ডিফেন্ডিং ট্যাকটিকস (দ্বিতীয় পর্ব)
পোস্টটি ৭৯১ বার পঠিত হয়েছে
ফিজিক্যাল স্ট্যান্স ও ব্যালেন্স
ফিজিক্যাল স্ট্যান্স বা দাড়ানোর ভংগি, ব্যালেন্স ইত্যাদি। একজন অপনেন্ট এর এগেইন্সটে ডিফেন্ডার কখনো সামনাসামনি দাঁড়াবে না বরং স্ট্রং ফুট সম্মুখে ও উইকফুট পেছনে নিজের বারের দিকে রেখে সাইডলাইনের দিকে শরীরকে মুখ করে দাঁড়াবে। স্ট্রংফুট দিয়ে ট্যাকল করা ইজি ও কুইক হয়, তাই স্ট্রংফুট সামনে থাকায় ট্যাকলিং করা যাবে ইনস্ট্যান্টলি, আবার শরীরকে সাইডলাইনের দিকে মুখ করে রাখায় নিজের বারের দিকে ঘুরতে সময় লাগবে কম, অপনেন্ট এর পক্ষে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে যেতে কঠিন হবে। সঠিক স্ট্যান্স ডিফেন্ডারের মৌলিক বৈশিষ্ট্য।
আই অন দ্য বল
অপনেন্ট ফরোয়ার্ডের সামনে ডিফেন্ড করার সময় চোখ বলের উপর রাখা জরুরি। অপনেন্ট স্বাভাবিকভাবেই বডি মুভমেন্ট (শোল্ডার ড্রপ, বডিফেইন্টস) দেয়ার ট্রাই করবে। ডিফেন্ডারের চোখ বলের দিকে থাকলে এসব চেষ্টা তেমন ইফেক্টিভ হয়না৷
যদি অপনেন্ট ফুটওয়ার্ক স্কিলফুল হয় তাহলে তার শরীর এর চেয়ে বল মুভ করবে বেশি। তখনও বল এর দিকে চোখ রাখতে হবে ও বল শরীর থেকে কখন দূরে যায় সেটার অপেক্ষা করতে হবে।
ফিজিক্যাল অপ্রেশন
অপনেন্ট এর পায়ে বল যাওয়ার আগেই তাকে গ্যাপ এ ঢুকতে বাধা দিতে হয়, এজন্য নিজের শরীরকে অপনেন্ট এর সামনে রাখা যেতে পারে যাতে সে পুরোপুরি গতিতে দৌড়ানোর ফ্রিডম না পায়।বল রিসিভের আগে অপনেন্ট এর কাছে যেয়ে দুই হাত দিয়ে অর্ধবেষ্টনীতে তাকে আটকে রাখা যায়।
বল রিসিভের পর থেকে অপনেন্ট এর কাছাকাছি মার্কিং করতে হয়, নিজের শরীর & ওজনকে ইউজ করে অপনেন্ট এর স্বাভাবিক গতিপথ থেকে বিচ্যুত করতে বা বল থেকে দূরে সরানো যায়।এজন্য অনেক সময় অপনেন্ট এর বুকের সামনে নিজের হাত দিয়ে বাধা দেয়া যেতে পারে বা জার্সির এক কোনা ধরে রেখে হাত দিয়ে বাধা দেয়া যেতে পারে। কিন্তু এটা খুব অল্প সময়ের মধ্যে অপনেন্ট এর গতিকে স্লো করতে হবে, বেশি সময় ধরে বা রেফারির চোখে ধরা পরতে পারে সেভাবে ধরে রাখলে হলুদ কার্ড দিতে পারে। আল্টিমেটলি এটা ডার্টি ট্রিক্স, কিন্তু স্বল্পমাত্রায় ও উপযুক্ত সময়ে কার্যকর।
শোল্ডার চার্জ ফিজিক্যাল অপ্রেশনের অন্যতম অংশ। অপনেন্ট এর সাথে সমান্তরাল ভাবে দৌড়ানোর সময় দুইজনের শোল্ডার পাশাপাশি থাকে। এমন সময় দুইজনের কাধে হালকা ধাক্কা লাগলে দুইজনের ভরবেগের পরিবর্তন দুইজনেরই ব্যালেন্স নষ্ট করবে। কিন্তু আগে থেকেই চিন্তা করে শোল্ডার চার্জ করা গেলে ব্যালেন্স অপনেন্ট এর চেয়ে তাড়াতাড়ি রিকোভার করা যায় যা এডভান্টেজ এনে দেয়।
অনেক সময় বলের দখলের জন্য দুই প্লেয়ার ফিজিক্যাল প্রেস দিতে থাকে, এমন অবস্থায় বল এর দিকে ফেস করে পিঠ অপনেন্ট এর দিকে রাখতে হবে, দুই পা মাটিতে থেকে ব্যালেন্স রাখতে হবে, বল কে একটু পর পর টাচ দিয়ে নিজের মোটামুটি কাছে ও নিজের পজেশনে ও কন্ট্রোলে রাখতে হবে, দুই হাত দুইদিকে প্রসারিত থাকবে, একটু উবু হওয়া পজিশন ব্যালেন্সের জন্য বেটার। অনেক সময় এক হাতের তালু দিয়ে অপনেন্ট এর বুকে রেখে তাকে একটু দূরে রেখে ড্রিবল করে বল মিড এ সাপ্লাই দেয়া যায়।
