• এশিয়া কাপ ২০১৮
  • " />

     

    ইমরুল প্রমাণ করেছে, অভিজ্ঞতা বাজারে কেনা যায় না

    ইমরুল প্রমাণ করেছে, অভিজ্ঞতা বাজারে কেনা যায় না    

    যেভাবে স্নায়ু ধরে রেখেছে, সেটাই পাওয়া

    কিছু কিছু ম্যাচে আপনার কাছে জয়টা নিজে থেকে আসবে না, জয়টা আপনার বের করে নিয়ে আসতে হবে। কাল বাংলাদেশ সেটাই করেছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যেভাবে সবাই স্নায়ুটা ধরে রেখেছে, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। এটা প্রমাণ করে, বাংলাদেশ ওয়ানডেতে দল হিসেবে কতটা শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

    মোস্তাফিজের ওভারটাই টার্নিং পয়েন্ট

    টার্নিং পয়েন্ট যদি বলতে হয়, তাহলে আমি মোস্তাফিজের শেষ ওভারের কথাই বলব। ওই ওভারে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের দরকার ছিল আট রান। সেখান থেকে বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা ছিল খুব কম। কিন্তু মোস্তাফিজ মাথা ঠাণ্ডা রেখে ম্যাচটা বের করে আনল। তার আগ পর্যন্ত কিন্তু আফগানিস্তান ভালোভাবেই ম্যাচটা বের করে নিচ্ছিল। আর ব্যাটিংয়ের কথা বললে মাহমুদউল্লাহ আর ইমরুলের ওই জুটিটার কথাই বলব। তবে মোস্তাফিজ শেষ ওভারটা অমন না করলে এরকম কিছুই হতো না।

    মোস্তাফিজ ডেথ ওভারে বিশ্বের সেরাদের একজন, সেটা সে আরেকবার প্রমাণ করল। সে ক্যারিয়ারে শেষের দিকে অনেক বার বল করেছে, সেই অভিজ্ঞতারই পুরস্কার পেয়েছে। তবে আমার মনে হয় চোট থেকে ফেরার পর সে আগের সেই ফর্মে এখনও শতভাগ ফেরেনি। এরকম আরও দুই একটি ম্যাচ শেষে গিয়ে জেতাতে পারলে তার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। আমরা তখন আগের সেই মোস্তাফিজকে আবার ফিরে পাব।

    রশিদ খান এমন কোনো ‘আনপ্লেয়েবল’ বোলার নয়

    রশিদ খানকে নিয়ে আমার মনে হয় মাতামাতিটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। আমি বলব, এটা আসলে বাড়াবাড়ি। ও খুব ভালো বলার, কিন্তু এমন নয় ওর বল খেলাই যাবে না। কালও মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল মিলে সেটাই প্রমাণ করল। আর ব্যাটসম্যানরা যখন ঠিক করে ওকে উইকেট দেওয়া যাবে না, ও কিন্তু তখন একটু খেই হারিয়ে ফেলে। আমার মনে হয় কাল রশিদকে আমরা খুব ভালোমতোই সামলেছি।

    ইমরুল প্রমাণ করেছে, অভিজ্ঞতা বাজারে কেনা যায় না

    আমি আসলেই অবাক হয়েছিলাম ইমরুলকে ওই জায়গায় নামতে দেখে। ওর জায়গা তো আসলে ছয় না। তবে এই অবস্থায়ও কন্ডিশন থেকে ভ্রমণক্লান্তি, সবকিছুর বিরুদ্ধে লড়াই করে সে যেভাবে মাঠে নেমেছে ও ব্যাট করেছে, তাতে তাকে অভিনন্দন জানাতেই হয়। আমি শুধু একটা কথাই বলব, আমরা কখনোই অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিতে চাই না বা পাত্তা দিতে চাই না। পুরনো কথাটাই আবার বলতে হচ্ছে, ইমরুল প্রমাণ করেছে অভিজ্ঞতা বাজারে কেনা যায় না। এটা আগেও সত্যি ছিল, এখনও আছে।

    ব্যাটিং অর্ডারে ওলটপালট পছন্দ হয়নি

    এরকম একটা ম্যাচ জেতার পরেও আমি বলব, ব্যাটিং অর্ডারে ওলটপালট আমার পছন্দ হয়নি। হুট করে সাকিবকে পাঁচ নিয়ে আসা হলো, আবার মিঠুনকে তিনে নিয়ে আসা হলো। আগের দিনই আমি বলেছিলাম, মিঠুন যেখানে ব্যাট করছিল সেটাই ওর জন্য ঠিক আছে। ইমরুলকে আবার ছয়ে খেলানো হলো। আমার মনে হয়, সাকিবের তিনে খেলছিল ওর সেখানেই নামা উচিত। শেষ ম্যাচে আশা করি আমরা এটা দেখতে পাব।

    পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশই এগিয়ে

    পাকিস্তানের বিপক্ষে আমি সব দিক বিবেচনা করলে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখব। এর একটা বড় কারণ, পাকিস্তান আগের ম্যাচটা হেরেছে আর বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচটা জিতেছে। আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। আর অভিজ্ঞতার দিক দিয়েও বাংলাদেশের পাল্লা ভারি। তিন বছর আগে যখন পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম, অনেক খেলোয়াড়ই নেই এবার। তবে আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারলে জেতা খুবই সম্ভব।

    পাকিস্তানের সঙ্গে দলে কোনো পরিবর্তন আনা উচিত কি না, সেটা আমি টিম ম্যানেজমেন্টের পরেই ছেড়ে দিতে চাই। খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেখানেই দেখেছে, কে কী অবস্থায় আছে সেটা ম্যানেজমেন্টই বলতে পারবে।


    শাহরিয়ার নাফীস- বাংলাদেশের হয়ে ২৪টি টেস্ট, ৭৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক।