• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    কীভাবে ফুটবল খেলতে হয়, চেলসিকে শেখাল সিটি

    কীভাবে ফুটবল খেলতে হয়, চেলসিকে শেখাল সিটি    

    হুট করে ম্যাচের স্কোরলাইন দেখলে ভড়কে যেতে পারেন। ম্যানচেস্টার সিটি ৬-০ চেলসি! কোথাও নিশ্চয় কোনো ভুল হচ্ছে। আজ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে যারা ছিলেন, তারাও নিজ চোখে এমন একটা ম্যাচ দেখার পর কিছুটা ঘোরে থাকার কথা। ছেলেখেলা-টেলা বললে কম হয়ে যায়, গুড়িয়ে-উড়িয়ে দেওয়াও হাস্যকর শোনায়, সিটি আজ চেলসির সঙ্গে যা করল, সেটা আসলে তাদের ফ তে ফুটবল শেখানোর মতোই!

    সিটির জন্য এই ম্যাচটা জিততেই হতো। আগের দিন লিভারপুল জেতায় শীর্ষে ওঠার জন্য জয়টা দরকার ছিল তাদের। সেই জয় তো তিন-চার গোলেও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে গুণে গুণে ছয় গোল? ১৯৯১ সালে যখন চেলসি সর্বশেষ এত বড় ব্যবধানে হেরেছিল, এই সিটির স্টার্লিং, বার্নার্দো সিলভাদের জন্মই হয়নি, কেভিন ডি ব্রুইন তখন কয়েক মাসের শিশু। সেই চেলসি আজ প্রথমার্ধেই খেয়ে বসল চার গোল। আগুয়েরো অবিশ্বাস্যভাবে একটা মিস না করলে আর একটা পোস্টে না লাগলে স্কোরলাইনটা এর চেয়েও অদ্ভুত হতে পারত।

    আগুয়েরোর কথা যখন এলোই, এই ম্যাচটা তো আসলে তাঁরই। শুরুটা অবশ্য ম্যাচের ৪ মিনিটে, বার্নার্দো সিলভার পাসটা চেলসির একজনের গায়ে লেগে দিকবদল করে। দৌড়ে এসে সহজ সুযোগটা মিস করেননি স্টার্লিং। সেটা যদি কিছুটা ভাগ্যপ্রসূত হয়, পরেরটি অবশ্যই নয়। জিনচেঙ্কোর পাস থেকে বল পেয়েছিলেন আগুয়েরো, চেলসির দুই জনের পাশ ঘেঁষে ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত শটটা চেলসি গোলরক্ষক কেপাকে ফাঁকি দিয়ে জড়িয়ে যায় জালে। অথচ তার একটু আগেই কয়েক গজ দূর থেকে ফাঁকা পোস্টে বল রাখতে পারেননি আগুয়রো!

     

    ১৯ মিনিটে চেলসিই সিটিকে উপহার দেয় তিন নম্বর গোল। এবার বার্কলি মতিভ্রমে কেন যেন হেড করতে গিয়ে বলটা ঠেলে দেন বক্সে, আগুয়েরো কি আর মুখে তুলে দেওয়া রসগোল্লা না খেয়ে পারেন? সেই গোলের ঘোর না কাটতেই আরেকটি হয়ে গেল। ২৫ মিনিটের এই গোলে কেপার অবশ্য বেশ কিছুটা দায় আছে। বক্সের কিনার থেকে করা গুন্ডোগানের শটটা হাতে লাগিয়েও ঠেকাতে পারেননি। সিটি এগিয়ে যায় ৪-০ গোলে। এরপর চেলসি একটু ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল, হিগুয়াইন দূর থেকে দুর্দান্ত একটা ভলিও করেছিলেন। কিন্তু এডারসন তার চেয়েও দারুণভাবে সেটি ঠেকিয়ে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ওই ৪-০ গোলেই শেষ হয়েছে প্রথমার্ধ।

    ৫১ মিনিটে আবার এগিয়ে যেতে পারত সিটি, কিন্তু সাত গজ দূর থেকে আগুয়েরোর হেড ফিরে আসে পোস্টে লেগে। তবে হ্যাটট্রিকের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি আগুয়েরোকে। পেনাল্টি বক্সে আজপিলিকুয়েতা স্টার্লিংকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি মাইক ডিন। আগুয়েরোর গোলে এলো প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ১১তম হ্যাটট্রিক, ছুঁয়ে ফেললেন অ্যালান শিয়ারারের রেকর্ড, যেটি একসময় মনে করা হতো সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে।

    এরপর আগুয়েরো আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন, কাজে লাগাতে পারেননি। ষষ্ঠ গোলের জন্য সিটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার জিনচেঙ্কোর লো ক্রসে ৬ গজ দূর থেকে বল জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান স্টার্লিং।

    সিটি আপাতত লিভারপুলের চেয়ে এক ম্যাচ বেশি খেলে শীর্ষে উঠেছে, তবে ক্ষতিটা বেশি হয়েছে চেলসির। দুই দিন আগেও যারা চারে ছিল, তারা এখন ৫০ পয়েন্ট নিয়ে চলে গেছে ছয়ে। মরিজিও সারির দুঃখ সব সারি বেঁধেই এলো আজ!