ভদ্র ডিফেন্ডারের অনন্য নিদর্শন থিয়াগো সিলভা
পোস্টটি ১১০১ বার পঠিত হয়েছেডিফেন্ডার আবার ভদ্র হয় কীভাবে? তর্কের খাতিরে শুরুতেই এমন প্রশ্ন রাখতেই পারেন অনেকে। তবে ডিফেন্ডারের নাম দেখার পর তার ব্যাপারে একটাও বাজে মন্তব্য করতে পারবেন না কোনো ফুটবল সমর্থকই। আশ্চর্য হচ্ছেন? আপনি আরও বেশি আশ্চর্য হবেন জেনে এই ফুটবলার তার ক্যারিয়ারের ১১১ ম্যাচ খেলে একটা লাল কার্ডও দেখেননি। অবাক হলেও এটাই সত্য। তার এই ১৪ বছরেরও বেশি ক্যারিয়ারে হলুদ কার্ড দেখেছেন মাত্র ১২ বার।
একজন থিয়াগো সিলভা কতটা ভদ্র এবং বিনয়ী সেটা তার পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝা যাবে। ইতোমধ্যে কাতার বিশ্বকাপসহ তিনটি বিশ্বকাপ খেলা খেলোয়াড় থিয়াগো সিলভার আর্ন্তজাতিক খেলার শুরুটা ২০০৮ সাল থেকে। ২০০৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে তিনি অংশগ্রহণ করেন। কোচ দুঙ্গার অন্যতম পছন্দের খেলোয়াড় হিসেবে ২৩ বছরের অধিক আরেক খেলোয়াড় ছিলেন রোনালদিনহো। সেখানে তিনি তিন খেলায় অংশ নেন। এরপূর্বে তিনি মাত্র দুইটি প্রীতি ম্যাচে খেলেছেন যথাক্রমে সিঙ্গাপুর এবং ভিয়েতনামের বিপক্ষে।
এখন পর্যন্ত তিন বিশ্বকাপ খেলা সিলভা সুযোগ পেয়েছেন চার বিশ্বকাপে। ২০১০ সালের ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের সদস্য হিসেবে অংশ নেন। এর প্রধান কারণ ছিল মিলানের পক্ষ হয়ে চমৎকার খেলা প্রদর্শন। কিন্তু বিশ্বকাপের একটি খেলায়ও তিনি অংশ নিতে পারেননি। যদিও এরপর থেকে সিলভাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ বেশি ম্যাচের অধিনায়কত্ব করেছেন কাফু এবং দুঙ্গা। ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে নামলে সবাইকে টপকে যাবে সিলভা। বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে সবচে বেশি ম্যাচ নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডটি সিলভার হয়ে যাবে। এমন অনেক রেকর্ড আছে সিলভার। কিন্তু সিলভা রেকর্ডের জন্য খেলে না। রেকর্ড সিলভার পেছনে দৌড়ায়।
তিনি ডিফেন্ডার হয়েও করেছেন ৭ টি গোল। আর জিতেছেন ৮১ টি ম্যাচ আর ড্র করেছেন ১৭ টি ম্যাচ। শুনে বিস্ময়কর মনে হলেও এটাই সত্য। আর এই অর্জন বিশ্বের একমাত্র ডিফেন্ডার হিসেবে থিয়াগো সিলভারই আছে। যাকে ব্রাজিলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার ধরা হয়। লীগে কিংবা জাতীয় দলে সিলভা থাকলে গোল কিপার অনেকটা নির্ভার থাকেন।
মাঠের খেলা, ক্ষিপ্রতা, দলের প্রতি ডেডিকেশন দেখলে বুঝা মুশকিল সিলভার বয়স আসলে কতটুকু। অথচ এই বিশ্বকাপে ৩৮ বছর বয়সে খেলছেন থিযাগো সিলভা। দেখে কোনো ভাবেই সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরং তার খেলার ধরণ এবং ট্র্যাকেল দেখলে মনে হয় এখনও তরুণ যুবক। তিনি এই বিশ্বকাপের পারফর্ম করে সেটা প্রমাণ করে যাচ্ছেন।
অনেকেই বলছেন, রোনালদোর শেষ বিশ্বকাপ, একটা বিশ্বকাপ ট্রফি তিনি ডিজার্ব করেন। আবার অনেকই বলেন, লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ এটা। তার হাতেই বিশ্বকাপ ট্রফি থাকা উচিত। কিন্তু আলোচনায় কম থাকলেও প্রচার বিমুখ এই থিয়াগো এমিলিয়ানো ডি সিলভাও ডিজার্ব করেন একটা বিশ্বকাপ ট্রফি।
লেখক: আজহার মাহমুদ
প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক
- 0 মন্তব্য