• ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    ইংল্যান্ডের ৪-০তে পাকিস্তানের ০-১০

    ইংল্যান্ডের ৪-০তে পাকিস্তানের ০-১০    

    পঞ্চম ওয়ানডে, হেডিংলি
    ইংল্যান্ড ৩৫১/৯, ৫০ ওভার 
    পাকিস্তান ২৯৭ অল-আউট, ৪৬.৫ ওভার 
    ইংল্যান্ড ৫৪ রানে জয়ী ও সিরিজ ৪-০তে জয়ী 


    আরেকটি ওয়ানডে, ইংল্যান্ডের আরেকটি ৩৪০-পেরুনো ইনিংস। এরপর ক্রিস ওকসের পাঁচ উইকেট। ফল- ৪-০তে সিরিজ জয় ইংল্যান্ডের, আর টানা ১০ম ম্যাচে হার পাকিস্তানের। এ নিয়ে টানা ১১টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ অপরাজিত থাকল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড যাচ্ছে তাই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকেই, আর পাকিস্তানকে খুঁজতে হবে হারা ম্যাচ থেকে ইতিবাচক দিক। যার একটা অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের পাঁচে নেমে ৮০ বলে ৯৭ রানের ইনিংস। এর আগে শাহিন শাহ আফ্রিদি নিয়েছিলেন ৪ উইকেট, তবে ইংল্যান্ডকে আটকাতে পারেননি তারা। 

    হেডিংলিতে আগে ব্যাটিং করা ইংল্যান্ডের রান পেয়েছেন জো রুট, অইন মরগানরা। শুরুতে জেমস ভিনস ও জনি বেইরস্টোর ৬৩ রানের ওপেনিং জুটি ভেঙেছিলেন আফ্রিদি, ভিনস করেছেন ৩২ বলে ৩৩ রান। বেইরস্টো ফিরেছেন ইমাদ ওয়াসিমের বলে, ২১ বলে ৩২ রান করে। রুট-মরগানের জুটিতে এরপর উঠেছে ১১৭ রান। 

    ৩৭ বলে ফিফটি করেছিলেন রুট, মরগান সেটা ছুঁয়েছিলেন ৪৩ বলে। তবে সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি দুজনের কারোরই। আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মরগান করেছেন ৬৪ বলে ৭৬, ৭৩ বলে ৮৪ করে মোহাম্মদ হাসনাইনের বলে ক্যাচ দিয়েছেন রুট। 

    এ সময় একটা ছোটখাট ধস নেমেছে ইংল্যান্ড ইনিংসে, ৭৩ রানের ব্যবধানে তারা হারিয়েছে ৫ উইকেট। ইনিংস বড় করতে পারেননি বেন স্টোকস, জস বাটলাররা, মইন আলি শূন্যতে ফেরার পর ডেভিড উইলি ও ক্রিস ওকসও ফিরেছেন ২০-এর আগেই। সে সময় ইংল্যান্ডকে বেশ আগেভাগেই বেঁধে ফেলার একটা সম্ভাবনা তৈরি করেছিল পাকিস্তান। ইমাদ ওয়াসিম এ সময় নিয়েছেন দুই উইকেট। 

     

     

    তবে টম কারানের ১৫ বলে ২৯ রানের ইনিংসে উড়ান পেয়েছে ইংল্যান্ড, ছুঁয়ে ফেলেছে ৩৫০। শেষ ৪ ওভারে ইংল্যান্ড তুলেছে ৪১ রান। আফ্রিদি ৪ উইকেট নিলেও গুণেছেন ৮২ রান, পেসারদের তুলনায় বেশ আঁটসাঁট বোলিং করেছেন পাকিস্তান স্পিনাররা, এমনকি বাঁহাতি অর্থোডক্সে ফাখার জামান দিয়েছেন ৪ ওভারে ২৩ রান। ওয়াসিম ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫৩ রানে। 

    ছবি/পিসিএ

    এর আগে তিন ম্যাচে যথাক্রমে ৩৬১, ৩৫৮ ও ৩৪০ রান করেও জিততে পারেনি পাকিস্তান, টানা দশম হার এড়াতে তাদের করতে হতো এবার ৩৫২। ক্রিস ওকসের তোপে পড়ে সেটা পরিণত হলো বেশ দুরাশাতে। ৬ রানেই তারা হারালো ৩ উইকেট, ৩টিই নিলেন ওকস। আবিদ আলি ও মোহাম্মদ হাফিজের বিপক্ষে দুটি এলবিডব্লিউ অবশ্য বিপক্ষে গেছে তাদের, আর ফাখার ক্যাচ দিয়েছেন রুটের হাতে। 

    পাকিস্তানের সেই ধস সামাল দিয়েছেন বাবর আজম ও সরফরাজ। দুজনের শেষ হয়েছে দারুণ দুই রান-আউটে, যার অংশ ছিলেন আদিল রশিদ ও বাটলার। সরফরাজ ফ্লিক করেছিলেন, তার রানের কল শুনে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন বাবর। তবে ছুটন্ত বাটলারকে দেখে রানটা আর নিতে চাননি সরফরাজ, ফেরার সময় পাননি বাবর। বাটলারের থ্রো ধরে স্পিন করে উইকেটের দিকে না তাকিয়েই ভেঙেছেন রশিদ। বাবর-সরফরাজের জুটি ছিল ১৪৬ রানের, বাবর করেছেন ৮৩ বলে ৮০। 

    সরফরাজ কাট করেছিলেন থার্ডম্যানে, অথবা ভেবেছিলেন সেরকমই। তবে পা বাড়িয়ে সে শটটা আটকে দিয়েছেন বাটলার, এরপর আরেক পায়ে লাগার পর সেটা ধরে ভেঙেছেন স্টাম্প। রানের জন্য দৌড় শুরু করা সরফরাজ ফিরতে পারেননি, এই ইনিংস প্রায় তিন বছরের মধ্যে তার সর্বোচ্চ। এ দুজনের মাঝে ফিরেছেন শোয়েব মালিক, সেটিও রশিদের বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে নেওয়া দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে। 

    পাকিস্তানের পরের ৫ ব্যাটসম্যানই ছুঁয়েছেন দুই অঙ্ক, তবে ইংল্যান্ডকে আর চ্যালেঞ্জ জানানো হয়নি তাদের। ওয়াসিমের পর হাসান আলির উইকেট দিয়ে পাঁচ পূর্ণ করেছেন ওকস, শেষ পর্যন্ত খরচ করেছেন ৫৪ রান, হয়েছেন ম্যাচসেরাও। 

    বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের একাদশে কেন তাকেই একমাত্র ‘স্থায়ী’ পেসার ভাবা হচ্ছে, দেখিয়েছেন সেটাও। তবে চূড়ান্ত স্কোয়াড ঠিক করবার যে কাজ প্রধান নির্বাচক এড স্মিথের, সেটা এই সিরিজের পর আরও কঠিন হয়ে গেছে, সেটা নিশ্চিতই।