• ফুটবল

বিশ্বকাপ ১৯৭৮ : ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কিত অধ্যায়

পোস্টটি ৮৩৭৮ বার পঠিত হয়েছে
'আউটফিল্ড’ একটি কমিউনিটি ব্লগ। এখানে প্রকাশিত সব লেখা-মন্তব্য-ছবি-ভিডিও প্যাভিলিয়ন পাঠকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ উদ্যোগে করে থাকেন; তাই এসবের সম্পূর্ণ স্বত্ব এবং দায়দায়িত্ব লেখক ও মন্তব্য প্রকাশকারীর নিজের। কোনো ব্যবহারকারীর মতামত বা ছবি-ভিডিওর কপিরাইট লঙ্ঘনের জন্য প্যাভিলিয়ন কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। ব্লগের নীতিমালা ভঙ্গ হলেই কেবল সেই অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।

ফুটবল ও বিতর্ক একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। ফুটবলে বিতর্ক থাকবেই, সেটা একশো বছর আগেও ছিলো, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। ফুটবল বিশ্বের বিতর্ক গুলো সবসময়ই হট টপিক হিসেবে উঠে আসে। আর সে বিতর্ক যদি হয় বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে, তাহলে তো কথাই নেই।

বিশ্বকাপেও অহরহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অসংখ্যবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেসবের মধ্যে কিছু কিছু বিতর্ক তো আইকনিক হিসেবে জায়গা পেয়ে গেছে ফুটবল ইতিহাসের পাতায়, যেমন ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দিয়েগো ম্যারাডোনার ঐতিহাসিক হ্যান্ড অব গড। আবার ২০০২ সালের বিশ্বকাপে কো-হোস্ট দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন ম্যাচ ঘিরেও রয়েছে অসংখ্য বিতর্ক, যা পুরো আয়োজন টা কেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত আসর হিসেবে তকমা দিয়েছে।

তবে ২০০২ সালের চেয়েও ফুটবল ও ফুটবলের বাইরের অসংখ্য বিষয় নিয়ে অনেক বেশি বিতর্কিত ছিলো ১৯৭৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপ। আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সে আসরটিকে বলা হয় ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত আসর।

কি হয়েছিলো সেবার? কেন সেবারের বিশ্বকাপ এতটা বিতর্কিত? চলুন আজ তা নিয়েই আলোচনা করা যাক।

সেবারের বিশ্বকাপে মূলত জড়িয়ে ছিলো নোংরা রাজনীতি। বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার দুবছর আগে ১৯৭৬ সালে আর্জেন্টিনায় ঘটে সামরিক অভ্যুত্থান। আর এর ফলে প্রেসিডেন্ট ইসাবেল পেরনকে সরিয়ে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেন জান্তা সরকার জেনারেল ভিদেলা। আর তার কুখ্যাত সামরিক শাসনে দেশজুড়ে চলতে থাকে নানারকম অরাজকতা। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, হত্যা, গুম, দূর্নীতিতে ছেয়ে যায় পুরো দেশ। সরকার বিরোধীদের ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন।

image_search_1669638701789
এ অবস্থায় নেদারল্যান্ডসের পাশাপাশি বেশ কটি দেশ বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের জন্য ফিফার কাছে আবেদন জানায়। কিন্তু বিশ্বকাপের এত সন্নিকটে এসে ভেন্যু পরিবর্তন করা আসলে সহজ ছিলোনা। তাই টালমাটাল আর্জেন্টিনাতেই বসে বিশ্বকাপের আসর। এর প্রতিবাদে বিশ্বকাপ বর্জন করেন ডাচ কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফ, জার্মান তারকা পল ব্রেইটনার সহ আরও অনেকে।

বিশ্বকাপ শুরুর কিছুদিন আগে খুন হন বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির প্রধান। বিশ্বকাপে অতিরিক্ত ব্যয়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে পারেন, এই ভয়ে তাকে হত্যা করেন জান্তা সরকার। সেসময় যখন অভাবে অনাহারে মৃতপ্রায় জীবনযাপন করছে আর্জেন্টিনাবাসী, সেসময় তাদের অর্থ লুন্ঠন করে বিশ্বকাপ আয়োজনে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে শুরু করে সরকার। আর সাধারণ মানুষকে মন ভোলানোর জন্য প্রলুব্ধ করা হয় ফুটবলের দিকে। জনসাধারণের মন জয় করার পন্থা হিসেবে সরকার বেছে নেয় ফুটবল।

