• অন্যান্য

কোস্টারিকান ‘বাজপাখি’ খ্যাত কেইলর নাভাস

পোস্টটি ৩৩৩৫ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

ফুটবল খেলায় বিপক্ষ দলের ডিফেন্স ভেঙ্গে গোল দেওয়ার শেষ দেয়াল হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকে একজন গোলরক্ষক। নৌকা ডুবে গেলে সব দোষ মাঝির, ঠিক তেমনি গোল খেয়ে ম্যাচ হেরে বসা তোহ সব দোষ গোলরক্ষকের। পুরো ম্যাচে নিখুঁত পাস, ড্রিবলিং, ডিফেন্স প্রাচীর তৈরি করেও গোল খেয়ে হেরে যাওয়ার লজ্জা নিয়ে মাঠ ত্যাগ করতে হয় একজন গোলরক্ষকের। খলনায়ক বনে যাওয়ার পরেও কয়েকজন গোলরক্ষক এই পেশাকে দিয়েছেন শিল্প রূপে তাদের প্রতিভা দিয়ে। তেমন একজন কোস্টারিকান গোলরক্ষক কেইলর এন্তোনিও নাভাস গ্যাম্বো সংক্ষেপে ‘কেইলর নাভাস’। তাকে বাজপাখির সাথে তুলনা করা হয়েছে কারন তিনি বিপক্ষ দলের আগুনের গোলা শটগুলো অসাধারণ নৈপুণ্যে ডাইভিং দিয়ে জড়িয়ে ধরার রয়েছে সক্ষমতা। হার না মানা মনোভাব থেকে শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত বাজপাখির মতো ছো মেরে ছিনিয়ে আনা জয় বা সমতায় ফেরানোর ত্রাণকর্তা তিনি। 

Keylor-Navas-Childhood-Story

Photo : Life Blogger

১৫ ডিসেম্বর ১৯৮৬ সালে কোস্টারিকার অখ্যাত শহর পেরেজ জেলেডিনে জন্মগ্রহণ করে। শহরটা ছোট হলেও সেখানে ছিলো একটি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তাই ফুটবল অনুরাগী অনেকেই বসবাস করতো আশেপাশে। মাত্র চার বছর বয়সে নাভাসের পিতা সান্ড্রো গ্যাম্বোয়া এবং মাতা ফ্রেডি নাভাস তাদের ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান ভালো চাকরির আশায়। নাভাস ও তার বোনকে রেখে যাওয়া হয় দাদা-দাদির কাছে। সফলতা অর্জনের নেপথ্যে প্রকৃতি কারো না কারো সাথে মিলিয়ে দেয়, নাভাসের বেলায় সেই ব্যক্তি হচ্ছে তার দাদা হুয়োন। বাবা ছিলেন একজন ব্যর্থ ফুটবল খেলোয়াড়। তাই ছেলেকে কখনো উৎসাহিত করবেন নাহ ফুটবল খেলার পেশাকে বেচে নিতে যেনেও বুড়ো দাদা তাকে একজন আদর্শ গোলকিপার হবার স্বপ্ন দেখানো শুরু করেন। ছোটবেলায় নাভাস পাড়ার ফুটবল মাঠে নিজের প্রতিভার কদর দেখিয়েছেন।  

