• ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯
  • " />

     

    গির্জার কর্মকর্তা যখন বিশ্বকাপের ম্যাচের স্কোরার!

    গির্জার কর্মকর্তা যখন বিশ্বকাপের ম্যাচের স্কোরার!    

    অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচের টস হতে আর অল্প কিছুক্ষণ বাকি। টন্টনের ম্যাচে আয়োজকরা সেই মুহূর্তে জানতে পারলেন, ম্যাচের একজন স্কোরার মাঠে আসতে পারবেন না। এমন খবরে আয়োজকদের তো মাথায় হাত! তাহলে কীভাবে হবে বিশ্বকাপের ম্যাচের স্কোরিং? সবার যখন দুশ্চিন্তার শেষ নেই, সমারসেটের প্রধান অপারেটিং অফিসার স্যালি ডনোগের মাথায় তখন এলো একজনের নাম। জেমস এমারসন নামের সেই ব্যক্তি গির্জার কর্মকর্তা হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে দিয়েই করানো হয়েছে গতকালের ম্যাচের স্কোরিং!

    কিথ গেরিসের সাথে আরেকজন স্কোরারের কালকের ম্যাচে স্কোরিং করার কথা ছিল। কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগে যখন তাকে ফোন করা হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে, তিনি অবাক হয়ে জানান, তাকে নাকি আগে বলাই হয়নি এই ম্যাচে স্কোরিং করার কথা! তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় টন্টনের মাঠে আসতে পারবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।

    এমন বিপদে আইসিসির সাহায্যে এগিয়ে আসেন সমারসেটের প্রধান অপারেটিং অফিসার ডনোগ। তিনি জানান, এমারসন নামের একজন আছেন যিনি স্কোরিং এর কাজটা চালিয়ে নিতে পারবেন। তড়িঘড়ি করে ডাকা হয় এমারসনকে, তিনি ইংল্যান্ডের একটি গির্জায় কাজ করেন, ম্যাচের সময় কাজ করেন প্রেসবক্সেও। আইসিসির সবাই একটু অবাক হলেও স্থানীয়রা কিন্তু এই সিদ্ধান্তে অবাক হননি।

    কিন্তু গির্জার একজন কর্মকর্তা কীভাবে বিশ্বকাপের ম্যাচে স্কোরিং করবেন? আসলে স্কোরিংয়ের এই অভিজ্ঞতা এমারসনের আগেও হয়েছে। প্রেসবক্সে অনেকদিন ধরেই স্কোরিং করে আসছিলেন তিনি। তাঁর ক্রিকেট জ্ঞান ও নিখুঁত স্কোরিংয়ের কারণে প্রেসবক্সে বেশ জনপ্রিয় তিনি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে দুটি টেস্ট ও একটি ওয়ানডেতে তাঁর স্কোরিংয়ের অভিজ্ঞতাও আছে! সেবারও নিয়মিত স্কোরার কাউন্টি ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তাঁর পরিবর্তে এমারসনকে এই দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল।  

    পেশাদার স্কোরার না হলেও নিজের এই দায়িত্বটা কিন্তু নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথেই পালন করেন এমারসন। এক টেস্টে তো পাশের স্কোরার তাঁর ওপর বমিও করে দিয়েছিলেন। এরপরও তিনি মিস করেননি একটি বলও!

    সেবারের মতো গতকালও দারুণভাবে স্কোরিং করেছেন এমারসন। একই সাথে মিডিয়া বিভাগেও সাহায্য করে গেছেন নানা তথ্য দিয়ে। ডনোগ এমারসনের এমন কাজে দারুণ খুশি, ‘কঠিন মুহূর্তে তিনি অবিশ্বাস্যভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একদম শেষ মুহূর্তে আমরা তাকে স্কোরিং করতে বলেছিলাম। তিনি খুব ধীরস্থিরভাবে কাজ করেছে, প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগও করেছেন!’

    এমারসন বলছেন, বিশ্বকাপে স্কোরিং করতে পেরে গর্বিত তিনি, ‘আমি খুব উপভোগ করেছি কাজটা। বিশ্বকাপের মতো ম্যাচে এমন দায়িত্ব পালন করতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার। আশা করি সবাই আমার কাজে সন্তুষ্ট।’