কেমন ছিলো এমবাপ্পের প্রথম ইউসিএল বার্নাব্যু ম্যাজিক্যাল নাইট..
পোস্টটি ২৯৫ বার পঠিত হয়েছে
Jamie Carragher: “Real Madrid thought they bought the best player in the world (Mbappe) when they already had the best player in the world (Vinicius).
এমবাপ্প-মাদ্রিদ সাগায় বিরক্ত হয়নি এমন কোনো ফুটবল দর্শক পৃথিবীতে নেই..
দীর্ঘ সময় পর ২৪/২৫ সিজনে এসে ফ্রি ট্রান্সফারে এমবাপ্পে মাদ্রিদে যোগ দেয় মূলত তখন থেকেই সন্দেহ ছিলো এমবাপ্পে মাদ্রিদে কেমন করে ফিট করে..!
বিশেষ করে গত কয়েক সিজনে লেফ্ট উইংয়ে ভিনিসিয়াস আস্থার প্রতিদান খুব ভালোভাবেই দিচ্ছে তারই ধারাবাহিকতা গতবার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোয় পারফর্মসহ ফাইনালে গোল করে দলকে ইউসিএল জেতায় সেজন্য হয়ত ব্যালন ডি অরও জিততে চলছেন..!
এই সিজনে শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিলো এমবাপ্পে-ভিনিকে আনচেলত্তি কিভাবে ফিট করবেন.!
সাধারণত ফুটবল ফ্যানরা যে এমবাপ্পেকে দেখে অভ্যস্থ তেমনটা এমবাপ্পে থেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে হয়ত মাদ্রিদিস্তারাও স্বীকার করে নেবেন কিন্তু তারপরেও তার পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করলে দেখা যায় লীগে ৯ ম্যাচে ৬ গোল ১ এসিস্ট এবং ইউসিএলে ৩ ম্যাচ ২ স্টার্টে ১ গোল, ১ এসিস্ট!
মোটামুটি চলনসই বলাই যায়..!
মূলত মাদ্রিদ ইউসিএলে বিখ্যাত বার্নাব্যুতে ম্যাজিকাল নাইট এবং মৃত্যকূপ থেকে ফিরে আসার গল্প রচনায়..!
মাদ্রিদকে ইউসিএলের ফিনিক্স পাখি বললে কেউ দ্বিমত করবেন না নিশ্চই কেননা বরাবরই মাদ্রিদ নিজের ভস্ম থেকে পুনরুত্থিত হয় এবং সেটা একবার,দুইবার বরং বারংবার তাই হয়ে আসছে..!
এই সিজনে মাদ্রিদ ইউসিএলের প্রথম ২ ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট অর্জন করে, ফরাসি ক্লাব লিঁলের কাছে অপ্রত্যাশিত হার যা যেকোনো টুর্নামেন্টে মাদ্রিদের ২৫৪ দিনে প্রথম হার..!
এই সিজনে মাদ্রিদ হয়ত ম্যাচ জিতছে,পয়েন্ট পাচ্ছে কিন্তু মাদ্রিদ ভাইব পাওয়া যাচ্ছিলো না..!
একদিকে ইঞ্জুরি অন্যদিকে আনচেলত্তি এখনো সঠিক ফর্মেশন খুঁজে না পাওয়া..!
সে ধারাবাহিকতায় ইউসিএলে নিজেদের ৩য় ম্যাচ ডর্টমুন্ড যাদের সাথে গতবার ফাইনালে ২-০ গোলের জয়লাভ করে..!
কিন্তু এই নুরি শাহিনের টিম ইউসিএলে অপরাজিত তাই চাপ কিছুটা ছিলো..!
খেলা শুরু হওয়ার পর ডর্টমুন্ড খুব ভালোভাবেই মাদ্রিদকে চেপে ধরে ৩০ এবং ৩৫ মিনিটে ২-০ গোলে এগিয়ে রিয়ালকে ঘরের মাঠে হারানোর চোখ রাঙানি দেয়..!
তো সেই ম্যাচে TNT Sports এর ধারাভাষ্যকার বলছিলেন মাদ্রিদকে দেখে মনে হচ্ছে তারা এখনো এমবাপ্পের সাথে ফিট হতে পারেনি..!
শেষপর্যন্ত মাদ্রিদ ম্যাচটি ফিনিক্সে মতো ৫-২ গোলে জিতেনি বরং উড়িয়ে দেয় ডর্টমুন্ডকে..!
এবার দেখে নেওয়া যাক এমবাপ্পে কেমন ছিলেন তার প্রথম বার্নাব্যু ম্যাজিক্যাল নাইটে.!
ছবি:-১
মাদ্রিদ যখন একটি গোলের খোঁজ করছিলো তখন ৫৯ মিনিটে রুডিগার হেডে একটি গোল করে..!
মূলত সেখান থেকেই মাদ্রিদ ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে..
এবার দেখে নেওয়া যাক এমবাপ্পে :-
প্রথম গোলের এসিস্ট অর্থাৎ এমবাপ্পের নিখুঁত ক্রস খুঁজে নেয় রুডিগারকে যেখান থেকে মাদ্রিদের প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখা শুরু হয়েছে বলা যায়.!