অবশেষে শুরু হয় বিশ্বকাপ। দশটি ইউরোপীয় দেশসহ মোট ষোলটি দেশ অংশ নেয় সেবারের আসরে। অভিষেক ঘটে ইরান ও তিউনিসিয়ার। তবে চেকোস্লোভাকিয়া, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ইংল্যান্ডের মতো বেশ কিছু বড় বড় দল সেবার বিশ্বকাপে জায়গা পায়নি। একমাত্র বৃটিশ প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেয় স্কটল্যান্ড।

গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে বড় নাটক ছিলো স্কটিশদের গ্রুপেই। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে সেবার যাত্রা শুরু করে কেনি ডালগ্লিশ, গ্রায়েম সাউনেস, জো জর্দানদের স্কটল্যান্ড। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই তেওফিলো কুবিলাসের জোড়া গোলে পেরুর বিপক্ষে ৩-১ গোলে পরাজিত হয় স্কটিশরা। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে নবাগত ইরানের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে পড়ে যায় একদম টালমাটাল অবস্থায়। শেষ ম্যাচে ক্রুইফ বিহীন নেদারল্যান্ডসের সাথে জয়লাভ করে ৩-২ গোলে, কিন্তু কোয়ালিফাই করার জন্য তা যথেষ্ট ছিলোনা। গ্রুপ পর্বেই ছিটকে পড়ে সেবারের একমাত্র বৃটিশ দল।

image_search_1669637517985

ওদিকে নিজেদের গ্রুপে বেশ কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হয় স্বাগতিক আর্জেন্টিনা।
 ইতালির সাথে হেরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তারা প্রথম রাউন্ড পার করে। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি হয় সব কঠিন প্রতিপক্ষের। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হয়ে আসে শক্তিশালী ব্রাজিল, পেরু ও পোল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা উভয়ই জয় পায় নিজ নিজ ম্যাচে। এরপর ব্রাজিল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ ড্র তেই শেষ হয়। শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ী হয় ব্রাজিল। এতে বেশ কঠিন সমীকরণের মুখোমুখি হয় আলবিসেলেস্তেরা। ফাইনালে যাওয়ার জন্য দরকার কমপক্ষে চার গোলের ব্যবধানে জয়। প্রতিপক্ষ হিসেবে পেরু সহজ ছিলোনা। আগের ৫ ম্যাচে পেরু গোল হজম করেছিলো মাত্র ৫ টি। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার পুরো টুর্নামেন্টে গোল ছিলো ৬ টি। তাই সবাই ধরেই নিয়েছিলো এবার স্বাগতিকদের বিদায়ের পালা।

কিন্তু এ ম্যাচটিই হয়ে দাঁড়ায় বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু। সবাইকে অবাক করে দিয়ে পেরুর বিপক্ষে ৬-০ গোলে জয়লাভ করে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার এ অবিশ্বাস্য জয়ে এ ম্যাচ টি ঘিরে একের পর এক গুজব ছড়াতে শুরু করে। এর আগে গ্রুপ পর্বে ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচেই এমন কথা ছড়িয়েছিলো যে একজন ফ্রেঞ্চ ফুটবলার উর্দিপরা এক লোক কে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের কে বিশেষ নীল রঙের ট্যাবলেট সেবন করাতে দেখেছেন। আর এখন পেরুর সাথে এ অবিশ্বাস্য জয়। সবার মধ্যে এ বিশ্বাস জোরদার হতে থাকে যে এই শক্তিবর্ধক ড্রাগ সেবন করেই মাঠে নামছেন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা।

