ALESSANDRO NESTA: THE TEMPESTA PERFETTA OF ITALY
পোস্টটি ৬৯১ বার পঠিত হয়েছেALESSANDRO NESTA: THE TEMPESTA PERFETTA OF ITALY
খুব তাড়াতাড়িই দুই গোলে পিছিয়ে পড়লো মিলান।সময় শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এমন সময় স্কোর দাড়ায় ২-২ এ। লাজিও আক্রমণে ছিল দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের মধ্যে বলটি বিশ্রীভাবে বাউন্স হয়।কিপার ক্রিস্টিয়ানের পক্ষে রিকোভার করা ছিলো খুবই কঠিন।অভিজ্ঞ শট-স্টপার বলটি পুরোপুরি মিস করেন।তবে নেস্তা ছিলেন, যিনি ফরাসিদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পেরেছিলেন এবং তার দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন ন্যানো-সেকেন্ডে।
নেস্তা প্লেয়ারের পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিল, যেখানে মাত্র এক সেকেন্ডের জন্য বলটি স্ট্রাইকারের থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়েছিল।তার প্রাক্তন ক্লাবের বিরুদ্ধে সত্যিই একটি দর্শনীয় চ্যালেঞ্জ ছিলো এটি।
তিনি হয়তো এসি মিলানের একজন খেলোয়াড় হিসেবে বেশি পরিচিত, কিন্তু রোমের লাজিও ছিল নেস্তার প্রথম বাড়ি এবং প্রথম প্রেম।লাজিওর একাডেমী গ্রাজুয়েট এই ক্লাবেই কাটিয়েছেন ১৭টি বছর।যার মধ্যে ক্যাপ্টেনের আর্মব্যান্ড পড়ে মাঠ দাপিয়েছেন ৬ বছর।সিরি আর সোনালী প্রজন্মের ডিফেন্ডারদের মধ্যেও নিজের জাত চেনাতে বেশি সময় লাগেনি নেস্তার।
পাওলো মালদিনি এবং ফ্যাবিও ক্যানাভারোর মতো খেলোয়াড়দের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে,৯০ এর দশকে লাজিও দলে নেস্তার প্রভাব ছিল দৃঢ়।১৯৯৭ সালে তার রক্ষণাত্মক প্রদর্শন ভক্তদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়, এবং ক্লাব অথরিটি তাকে সেই বছর অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচিত করে।
১৯৯৯-২০০০ সিজনে তিনি লাজিওকে স্কুদেত্তো এবং কোপা ইতালিয়া জয়ী নেতৃত্ব দিয়ে দিয়েছিলেন।২০০০-০১ সিজনে ডিনো জফ এর অধীনে লাজিও সুপারকোপা ইতালিয়ানা জেতে এবং সিরি আতে তৃতীয় হয়।এই সময়ের মধ্যে নেস্তার পারফরম্যান্স এবং লাজিওর সাফল্য তাকে ২০০০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে টানা তিনটি সিরি আ ডিফেন্ডার অফ দ্য ইয়ার পুরস্কার জেতায়।লাজিও এবং এর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সার্জিও ক্র্যাগনোত্তি আর্থিক সমস্যার কারণে ২০০২ সালে মিলানের কাছে নেস্তাকে বিক্রি করে দেন।নেস্তা মিলানে যোগ দেন মাত্র ৩০ মিলিয়নের বাম্পার ট্রান্সফার ফিতে।
সান সিরোতে নেস্তা ১৩ নম্বর জার্সি তুলে নেন,যেটা গায়ে দিয়েই লাজিওর মাঠ মাতাতেন তিনি।২০০২-০৩ সিজনে বেশিরভাগ ম্যাচেই মালদিনির পার্টনার হিসেবেই মাঠে দেখা যায় তাকে।নিজের প্রথম সিজনেই মিলানের জার্সি গায়ে খেলেন ৪৮ ম্যাচ।২০০৬ এবং ২০০৮ সালে পিঠের সমস্যার কারণে তেমন একটা মাঠে নামতে পারেননি তিনি।এছাড়াও বেশ কয়েকটি গুরুতর ইনজুরিতে পড়েছিলেন।যখন তিনি তার ২০-এর দশকের শেষদিকে প্রবেশ করেন, তখনও শান্ত, স্থূল আচরণ বজায় রেখে নেস্তা নিজেকে ড্রেসিংরুমে একজন নেতা হিসাবে জাহির করতে শুরু করেন।
নেস্তা ছিলেন একজন সম্পূর্ণ এবং প্রভাবশালী ডিফেন্ডার, যিনি ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়েই প্রভাবশালী ছিলেন এবং যাকে পন্ডিতরা তার প্রজন্মের এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে প্রতিভাবান ডিফেন্ডারদের একজন বলে মনে করেন।একটি শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী রক্ষণাত্মক, অ্যাথলেটিক এবং শারীরিক উপস্থিতি হওয়া সত্ত্বেও, তিনি একজন অত্যন্ত চটপটে এবং মার্জিত খেলোয়াড় ছিলেন, যার সাথে দুর্দান্ত ভারসাম্য, বল দক্ষতা, দৃষ্টি এবং পাস করার ক্ষমতা ছিল তার,এই ক্ষমতার কারণে তাকে মিলানের প্রাক্তন অধিনায়ক ফ্রাঙ্কো বারেসির সাথে তুলনা করা হয়।