নাতিকে ফুটবলার হিসেবে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছিল দাদা হুয়োন। প্রথমেই তাকে স্থানীয় ফুটবল ক্লাব কুয়েলা ডি ফুটবল পেদ্রেগজোতে ভর্তি করিয়ে দেন। প্রতিদিন গাড়ি চালিয়ে বাসা থেলে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে গিয়ে দিয়ে আসতেন নাতিকে আবার সন্ধ্যায় নিয়ে আসা-যাওয়ার বিষয়টি নাভাসের বাবা-মার থেকে লুকিয়ে রেখেছিল। ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার অসাধারণ প্রতিভা দেখে তার দাদার সাথে যোগাযোগ শুরু করে। বাসা থেকে ক্লাবের দূরত্ব বেশি হওয়ায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ তাকে মুল ট্রেইনিং গ্রাউন্ডে থাকার জন্য আবেদন করেন। অনুমতি চাওয়ার সূত্র ধরে নাভাসের বাবা-মাকে প্রথমবারের মতো জানাতে আগ্রহ করে। ক্লাবে যোগ দেওয়ার খবর শুনে নাভাসের বাবা অস্বীকৃতি জানান কিন্তু তার মা শশুরের সাথে রাজি হয়ে তাকে যোগ দিতে বলেন এবং আমেরিকা থেকে কিছু ডলার পাঠিয়ে দেন। 

পেদ্রেগজো ক্লাবের প্রধান ট্রেইনিং সেন্টারে যোগ দেয় নাভাস। এখানে আসার কয়েকদিন পরেই শহরের সবচেয়ে বড় ফুটবল ক্লাব মিউনিসিপ্যাল পেরেজ জেলেডনে বাছাইপর্বে অংশগ্রহণ করে এবং সেখানে কিশোর গোলকিপারদের মধ্যে সবচেয়ে সেরা পারফরম্যান্স করে নাভাস। কিন্তু শারীরিক   উচ্চতায় কম হওয়ায় সেখানে টিকতে পারেনি। ভাগ্যের কি পরিহাস! বর্তমানে সেই ক্লাবের নাম নাভাসের নামে। এমন সুযোগ হারিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে নাভাস। ঠিক তখনই সান্ত্বনামূলক বার্তা হিসেবে দরজায় কড়া নাড়তে আসে কোস্টারিকার রাজধানী সান হোসের বিখ্যাত ফুটবল ক্লাব দেপর্তিবো সাপ্রিসার স্কাউটরা। তাদের একাডেমিতে যোগদান করার প্রস্তাব রাখে। মূলত সাপ্রিসার হয়েই নাভাসের একাডেমিক ও পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু।      

20180806_114625

সাপ্রিসার একাডেমিক ক্লাবে নাভাস (Photo : All Football)    

সাপ্রিসার একাডেমিতে ভালো পারফরম্যান্স করে জায়গা করে নেয় মূলদলে। ২০০৫ সালে ১৯ বছর বয়সে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে চুক্তি করে ক্লাবের সাথে। ঐ বছরেই পেশাদার ফুটবলার হিসেবে অভিষেক ঘটে দেপোর্তিবো কার্মেলিতার বিপক্ষে। ২০০৫ সালের কনকা কাপে সাপ্রিসার গোলপোস্টের ভরসা ছিল নাভাসের উপর। কারন দলের প্রধান গোলরক্ষক তখন ইঞ্জুরিতে পড়েন। কনকা কাপ জিতে ক্লাবের উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় পরিচিতি পেয়ে যায়। কানকা কাপ সহ আরো ৬টি শিরোপার অংশীদার হন সাপ্রিসার হয়ে।  প্রথম পেশাদার ফুটবলের ৫ বছরের ক্যারিয়ারে কোস্টারিকার অন্যতম সেরা ক্লাব সাপ্রিসার হয়ে খেলেছেন সর্বমোট ৬০টি ম্যাচ।              

নতুন গন্তব্য স্পেনে পাড়ি জমায় নাভাস। ২০১০ সালের গ্রীষ্মের মৌসুমে দলবদলের সময় স্প্যানিশ লিগের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব আলবেসিট বালোম্পি তাকে কিনে নেয়। সেবছর দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাবটি লা লিগায় কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয়। 