শুধু তাই নয়, এর সাথে আরও নানারকম চমকপ্রদ কথা ছড়াতে থাকে চারিদিকে। প্রতিবেশী দেশ পেরুর গমের প্রধান যোগানদাতা ছিলো আর্জেন্টিনা। সংবাদমাধ্যমে খবর হতে থাকে যে গম নিয়ে পেরু সরকার কে চাপ প্রদান করে পেরুকে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে বাজে খেলতে বাধ্য করে আর্জেন্টিনার জান্তা সরকার। এ ছাড়াও ছড়িয়ে পড়ে আরও একটি গুজব। তখন আর্জেন্টিনার কারাগারে বন্দী ছিলো তেরো জন পেরুর নাগরিক। তাদের মুক্তির বিনিময়ে নাকি এ জয়ের জন্য পেরু সরকারের সাথে গোপনে চুক্তি করে আর্জেন্টিনা সরকার।

গুজবগুলো বাস্তবিকভাবেই অমূলক ছিলোনা। সেবারের বিশ্বকাপে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিলো আর্জেন্টিনা সবসময়ই ম্যাচ খেলতো রাতে, দিনের একদম শেষ ম্যাচ। এর ফলে তারা আগে থেকেই আগের ম্যাচ গুলোর ফলাফল জেনে যেত। ফলে তারা আগে থেকেই জানতে পারতো এ ম্যাচে তাদের ঠিক কি ফলাফল প্রয়োজন। সে অনুযায়ী তারা খেলতো ও প্রয়োজনে ম্যাচ পাতাতো। এবং বিভিন্ন মাধ্যমের খবর অনুসারে পেরুর বিপক্ষে তাদের ম্যাচটিও ছিলো পাতানো। শুধু সংবাদমাধ্যমই না, পেরুর বেশ কিছু সিনেটরও দাবি করেন সে ম্যাচটি পাতানো ছিলো।

image_search_1669637598414
ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ছিলো হেভিওয়েট নেদারল্যান্ডস। তবে নেদারল্যান্ডসে ছিলোনা তাদের সবচেয়ে বড় তারকা ইয়োহান ক্রুইফ, যিনি বিশ্বকাপ আগেই বর্জন করেছিলেন। তবে এর পেছনে আছে আরও কিছু কথা, সেসবে পরে আসছি।

ফাইনালে একের পর এক নতুন বিতর্ক তৈরি হতে থাকে। শুরুতেই ডাচ দল কে সোজা পথে স্টেডিয়ামে না এনে অনেক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তারপর আনা হয় স্টেডিয়ামে। এরপর আর্জেন্টিনা দল ড্রেসিংরুমে থাকা অবস্থাতেই তাদের স্বাগতিক উন্মত্ত দর্শকদের সামনে দুয়ো খেতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এভাবে খেলা শুরুর আগেই মানসিকভাবে একদম বিপর্যস্ত করে ফেলা হয় ডাচ দলকে।

খেলার মাঠে আর নিজেদের মনোবল ঠিক রেখে লড়াই করতে পারেনি তারা। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যায়। শুরুতে মারিও কেম্পেসের গোলে পিছিয়ে পড়লেও ৮২ মিনিটের মাথায় ডিক নানিঙ্গার গোলে সমতায় ফেরে নেদারল্যান্ডস। নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে শেষ হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ১০৫ মিনিটের মাথায় জোড়া গোল পূর্ণ করেন কেম্পেস। আর শেষ বাঁশি বাজার পাঁচ মিনিট পূর্বে আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি করেন দানিয়েল বেরতোনি। অবশেষে ৩-১ গোলে পরাজিত হয়ে মাঠ ছাড়ে নেদারল্যান্ডস। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে স্বাগতিক আর্জেন্টিনা।

image_search_1669637886973
এভাবেই শেষ হয় বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে কুখ্যাত আসর। এটি নিয়ে এরপর বহু সমালোচনা হয়েছে, কিন্তু ফিফা বরাবরের মতোই চুপ করে থেকেছে, কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বহু আর্জেন্টাইন ফুটবলার ও ফুটবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এইসব নোংরা কীর্তিকলাপের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু অত্যাচারী নির্মম জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পাননি। এরপরও কেউ কেউ সাহস করে কিছুটা বলার চেষ্টা করেছেন সে সময়ের কথা।