যদিও তাকে সাধারণত তার কর্মজীবনে সেন্টার ব্যাক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি প্রাথমিকভাবে রাইট ব্যাক হিসাবে খেলোয়াড় শুরু করেছিলেন।তার কারিগরি দক্ষতা, অ্যাথলেটিকিজম এবং রক্ষণাত্মক ক্ষমতা তাকে কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে বহুমুখী খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তুলেছিল, যিনি ব্যাকলাইন বরাবর যে কোনো জায়গায় খেলতে সক্ষম ছিলেন।
নেস্তা ইতালির হয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন এবং ১৯৯৬ সালের উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী অনূর্ধ্ব-২১ দলের সদস্য ছিলেন তিনি।স্পেনের বিপক্ষে ফাইনালে, ১-১ ড্রয়ের পর, তিনি চূড়ান্ত ৪-২ শুট-আউটে ইতালির চতুর্থ পেনাল্টি নিয়েছিলেন।১৯৯৬ সালে মলদোভার বিরুদ্ধে ১৯৯৮ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তিনি সিজার মালদিনির অধীনে আজজুরির হয়ে প্রথম মাঠে নামেন এবং শেষ পর্যন্ত বাছাইপর্বে সাতটি খেলায় অংশগ্রহণ করেন।ফাইনাল টুর্নামেন্টে নেস্তা তিনটি গ্রুপ গেমেই খেলেছিল।পাওলো মালদিনি, ফ্যাবিও ক্যানাভারো, আলেসান্দ্রো কস্তাকুর্তা এবং জিউসেপ বার্গোমির সাথে মাঠে নামতে দেখা যায় তাকে।ইতালিকে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধে ক্লিন শীট রাখতে সাহায্য করেছিলেন তিনি।ইনজুরির কারণে তিনি আর মাঠে পারেননি, যদিও কোয়ার্টার ফাইনালে ইতালি স্বাগতিক ফ্রান্সের কাছে পেনাল্টিতে পরাজিত হয়।নেস্তা ইউরো ২০০০ টুর্নামেন্ট জুড়ে বেশিরভাগ সময় তাকে ডিফেন্সে পাওলো মালদিনি এবং ফ্যাবিও ক্যানাভারোর সাথে মাঠে দেখা যায়।ফাইনালে যাওয়ার পথে ইতালি মাত্র দুটি গোল হজম করে এবং পুরো টুর্নামেন্টে তিনটি ক্লিনশিট রাখে।বেলজিয়ামের সাথে গ্রুপ স্টেজে এবং রোমানিয়ার সাথে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন তিনি।সেমিফাইনালে, অতিরিক্ত সময়ের পরে ম্যাচের স্কোর ছিলো ০-০,পরে দশজন সদস্যের ইতালি পেনাল্টি শুটআউটে সহ-আয়োজক নেদারল্যান্ডসকে পরাজিত করে।ইতালি ফাইনালে উঠেছিল যেখানে তারা ডিফেন্ডিং বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মুখোমুখি হয়েছিল।৫৫ তম মিনিটে মার্কো ডেলভেচিওর একটি গোলের পরে ১-০ তে এগিয়ে যায়,স্টপেজ টাইমের শেষ মিনিটে সিলভাইন উইল্টোর্ড সমতাসূচক গোলটি করেন।এরপর ডেভিড ট্রেজেগুয়েট অতিরিক্ত সময়ে গোল করে ফ্রান্সকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।টানা দ্বিতীয় টুর্নামেন্টে ইতালীয়দের পরাজিত করে ফ্রান্স।নেস্তা, তার রক্ষণাত্মক অংশীদার মালদিনি এবং ক্যানাভারোর সাথে, তার পারফরম্যান্সের জন্য টুর্নামেন্টের সেরা দলের অংশ হিসেবে নির্বাচিত হন।
২০০৬ বিশ্বকাপের ওপেনিং ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে ক্লিনশিট রাখে ইতালি।কিন্ত গ্রুপ স্টেজের ফাইনাল ম্যাচে চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে ম্যাচে ইঞ্জুরিতে আক্রান্ত হন নেস্তা।শেষ হয় নেস্তার ওয়ার্ল্ড কাপ টুর্নামেন্ট যাত্রা।বিশ্বকাপের পর ইউরো ২০০৮ কোয়ালিফায়ার ম্যাচে জর্জিয়ার বিপক্ষে এক ম্যাচ খেলেন তিনি।কিন্ত তারপর ইঞ্জুরির কারণে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন তিনি।নেস্তা রবার্তো ডোনাডোনির জাতীয় দলে ফেরার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।দুই বছর পর, তিনি একইভাবে ২০১০ বিশ্বকাপের আগে মার্সেলো লিপিরও জাতীয় দলে ফেরার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
আজ এই কিংবদন্তি ৪৮ বছরে পদার্পণ করলেন।
শুভ জন্মদিন।
- 0 মন্তব্য