজন। ডানহাতে একটা ধাতব ব্রেসলেট। বামহাতে একটা ক্যাপ। উদ্বাহু তিনি আকাশপানে চেয়ে কী যেন বলছেন।
এক ভারতীয় ভাই নক করেন। ওই ওয়ালপেপারের তিনি ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত টানতে পারবেন কিনা।
আমি জবাব দিই, তিনি বলেই পারার কথা।
তার ছবির মতো করে আমিও একটা আকাশ দেখি। যদি আকাশের গায়ে কান না পাতি…….।
- 0 মন্তব্য