• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে চার গোলের ম্যাচে জিতল না কেউই

    ওল্ড ট্রাফোর্ডে চার গোলের ম্যাচে জিতল না কেউই    

    দুই প্রান্তে দুই গোলরক্ষকের খামখেয়ালিতে গোল হয়েছে, দুই দলের ডিফেন্ডারদের ভুলেও গোল হয়েছে, দুইবার এগিয়ে গেছে আর্সেনাল, দুইবারই জবাব দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড- চার গোলের ড্র ম্যাচেও তাই উত্তেজনার কমতি ছিল না ওল্ড ট্রাফোর্ডে। ১৯৮৬ সালের পর প্রথমবারের মতো ইউনাইটেড-আর্সেনাল ম্যাচের ডাগআউটে ছিলেন না স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ও আর্সেন ওয়েঙ্গারের অন্তত একজন। স্যার অ্যালেক্স অবশ্য মাঠে বসেই দেখেছেন ম্যাচ। তবে দিনশেষে তৃপ্তিটা বেশি পাওয়ার কথা ওয়েঙ্গারেরই। নতুন কোচ উনাই এমেরির অধীনে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা ২০ ম্যাচে গিয়ে গেছে আর্সেনাল। সবশেষ ২০০৭ সালে এতোগুলো ম্যাচ অপরাজিত ছিল গানাররা। 

    খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পুরোটাই সময়ই দ্রুত গতিতে আক্রমণ চালিয়েছে দুইদল। বল পজেশন আর আক্রমণের সংখ্যার হিসেবে আর্সেনালই ছিল এগিয়ে। ইনজুরি জর্জরিত ইউনাইটেডের একাদশে রক্ষণটা নতুনই ছিল। প্রিমিয়ার লিগে ডিয়েগো দালতের একাদশে অভিষেকের দিনটা খুব বেশি ভালো যায়নি। ওই প্রান্ত দিয়ে আর্সেনাল বেশিরভাগ আক্রমণ সাজাচ্ছিলেন গুয়ানদজি, অবামেয়াংরা। অবশ্য আর্সেনালের প্রথম গোলটা এলো একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে। ২৬ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করেছিলেন স্কদ্রান মুস্তাফি। সেই হেড মাটিতে ড্রপ খেয়ে ডেভিড ডি গিয়ার হাত ফসকে ঢুকে যায় ইউনাইটেডের জালে। তখনই এগিয়ে যায় আর্সেনাল। 



    একপ্রান্তের গোলরক্ষকের ভুলের চার মিনিট পরই অন্যপ্রান্তে ভুল করে বসেন বার্নড লেনো। মার্কোস রোহোর ফ্রি কিক একবারেই ঠেকাতে পারতেন, কিন্তু তিনি ফিস্ট করে বল ফেললেন বিপদজনক জায়গায়। অ্যান্ডার হেরেরাও দৌড়ে গিয়ে করলেন ক্রস, জন্মদিনে গোল করে অ্যান্থনি মার্শিয়াল ৩০ মিনিটেই দলকে ফিরিয়ে আনলেন ম্যাচে। অবশ্য ভিএআর থাকলে বাতিলও হতে পারত এই গোল, আক্রমণের সময় হেরেরা ছিলেন অফসাইড পজিশনে, যদিও রেফারির চোখ সেটা এড়িয়েই গেছে।

    প্রথমার্ধে রেফারির দেখানো ৪ হলুদ কার্ডও উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ম্যাচে। পরের অর্ধেও দুইদল খেলেছে সব উজাড় করে দিয়ে, কিন্তু রেফারির সহনশীলতায় আর কোনো হলুদ কার্ড লালে পরিণত হয়নি। একাদশে পল পগবাকে না রেখে ম্যাচের আগেই চমক দিয়েছিলেন হোসে মরিনহো। শেষ ১৫ মিনিটে পগবাকে সুযোগ দিয়েছিলেন ইউনাইটেড কোচ, তবে তার আগেই খেলার ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল এক মিনিটের ব্যবধানে।

    ৬৮ মিনিটে রোহোই ভুল করেছিলেন, বল দিয়ে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষকে। পরে ওই আক্রমণ থেকেই হেনরিখ মিখিতারিয়ানের ক্রস আবারও রোহোর পায়ে লেগেই ঢুকে যায় ইউনাইটেডের গোলে। দীর্ঘ বিরতির পর দলে ফিরে রোহোর রাতটা অস্বস্তিকর হয়েছে আত্মঘাতী গোলে। অবশ্য ইউনাইটেড আফসোস ভুলেছে পরের মিনিটেই। রোহোই নিজ অর্ধ থেকে লং বল পাঠিয়েছিলেন, বদলি রোমেলু লুকাকুর হেড ক্লিয়ার করতে পারেননি আর্সেনাল ডিফেন্ডাররা। সুযোগ বুঝে পেছন থেকে দৌড়ে এসে ডিবক্সের ভেতর থেকে হাফ ভলিতে গোল করেন জেসি লিনগার্ড।

    দুই গোলে সমতায় থাকা ম্যাচে শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য কৌশল বদলেছিলেন মরিনহো। পগবা, ফেলাইনিরা অবশ্য সুবিধা করতে পারেননি নেমে। উল্টো  ডি গিয়া তিনটি ভালো সেভ না করলে ম্যাচটা হাতছাড়া হতে পারত ঘরের দলের। ৭১ আর ৭৫ মিনিটে পিয়ের এমেরিক অবামেয়াংয়ের দুইটি শটে দুর্দান্ত সেভ করে ডি গিয়া শাপমোচন করেন। ৯০ মিনিটেও লুকাস তোরেয়েরাকেও গোলবঞ্চিত করেন ডি গিয়া।  আর্সেনালের জিততে না পারার পেছনে অবশ্য তাদের ভুলও দায়ী কিছুটা। ৭২ মিনিটে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গোল করতে পারেননি মিখিতারিয়ান। নইলে সাবেক ক্লাবের মাঠে ফেরার দিনে ম্যাচের সব আলো কেড়ে নিতে পারতেন তিনিই।      

    পয়েন্ট ভাগাভাগির পর আর্সেনাল প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকায় নেমে গেছে এক ধাপ (৫)। আর ইউনাইটেড আছে ৯ নম্বরে।