• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    রিয়ালের জয়ে উজ্জ্বল মারিয়ানো

    রিয়ালের জয়ে উজ্জ্বল মারিয়ানো    

    ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো জুভেন্টাসে পাড়ি জমানোর পর বড় কোনো তারকাকে দলে ভেড়ায়নি রিয়াল। আক্রমণভাগে নেই কোনো নতুন সাইনিং। এমন সময়ে লিঁ থেকে তাকে পুনরায় দলে আনলেন ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। রোনালদোর রেখে যাওয়া ৭ নম্বর জার্সিতে নেইমার, হ্যাজার্ড, এম্বাপ্পেদের দেখার স্বপ্ন দেখতেন রিয়ালের সমর্থকেরা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাকেই রিয়ালের নতুন 'নাম্বার সেভেন' বানিয়ে দেওয়া হয়। হাসি-ঠাট্টা-বিদ্রূপ কম সইতে হয়নি। কিন্তু আজ রিয়ালে ফিরে আসার পর প্রথম ম্যাচেই নিন্দুকদের মুখে কুলুপ এঁটে দিয়েছেন মারিয়ানো দিয়াজ। বাঁ-প্রান্ত থেকে দুর্দান্ত এক বাঁকানো শটে গোল করে রিয়ালের হয়ে ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি। সেই সাথে অন্তত ফিরে আসার পর অভিষেকে মান রাখলেন রিয়ালের ৭ নম্বর জার্সির।

    সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের শুরু থেকেই রোমার রক্ষণভাগকে কাঁপিয়ে দিচ্ছিল রোমা। ম্যাচের ৪ মিনিটেই লিড নিতে পারত হুলেন লোপেতেগির দল। মাঝমাঠ থেকে বেলের উদ্দেশ্যে ডিফেন্সচেরা এক পাস বাড়ান টনি ক্রুস। জার্মান মিডফিল্ডারের পাস দুর্দান্তভাবে নিয়ন্ত্রণে আনেন বেল। কিন্তু ওয়েলশ ফরোয়ার্ডের বাঁপায়ে জোরাল শট চলে যায় গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে। ম্যাচের শুরুতেই এমন সুযোগ পেয়ে আরও উদ্দীপ্ত হয়ে উঠে সমগ্র বার্নাব্যু। মূহূর্মূহূ চিৎকারে বেলদের উৎসাহ যোগাতে থাকেন তারা। আর প্রতিপক্ষ সমর্থকদের জোরাল হর্ষধ্বনিতে খেই হারিয়ে ফেলেন রোমার ফুটবলাররা। একাধিক ভুল পাসে উল্টো রিয়ালের আক্রমণেই যেন সাহায্য করছিলেন তারা।

    ৮ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ পেয়েছিল রিয়াল। ইস্কোর শটটি দারুণভাবে ফিরিয়ে দলকে সমতায় রেখেছেন রোমা গোলরক্ষক রবিন ওলসন। পুরো প্রথমার্ধে একমাত্র তার কারণেই রিয়ালের গোলবন্যায় ভাসেনি রোমা। ৩৮ মিনিটে কর্ণার থেকে সার্জিও রামোসের বুলেট হেড দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন সুইডিশ গোলরক্ষক। রিয়ালের ৪-৩-১-২ ফর্মেশনে 'ফ্রি রোল'-এ খেলা ইস্কোকে আটকাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছিলেন ড্যানিয়েল ডি রসিরা। এই সুযোগে বেল-বেনজেমার সাথে ইস্কোর বোঝাপড়াও ছিলেন দারুণ। কিন্তু প্রথমার্ধের একেবারে শেষদিকে আর শেষরক্ষা হয়নি ওলসন এবং রোমার। ৪৫ মিনিটে ডিবক্সের সামান্য বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রিকিক রোমার জালে পাঠান ইস্কো। ২০১৮-১৯ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথমবারের মত বার্নাব্যুতে বেজে উঠে 'আলা মাদ্রিদ' সঙ্গীতের রাগ।

     

     

    প্রথমার্ধের শেষদিকে লিড নিয়ে গোলের সামনে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় রিয়াল। আর তাতেই পোড়ে রোমার কপাল। প্রতি-আক্রমণে খেলা রোমা অবশ্য সুযোগ পেয়েছিল কিছু, কিন্তু কাজের কাজ আর হয়নি। চেঙ্গিজ উন্ডার এবং এডিন জেকোরা দূরপাল্লা থেকে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কেইলর নাভাসকে আর পরাস্ত করা যায়নি। থিবো কর্তোয়ার বদলে লোপেতেগির তাকে মূল একাদশে নামানোর সিদ্ধান্তের প্রতি আবারও সুবিচার করলেন কোস্টারিকান গোলরক্ষক। ৫২ মিনিটে বেলের শট ক্রসবারে প্রতিহত না হলে ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত রিয়ালের। বারপোস্ট, নিজের ভুলে মিস- কোনোকিছুই দমাতে পারেনি বেলকে। ৫৮ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে মদ্রিচের থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে এনেই বাঁপায়ের মাপা শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেল।

    এই গোলের পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে রোমা। অবশ্য বেলের গোলের পর আক্রমণের ধার কমেনি রোমার। তবে নাভাসদুর্গ আর ভেদ করা হয়নি। নাভাসের মত মাঠের অপর প্রান্তে দুর্দান্ত ছিলেন ওলসনও। প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও রিয়ালের নিশ্চিত কয়েকটি গোল বাঁচিয়েছেন তিনি। ৭২ মিনিটে ক্রুসের জোরাল শট, বা ৭৬ মিনিটে মার্সেলোর ভলি- দুবারই দারুণভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। ৮৮ মিনিটে ক্রইুফ টার্নে ওলসনকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি মার্কো আসেন্সিও। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে মারিয়ানোর গোলে তাই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরও তিন গোল হজম করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ওলসনকে।