দাপুটে 'হোয়াইটওয়াশ'
“আমরা কখনোই চিন্তা করিনি ৩-০ ব্যবধানে জিতব, কিন্তু এটা জানতাম যে, যদি পরিকল্পনাগুলোকে ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তবে কয়েকটা ম্যাচ জিততে পারব” । ‘সিরিজ সেরা খেলোয়াড়’-এর পুরস্কার নিতে এসে এরকমটাই বলছিলেন সাকিব আল হাসান । এর থেকে পরিষ্কার, সিরিজটা শুরু হওয়ার আগের ও পরের অবস্থা কতখানি আলাদা বাংলাদেশ দলের জন্য । তলানিতে চলে যাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে টেস্ট সিরিজটার শুরু, বহু প্রাপ্তি ও যথেষ্ট পরিমাণ আত্মবিশ্বাস সংগ্রহের মাধ্যমে যেটার শেষ ।
জয়টা মোটামুটি প্রত্যাশিতই ছিল আজ । তবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের চমৎকার এই ব্যাটিং উইকেটে হাতে ৯ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা যে গুটিয়ে যাবেন চা বিরতির আগেই, এটা বোধ হয় ভাবতে পারেন নি কেউই । বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে তাঁদের যথেষ্ট ভালো ব্যাটিং প্রদর্শনীর পর । আরও একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে, পুরো ইনিংসটায় সাকিব কিন্তু ছিলেন উইকেটশূন্য ।
৮৫ তম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে শিঙ্গি মাসাকাদজা ও মুশাঙওয়েকে শফিউল ফিরিয়ে দিলে উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম । দর্শকদের রক্ত হিম করা গর্জনে কান পাতা দায় হয়ে গিয়েছিল সে সময়টায় । তবে মুশফিক বাহিনীর মধ্যে কিন্তু উল্লাসের চেয়ে স্বস্তিটাই চোখে পড়ল বেশি । আর হবে না-ই বা কেন ? গত ১০টা মাসে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার মত পরিবেশই তো পান নি তাঁরা ।
সকালে ১ উইকেটে ৭১ রান নিয়ে দিন শুরু করে কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যাচে দ্বিতীয়বারের মত অর্ধ-শতক তুলে নেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজা । তবে জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানদের আচরণ দেখে বোঝা যাচ্ছিল না, তাঁদের লক্ষ্যটা কি । স্বাভাবিক ক্রিকেট বোধ থেকে বলা যায়, জিম্বাবুয়ে যে অবস্থায় ছিল, সেখান থেকে বিশ্বসেরা দলটিও চেষ্টা করবে, কোনভাবে ম্যাচটাকে বাঁচাতে । টেইলর বাহিনী কি ৪৪৯ রানের পাহাড়টা টপকানোর উদ্দেশ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন আজ ?
নইলে কেন প্রতিটা বলকেই মারার প্রবণতা দেখা যাবে রাজার মধ্যে ? কেনইবা পুরো টেস্ট সিরিজে অসাধারণ টেস্ট মেজাজের পরিচয় দিয়ে যাওয়া হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ওভাবে রিভার্স সুইপ করে বসবেন শুভাগত হোমের বলটাকে ? বলটা তাঁর গ্লাভসে লেগে মুশফিকের সহজ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে মাসাকাদজার সংগ্রহ ছিল ৩৮ । পাঁচ ওভারের ব্যবধানে শুভাগতরই একটা ফুল টস বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে তাইজুলের হাতে ধরা পড়েন আত্মহত্যা প্রবণ সিকান্দার রাজা ।