আর্জেন্টিনার সেবারের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম ফরওয়ার্ড লিওপোলডো লুকু বলেন, "আমার মনে এখনো ঘুরপাক খায় যে আমার হয়তো এ বিশ্বকাপ টি খেলা ঠিক হয়নি। ১৯৮৬ সালের মতো হলে আজীবন এ স্মৃতি বুকে লালন করতাম।" পেরুর বিপক্ষে ম্যাচ ফিক্সিং এর ব্যাপারে লুকু বলেন, "সত্যি বলতে আমি জানিনা (ম্যাচটি ফিক্সড করা হয়েছিলো কিনা), কিন্তু ভিদেলা আরও অসংখ্য নোংরা কাজ করেছিলো, যা ঘুষ প্রদানের চেয়েও অনেক জঘন্য, সুতরাং... কিন্তু পেরুর বিপক্ষে আমরা অসাধারণ এক ম্যাচ খেলেছিলাম।" এছাড়া সেবারের বিশ্বকাপ নিয়ে সে দলের আরেক সদস্য রিকি ভেলা বলেন, "কোনো সন্দেহ নেই যে আমাদের রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করা হয়েছিলো।"

শুধু যে বাইরের দল গুলো কে বিপর্যস্ত করে নোংরা পন্থায় আর্জেন্টিনা কে জেতানো হয়েছে তা কিন্তু নয়, আর্জেন্টাইন কোচ ফুটবলার সবাইকেই তখন যেতে হয়েছে মারাত্মক মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে। সেসময় তারা পার করেছে মারাত্মক ভয় ও উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে। প্রতিনিয়ত তারা জান্তা সরকারের অদৃশ্য বন্দুকের নলের সামনে চোখ বুজে সব অন্যায় সহ্য করে নিতে বাধ্য হয়েছে।

image_search_1669638099619
এবার আসা যাক ইয়োহান ক্রুইফের ব্যাপারে। ক্রুইফ কেন খেলেননি সেবারের বিশ্বকাপ? বলা হয়ে থাকে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরুপ সেবারের বিশ্বকাপে অংশ নেননি ক্রুইফ। কিন্তু এর বাইরে শোনা যায় আরও কিছু গুজব। সেসময় নেদারল্যান্ডস দলটি ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দলগুলোর অন্যতম। আর বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় দাবিদার হতে পারতো তারাই। দলের সেরা তারকা ক্রুইফকে ছাড়াই সেবার ফাইনাল খেলেছিলো তারা, এতে সহজেই অনুমান করা যায় কতটা সুগঠিত ছিলো সেবারের ডাচ দল।

আর্জেন্টিনা সরকার বুঝতে পেরেছিলো এ ডাচরাই হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ জয়ে তাদের প্রধান বাধা। কিন্তু ইয়োহান ক্রুইফ না থাকলে ডাচদের হারানো তাদের জন্য বেশ সহজ হয়ে যাবে৷ তাই খবর শোনা যায়, আর্জেন্টাইন জান্তা সরকারের নির্দেশে কিছু দুর্বৃত্ত  নেদারল্যান্ডসে ক্রুইফের বাড়িতে হামলা করে ও ক্রুইফ কে বিশ্বকাপ না খেলার জন্য হুমকি দেয়। আর এতেই সেবারের বিশ্বকাপ বর্জন করতে বাধ্য হন ইয়োহান ক্রুইফ।

নিজেদের উদ্দেশ্যে সেবার পুরোপুরি সফল হয় আর্জেন্টিনার জান্তা সরকার। চরম অন্যায় অত্যাচার নোংরামির পরও বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে পুরো জাতি কে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন জেনারেল ভিদেলা। শুধুমাত্র বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে নিজের পক্ষে জনমত গঠন করেন।

তবে যাই হোক না কেন, এ বিশ্বকাপ ফুটবল বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করে আরেকটা পাওয়ার হাউজ, যার নাম আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনার নেতৃত্বে আট বছর পর তারা আবারও জয় করে বিশ্বকাপ৷ তারপর থেকে বিশ্বফুটবলে একের পর এক মহাতারকা উপহার দিয়ে গেছে আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনার পর বাতিস্তুতা, জানেত্তি, রিকেলমে...আর সর্বশেষ লিওনেল মেসি, এমন অসংখ্য কিংবদন্তী এসেছেন আর্জেন্টিনা থেকে। আর্জেন্টিনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবল দল হিসেবে। আর এসবের সূচনা হয়েছিলো সেই ১৯৭৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমেই।