• ক্রিকেট

বাংলাদেশ বনাম ভারত : বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান

পোস্টটি ৯৯৩৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

বার্মিংহামের শীতল বাতাসে উড়ছে বারুদ গন্ধ। এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ড অপেক্ষায় আছে এশিয়ার নব্য চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের ম্যাচের অপেক্ষায়। দুই দেশের মানুষের কাছে একটু একটু করে ম্যাচ ঘনিয়ে আসার উত্তেজনা বিরাজ করছে চরম। ভারত বনাম বাংলাদেশ, ‘প্রেস্টিজ ফাইট’- দেখার জন্য উদগ্রীব গোটা বিশ্ব। উত্তাপ যেহেতু এতো চরম, তবে সত্যিই ম্যাচটা হবে গরম। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ পরিসংখ্যান ছোট। বাংলাদেশ দলের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব। এই বিশ্বকাপ আসরসহ মোট ছয়টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। তারমানে অংশগ্রহণ করার পর থেকে কোনো বিশ্বকাপ আর বাদ যায়নি। বিগত পাঁচ বিশ্বকাপে ভারতের সাথে মুখোমুখি হয়েছে ৩টি বিশ্বকাপ। নিরানব্বই'র বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করলেও দেখা দেয়নি এবং পরের বিশ্বকাপেও (২০০৩) হয়নি পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে মোকাবেলা। 

প্রথম মুখোমুখি হয় ২০০৭ বিশ্বকাপে একই গ্রুপে পড়ে দুই দল। প্রথম দেখায় সে বিশ্বকাপে ভারত দলকে বিদায় করে বিশ্ব আসর থেকে বাংলাদেশ। শেষ দেখা ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। সে ম্যাচে আম্পায়ারিং বিতর্কিত ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশ নেয় বিদায়। ভারতের সাথে নব্য চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশের বিশ্বকাপে মোকাবেলার পরিসংখ্যান দেখা যাক।      

১৭ই মার্চ, ২০০৭; পোর্ট অব স্পেন 

১৯৯৯ ও ২০০৩ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দল হিসেবে পড়েই কখনো ভারত। প্রথম বিশ্বকাপে প্রথম জয় আসে গ্রুপের তিন নম্বর ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ছিল একদমই বিবর্ণমুখ। ২০০৩ বিশ্বকাপে একটি ম্যাচও জয় পায়নি। অন্যদিকে ভারত তখন ১৯৮৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন। নানা সমীকরণ, অভিজ্ঞতা এবং শক্তিমত্তার বিচারে ভারতই এগিয়ে। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলো ভারতের অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড়। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণে গুটিয়ে যেতে থাকে ভারত। সেদিন বোলিং দুর্দান্ত হয়ে উঠেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, মোহাম্মদ রফিক ও আব্দুর রাজ্জাক। বোলিং তোপে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ ছন্নছাড়া হয়ে ১৯১ রান সংগ্রহ করে। অর্ধশতাধিক পার করা ব্যাটসম্যান একজনই ছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি(৬৬ রান)। যুবরাজ সিং করেন ৫৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস। অনেকেই দুই অংকের ঘরেও পৌছাতে পারেনি। 

3-1

মাশরাফির বোলিং আক্রমণে নুয়ে যায় ভারত   

আব্দুর রাজ্জাক ও মোহাম্মদ রফিক নেন ৩টি করে উইকেট আর মাশরাফি বিন মর্তুজা তুলে নেন ৪ উইকেট। ১৬২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত অর্ধশতক ইনিংসে ৫ উইকেট হাতে রেখেই ৪৮ ওভার ৩ বলেই ম্যাচ জিতে যায় বাংলাদেশ। সেই সাথে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ এবং গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয় ভারত।             

১৯ জুন, ২০১১; ঢাকা

বিশ্বকাপের অষ্টম আসর বসে এশিয়া মহাদেশে। বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে ২০১১ বিশ্বকাপ আয়োজন করে। সেটি বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপ মঞ্চ। আয়োজক দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের উদ্ভোধনী ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে। বিশ্বকাপে এটি দুই দলের দ্বিতীয় মুখোমুখি লড়াই। সে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন্সি করেন সাকিব আল হাসান। টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ক্যাপ্টেন। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় ব্যাটসম্যান বীরেন্দর শেবাগের ১৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস এবং বিরাট কোহলির অপরাজিত ১০০ রানের উপর ভর করে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারতের বিশাল সংগ্রহ ৩৭০ রান। 

Virender+Sehwag+India+v+Bangladesh+Group+B+zY0Yrp6VvVSl

শেভাগের ১৭৫ ও বিরাট কোহলির ১০০ রানে বড় সংগ্রহ ভারতের 

৩৭১ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। কিন্তু ভারতের বোলিং তোপে নিয়মিত উইকেট বিরতিতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। টাইগার ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলে তামিম ইকবাল আর ৫৫ রান সংগ্রহ করেন কাপ্তান সাকিব আল হাসান। ইমরুল কায়েসের ৩৪ এবং জুনায়েদ সিদ্দিকীর ৩৭ রানের ইনিংস খেলেও ভারতের রান তাড়া করতে পারেনি। ২৮৩ রান সংগ্রহ করেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ভারতের সফল বোলার হিসেবে ৪ উইকেট শিকার করেন মুনাফ প্যাটেল আর ৮৭ রানের ব্যবধানে হারের স্বাদ গ্রহণ করে বাংলাদেশ।                                          

১৯ মার্চ, ২০১৫; মেলবোর্ন 

২০১৫ বিশ্বকাপের আগে ভারতের সাথে বাংলাদেশের দেখা হয় বিগত দুই বিশ্বকাপে। এক জয় ও এক হার নিয়ে সমান পরিসংখ্যানে ছিলো দুই দেশ। এই বিশ্বকাপে দেখা হয় বাঁচা-মরার লড়াই কোয়ার্টার ফাইনালে। ম্যাচটি ছিলো আম্পায়ারিং বিতর্কিত একটি ম্যাচ। টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। ম্যাচে ভারতীয় অপেনার রোহিত শর্মা রুবেল হোসেনের ফুলটস বলে স্কোয়ার লেগে ক্যাচ উঠিয়ে দেন, কিন্তু আম্পায়ার সে বলটি নো-বল হিসেবে গণ্য করে বিতর্কের সৃষ্টি করেন। ফলে রোহিত শর্মা মাঠে থেকে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেন। পরবর্তীতে রিপ্লেতে দেখা যায় বলটির উচ্চতা কোমরের নিচেই ছিল, যেটি নো-বল হিসেবে গৃহীত হয়না।

19photos4 

শিখর ধাওয়ানকে স্টাম্পিং করেছেন মুশফিকুর রাহিম   

সে যাত্রায় বেঁচে যাওয়া রোহিত শর্মার ইনিংসের উপর ভর করে ভারতের সংগ্রহ ৩০২ রান। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ততোটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ৪৫ ওভারে ১৯৩ রানেই গুটিয়ে যায় ব্যাটিং ইউনিট। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন নাসির হোসেইন(৩৫ রান)। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে ২ - ১ জয়ে এগিয়ে আছে ভারত।

[All photos are collected from Getty Image & other news sources]