সুতরাং প্রত্যাবর্তনের সূচনা রুডিগারের মাথা থেকে নয় বরং শুরু হয়েছিলো এমবাপ্পের পায়ে থেকে!!
ছবি:- ২
মাত্রই মাদ্রিদ একটি গোল করে নিজেদের প্রত্যাবর্তনের ইশারা দেয় ঠিক ২ মিনিট পরে ভিনির একটি গোলে মাদ্রিদ সমতায় ফিরে..!
এবার দেখি এমবাপ্পে:-
মাদ্রিদ যখন এটাকিং থার্ডে গোল খোঁজ করছিলো মডরিচে বাড়ানো বলে এমবাপ্পে নিজের দারুণ পজিশনিং সেন্সের দ্বারা ডর্টমুন্ডের অফসাইড ট্র্যাপ ভেঙে বল হোল্ড করে সেখানে ডর্টমুন্ডের ডিফেন্ডারের ট্যাকেলে বল ডিফ্লেক্ট হয়ে ভিনিসয়াসে পা খুঁজে নেয় আর ভিনিসিয়াসে পা থেকে বল খুঁজে নেয় সমতাসূচক গোল..!
এখানে এমবাপ্পে:- খালি চোখে রেফারি গোলটিকে প্রথম অফসাইড ঘোষণা করে পরে যখন ভার চেক করে তখন দেখা যায় এমবাপ্পের পজিশনিং সেন্সের দরুন ডর্টমুন্ডের অফসাইড ট্র্যাপটি ভাঙতে সক্ষম হয়!
ছবি:- ৩
মাদ্রিদ ততক্ষণে লুকাস ভাস্কুয়েজের গোলে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ফেলেছে এবার দরকার ছিলো জয়কে পোক্ত করা..!
ভিনিসিয়াসের দুর্দান্ত সোলো গোলে মাদ্রিদ লিড নেয় ৪-২ গোলের..!
এখানে এমবাপ্পে:- খালি চোখে এই গোলে এমবাপ্পের কোনো প্রত্যক্ষ অবদান নেই কিন্তু আমরা যারা খেলা আতশি কাঁচের নিচে রেখে দেখতে পছন্দ করি তারা খেয়াল করলে দেখি এমবাপ্পে দারুণ একটি ফেইক রান ক্রিয়েট করে ডর্টমুন্ডের ডিফেন্ডারকে নিজের সাথে এটাকিং থার্ডের ডিপে টেনে নেয় ব্যস তার এই স্মার্ট মুভের জন্যই ভিনিসিয়াস পেয়ে যায় নিজের ২য় এবং দলের ৪র্থ গোল..!
ছবি:- ৪
৩ নং ছবির ফলোথ্রু মূলত এই ছবি যদিও ফুটবল খেলা একটি চলমান খেলা বলা হয়ে থাকে একটি ফুটবল ম্যাচে প্রতি সেকেন্ড তিনটি স্থিরচিত্র তৈরি হয় সুতরাং সেটির অংশই এই ছবি..!
ভিনিসিয়াস যখন নিজের অর্ধ থেকে সোলো রান ক্রিয়েট করে এমবাপ্পের ডিফেন্ডার ড্র্যাগিংয়ে ভিনিসিয়াসকে শ্যুটিং স্পেস তৈরি করে দেয় যেটি যথেষ্ট হয়ে যায় গোল করার জন্য..!
এখানে এমবাপ্পে:- ভিনিসিয়াস নিজেও এই গোল নিয়ে মন্তব্য করতে যেয়ে বলেন যখন সে দেখলো এমবাপ্পে রান ক্রিয়েট করে তখন সে বুঝে যায় তার নিজেকেই শ্যুএ নিতে হবে!
এইকথায় ক্লিয়ার হয় এমবাপ্পের ওই স্মার্ট মুভের জন্যই মাদ্রিদ নিজের চতুর্থ গোলের দেখা পায়..!
তো কেমন ছিলো এমবাপ্পের প্রথম ইউসিএল বার্নাব্যু ম্যাজিক্যাল নাইট?
আপাতদৃষ্টিতে এমবাপ্পে কোনো গোল করতে পারেনি বলার মতো শুধুমাত্র একটি এসিস্ট তুলেছে নিজের স্ট্যাট প্যাডে..!
হয়ত হ্যাট্রিক করে ম্যাচের সব আলো কেড়ে নিয়েছে প্রথম ব্যালন জয়ের অপেক্ষায় থাকা ভিনিসিয়াস কিন্তু ইম্প্যাক্ট হিসেব করলে এমবাপ্পে পিছিয়ে থাকেনি হয়ত সমানে সামন পাল্লা দেয়নি কিন্তু নিজের ব্রিলিয়ান্স,খেলোয়াড়ি বিচক্ষণতা দেখিয়েছে বার্নাব্যুবাসীকে..!
প্রথম ম্যাজিক্যাল নাইটে যতটা দেখিয়েছে মাদ্রিদিস্তারা আশা করবেন পরবর্তী ম্যাজিক্যাল নাইট গুলোতে এমবাপ্পে হবে নিজের মতো যেখানে পাল্লা দিবে সমানে সমান..!
- 0 মন্তব্য