নাভাসের সেরা হয়ে উঠার সিড়ি বেয়ে উঠার সঠিক সময় সম্ভবত স্পেনে পেয়ে যায়। পরের মৌসুমে উচ্চ বেতনে আলবেসিট বালোম্পি থেকে লোনের চুক্তিতে দলে ভেড়াতে প্রস্তুত হয় লা লিগার ক্লাব লেভান্তে। ২০১১-১২ মৌসুমে লা লিগার শেষ রাউন্ডের ম্যাচে এথলেটিক বিলবাওর বিপক্ষে অভিষেক ঘটে লেভান্তের হয়ে। সে ম্যাচে বিলবাও কে ৩-০ গোল ব্যবধানে হারিয়ে ক্লাব ইতিহাসে ইউয়েফা ইউরোপা লিগে কোয়ালিফাই করে লেভান্তে। নাভাসের অতুলনীয় পারফরম্যান্সে খুশি হয়ে তিন বছরের নতুন চুক্তিতে সাক্ষর করে নেয় লেভান্তে। তিন বছরের ক্যারিয়ারে মোট ৪৬টি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেন এবং ২০১৪ সালে লা লিগার মার্চ মাসের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে।       

২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপ নাভাসের জন্য সারাজীবন অবিস্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে। কোস্টারিকাকে বিশ্বকাপে শেষ ষোলতে উঠানোর পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান এই বাজপাখির। নিজ দেশের মানুষের কাছে নয়ক হয়ে যান এই গোলরক্ষক। বিশ্বকাপে অনবদ্য পারফরম্যান্স করে নজর কাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, আর্সেনালের মতো বাঘা বাঘা ক্লাব গুলোর। শেষমেশ লেভান্তে থেকে রিলিজক্লজে ১০ মিলিয়ন ইউরো পরিশোধে সাইন করিয়ে নেয় মাদ্রিদ শিবিরে। 

Why-Keylor-Navas-is-Loved-by-Cristiano-James-Marcelo

মাদ্রিদ সতীর্থদের সাথে নাভাস (Photo : Life blogger)

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অভিষেক ঘটে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। নাভাসকে কিনা হয়েছিল অতিরিক্ত গোলরক্ষক হিসেবে, দলের প্রধান গোলরক্ষকের দায়িত্ব তখন পালন করছেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি ইকার ক্যাসিয়াস। মাদ্রিদের হয়ে শিরোপার খরা কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্যাসিয়াস। কিছুদিন পরেই মাদ্রিদ ছেড়ে পর্তুগীজ ক্লাব পোর্তোর হয়ে সাইন করে নেন ইকার ক্যাসিয়াস। অন্যদিকেসুযোগ হয়ে যায় কেইলর নাভাসের। কিন্তু চোখ তখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়ার উপর। ট্রান্সফার মার্কেটের শেষ দিনে নাভাস ইংলিশ ক্লাবের উদ্দেশ্য রওনা দেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে বসে আছে। কিছুক্ষণ পরেই তার এজেন্ট এসে জানায় দলবদলের চুক্তি জটিলতায় তিনি মাদ্রিদেই থাকছেন। মাদ্রিদ প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্টিনো পেরেজ নিজেই অভিমানী নাভাসের হাতে তুলে দেন ইকার ক্যাসিয়াসের এক নম্বর জার্সিটা যা আজও শক্তহাতে দায়িত্ব পালন করছেন।

লস ব্লানকোসদের গোলবারের দায়িত্ব সামলিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ২০১৫-১৬ মৌসুমে জিতে নেয় চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। একজন নাভাস বানিয়ে নেন রেকর্ডের খাতা। চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে নিজের দাদাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে কান্না করেছিলেন নাভাস। মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন এই কোস্টারিকান বাজপাখি। টানা ৮টি ক্লিনশীট ও পুরো মৌসুমে ১১ ম্যাচে মাত্র তিনটি গোল হজম করে রিয়াল মাদ্রিদ। ধারাবাহিক পরের দুটি মৌসুমে (২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮) চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতে শতাব্দীর সেরা ক্লাব নির্বাচিত হয় রিয়াল মাদ্রিদ। টানা তিনটি মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতা গোলরক্ষকের খেতাব অর্জন করে নাভাস। হ্যাট্রিক শিরোপা জয়ী মাদ্রিদ গোলপোস্টের প্রাচীর সবসময় থাকেন আলোচনার আড়ালে। মাদ্রিদের হয়ে ৩টি লা লিগা, ২টি ইউরোপিয়ান কাপসহ নাভাস জিতেছেন মোট ১০টি শিরোপা।

