নিষিদ্ধ হওয়ার ছয় বছর পর কানেরিয়ার স্বীকারোক্তি
প্রায় ছয় বছর আগে আজীবনের জন্য ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তান স্পিনার দানিশ কানেরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ আনা হলেও কখনোই সেটা স্বীকার করেননি। নিষিদ্ধ হওয়ার ছয় বছর পর অবশেষে মুখ খুললেন কানেরিয়া। নিজের অপরাধ স্বীকার করে কানেরিয়া বলছেন, কাউন্টি ক্রিকেটে স্পট ফিক্সিংয়ের যে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে, সেটার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী তিনি।
একটা সময় টেস্টে পাকিস্তানের অন্যতম ভরসা ছিলেন কানেরিয়া। ২০০৯ সালে কাউন্টিতে এসেক্সের হয়ে খেলার সময়েই বাধে বিপত্তি। ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড অভিযোগ আনে, কাউন্টি খেলার সময় অনু ভাট নামের জুয়াড়ির থেকে টাকা নিয়ে স্পট ফিক্সিং করেছিলেন তিনি ও একেক্সের মারভিন। পরে ২০১২ সালের শেষের দিকে তাকে আজীবন নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। এতগুলো বছর পেরিয়ে গেলেও কখনোই ওই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মুখ খোলেননি কানেরিয়া।
দীর্ঘদিন চুপ থাকার পর আল জাজিরাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে নিজের দোষ স্বীকার করলেন কানেরিয়া, ‘ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ড ২০১২ সালে যে দুটি অভিযোগ এনেছিল, সেটা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি। আমি একেক্সের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি, পাকিস্তানের কাছেও। ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অনু ভাটের সাথে আমার পরিচয় হয়। পরে তার আমন্ত্রণে ডিনারেও গিয়েছিলাম। একেক্সের মারভিনকে সে স্পট ফিক্সিং করতে বলে। পরে আইসিসির পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা পাকিস্তানে এসে আমাদের বলেছিল অনু নামের সেই জুয়াড়ির কথা। আমি তখন সবকিছু লুকাই সবার থেকে। সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে আমার সব বলে দেওয়া উচিত ছিল।’
দোষ কেন এত বছর পর স্বীকার করলেন? কানেরিয়া বলছেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবার কথা চিন্তা করেই এসব সবার সামনে আনতে চাননি, ‘আমি দোষ করেছি, এটা তাকে বলার শক্তি ছিল না। তিনি আমাকে নিয়ে গর্ব করতেন। আমি যা করেছিল সেটা যদি তিনি আমার মুখে শুনতেন, তাহলে সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু এত বছর পর আমার মনে হয়েছে, সত্যিটা সাহস করে বলা উচিত। মিথ্যা নিয়ে আর বেঁচে থাকা সম্ভব না।’
মোহাম্মদ আমির ক্ষমা পেয়েছেন। পিসিবি তাকেও ক্ষমা করে দেবেন, এমনটা এখনো বিশ্বাস করেন কানেরিয়া, ‘ক্রিকেট আমাকে এতকিছু দিয়েছে, আমিও ক্রিকেটকে কিছু দিতে চাই। যদি পিসিবি ও ইসিবি আমাকে ক্ষমা করে, তাহলে তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য অবশ্যই কিছু করব। তাদেরকে শেখাবো, যদি আমার মতো ভুল কর তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে।’