ট্যাকলিং টাইমিং সেন্স
অপনেন্ট এর পায়ে বল থাকা অবস্থায়, বলের দিকে চোখ রেখে ফরোয়ার্ডের মুভমেন্টের সাথে রিদম রেখে, তার শরীর থেকে একটা মোটামুটি ডিস্ট্যান্স রেখে একটা সাইকোলজিক্যাল ও ফিজিক্যাল প্রেশারে রাখাকে বলা যায় কন্টেইনিং বা হোল্ডিং। এভাবে কন্টেইন করতে গেলে দেখা যাবে অপনেন্ট ড্রিবল করতে করতে স্প্রিন্ট এর সময় বল শরীর থেকে দূরে সরে যায় বা স্কিলওয়ার্কের সময় কখন সে একটা ভুল করে। বল যখন শরীর থেকে দূরে থাকবে তখন ট্যাকল সাকসেসফুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সর্বোচ্চ। তাই ডিফেন্ডারকে খেয়াল করতে হয় কখন অপনেন্ট একটা ভুল করে,কখন বল শরীর থেকে দূরে সরে, কখন ট্যাকল করা সবচেয়ে লাভজনক।
ট্যাকলিং
ট্যাকলিং, ডিফেন্ডিং এর লাস্ট অপশন। ট্যাকল বিভিন্নরকম হতে পারে- স্ট্যান্ডিং ট্যাকল, স্লাইডিং ট্যাকল, কুইকফিট ট্যাকল, এরিয়াল চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি। স্ট্যান্ডিং ট্যাকলের সময় বল কখনো নিজের আয়ত্বে আসে, কখনো আউট হয়, কখনো নিজ বা অন্য টিমমেটের পায়ে যায়। তাই স্ট্যান্ডিং ট্যাকল এমন সময় করা উচিত যখন ট্যাকল কমিট করার পর বল নিজেদের পজেশনে থাকার সম্ভাবনা আছে। স্ট্যান্ডিং ট্যাকল করা হয় সাধারনত সেকেন্ড বল উইন করতে, অর্থাৎ অপনেন্ট এর বল রিসিভ (ফার্স্ট টাচ) এর পরেই।
স্লাইডিং ট্যাকল অনেক রিস্কি, একটু এদিকসেদিক হলেই ফাউল হতে পারে। এক্ষেত্রে ওয়েট করতে হয় বল কখন শরীরের থেকে দূরে যায়।
এরিয়াল বল ডিফেন্ডিং দুইরকম হতে পারে- এরিয়াল চ্যালেঞ্জ ও ফিজিক্যাল ব্লকিং। ডিফেন্ডারের উচ্চতা থাকলে অপনেন্ট এর সাথে ডিরেক্ট ৫০-৫০ বল উইনিং চান্স এ হেড দিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। হেড দেয়ার সময় নিজে লাফ দেয়ার একইসাথে অপনেন্ট কে হাত বা শরীর বা জার্সি ইউজ করে তাকে সমান উচ্চতায় উঠতে বাধা দেয়া যেতে পারে। ফিজিক্যাল ব্লকিং হলো- অপনেন্ট হেড দিতে আসার সময় নিজের পিঠ তার দিকে দিয়ে তার গতিপথে বাধা দেয়া যাতে বল পর্যন্ত পৌছাতে না পারে।
কুইকফিট ডিফেন্ডিং তরুন ও ফ্রেশলেগ (সাবস্টিটিউট প্লেয়ার) এর বড় অস্ত্র হতে পারে। যারা খুব ক্ষীপ্র বা হাই এজিলিটি প্লেয়ার তারা অপনেন্ট এর ড্রিবলিং বা স্কিল মুভমেন্ট এর মাঝে, মিলিসেকেন্ড এর কম সময়ের মধ্যে অপনেন্ট এর বল কন্ট্রোল নষ্ট করতে পারে। এজন্য স্ট্রংফুট ইউজ করে বল এ কোনোমতে টাচ দিয়ে ড্রিবলের মধ্যে কন্ট্রোল নষ্ট করতে পারলে কিছু সেকেন্ডস মূল্যবান টাইম পাওয়া যায়।স্পেশালি কাউন্টার এটাকের সময় এবং স্কিলফুল প্লেয়ারের এগেইন্সটে এটা খুব কার্যকর।
- 0 মন্তব্য