কোস্টারিকার হয়ে সর্বপ্রথম দেশের জার্সি পরিধান করে ফিনল্যান্ডের অ১৭ বিশ্বকাপে। কোস্টারিকার জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটে ২০০৬ সালে অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে। জাতীয় দলের হয়ে দুটি কনকা কাপে অংশগ্রহণ করেন। 

নাভাস সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলো ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে। বিশ্বকাপ এমন এক মঞ্চ, যেখানে অখ্যাত খ্যাতি পায়, খ্যাতিনামারা পরিনত হয় খলনায়কে। নাভাসের জন্য বিশ্বকাপ হয়ে আসে এক সুবর্ণ সুযোগ। সামর্থের সবটুকু প্রমাণ দিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তা লাগিয়ে দিলেন বিশ্বকে সেই বিশ্বকাপে। কোস্টারিকাকে কোয়ার্টার ফাইনালে তোলার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান নাভাসের দুর্দান্ত সেইভ গুলো। মনোনীত হয়েছিলেন গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কারের জন্য। জার্মান বিশ্বকাপ জিতায় পুরস্কার জিতে নেয় ম্যানুয়াল নূয়ারের ঝুলিতে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলের সাথে এক গ্রুপে পড়ে লড়াই করে টিকতে পারেনি কোস্টারিকা। দুটি হার ও একটি ড্র নিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যায় নাভাসের দল। বিশ্বকাপে গোলপোস্টের নিচে কতটুকু কঠোর হতে পারেন তা ব্রাজিলের সমর্থকেরা স্বীকার করতে দ্বিধা করবেনা। 

1-1-2-770x392

মুভির পোস্টার (Photo : Costa Rica Magazine)

২০১৭ সালে কোস্টারিকায় নাভাসকে নিয়ে একটু মুভি বের হয়। মুভিটির নাম হলো ‘কেইলর নাভাস : ম্যান অব ফেইথ’। নাভাসের চরিত্র নিয়ে মুভিটি বানানো হলেও অভিনয় করেনি নাভাস। মুভিটিতে নাভাসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কলম্বিয়ান অভিনেতা ম্যাট মার্কুয়েজ গার্সিয়া। মুভিটিতে নাভাসকে ক্ষানিকটা সময়ের জন্য দেখা যায় এবং তার সাথে কিছু সময়ের জন্য আরো দেখা যায় মাদ্রিদ ক্লাব সতীর্থ কার্ভাহাল, রামোস, মার্সেলো এমনকি কোচ জিদান ও প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্টিনো পেরেজকে।    

কৃতিত্বপূর্ণ বর্ণাঢ্য খেলোয়াড়ী জিবনের প্রতি সম্মান জানিয়ে নাভাসের জন্ম শহর পেরেজ জেলেডনের স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘মিউনিসিপ্যাল কেইলর নাভাস গ্যাম্বো’। দীর্ঘদিন খেলার সাথে সম্পৃক্ত থাকা নাভাস কুড়িয়েছেন অসংখ্য ভক্তের ভালোবাসা। কোস্টারিকার সাপ্রিসার থেকে আজ শতাব্দীর সেরা ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে। কোস্টারিকায় তিনি একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। রিয়াল মাদ্রিদে হ্যাট্রিক শিরোপা জয়ী বাজপাখি খ্যাত নাভাস লস ব্লানকোসদের চোখের মণি। চোখ ধাধানো পারফরম্যান্স - এটাই আসলে নাভাসের সারমর্ম।