• " />

     

    অলকের ঝলকে কুমিল্লার শিরোপা

    অলকের ঝলকে কুমিল্লার শিরোপা    

    সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
    বরিশাল বুলস - ১৫৬/৪ (২০ ওভার)
    কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস - ১৫৭/৭ (২০ ওভার)

     

    পুরোনো সেই কব্জির মোচড়, সেই ফ্লিক! দশ বছর আগের ঝলক যেনো দেখালেন অলক! পরপর দু'বলে স্টিভেনস আর মাশরাফি যখন ফেরত গেলেন প্যাভিলিয়নে, ১০ বলে ২৩ রানকেই তখন মনে হচ্ছিলো পাহাড়সম উচ্চতা! কুপারের পরের বলও ব্যাটে লাগাতে পারেননি; কিন্তু এরপরই মিরপুর স্টেডিয়াম দেখলো 'অলক ম্যাজিক'! সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট উপকথায় ঢুকে যাওয়া এক ইনিংস খেলে শেষ নয় বলে ঠান্ডা মাথায় ফাইন্যাল ম্যাচ বের করে আনলেন কব্জি দিয়েই। দারুণ চাপের মুখে ২৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রানের এক ইনিংস খেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে শেষ বলে শিরোপা এনে দিলেন বিপিএল-র নিলামে প্রথমে দল না পাওয়া অলক কাপালি!  আর, মাশরাফি বিন মর্তুজাও টানা তৃতীয়বার হাতে নিলেন বিপিএল শিরোপা!

     

     

    বিপিএল-এর তৃতীয় আসরের ফাইন্যালে টসে জিতে বরিশাল বুলসকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক মাশরাফি! ১৯ বলে ৩৩ রান করে সেকুগে প্রসন্ন শুরুতে ঝড় তুললেও মেহেদি-সাব্বির সমর্থন দিয়ে যেতে পারেননি তাকে। একাদশ ওভারে ৬৮ রানে ৩ উইকেট পতনের পর ইনিংসের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ ওভারে কুলাসেকারার বলে রিয়াদ (৩৬ বলে ৪৮ রান) বোল্ড হওয়ার আগে এই জুটি স্কোরবোর্ডে জমা করেন ৫৬ বলে ৮১ রান। নাফিস অপরাজিত থাকেন ৩১ বলে ৪৪ রান করে।  এই আসরে নবাগত কুমিল্লার দলটির সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৫৭ রানের। 

     

    জবাবে শুরুতে লিটনকে হারালেও চার-ছক্কায় স্টেডিয়ামভর্তি দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন ইমরুল কায়েস আর আহমেদ শেহজাদ! কুমিল্লার সমর্থকরা যখন সহজ জয়ের সুবাস পাচ্ছিলেন, তখনই বরিশাল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জোড়া আঘাতে সাজঘরে ফিরেন শেহজাদ (২৪ বলে ৩০ রান) আর কায়েস (৩৭ বলে ৫৩ রান)। এরপর নিয়মিত বিরতিতে জাইদি, স্টিভেনস আর মাশরাফিও আউট হলে ম্যাচ হেলে পড়ে বরিশাল বুলসের দিকে। আর, তখনই দেখা গেলো কাপালির বুড়ো হাড়ের ভেল্কি। প্রথমে দারুণ দুই ফ্লিকে কেভন কুপারকে স্কয়ার লেগ দিয়ে সীমানাছাড়া করেন ১৯-তম ওভারের শেষ দুই বলে। আর শেষ ওভারের প্রথম বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে শুভাগত হোম প্যাভিলিয়নে ফিরলে ম্যাচ আবারো দুলতে থাকে দু'দলের মাঝামাঝি। এরপর মোহাম্মদ সামির করা ওভারটির তৃতীয় ও চতুর্থ বলে আবারো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ কুমিল্লার পক্ষেই নিয়ে আসেন কাপালি। শেষ দুই বলে তিন রান অনেকটা ফাইন্যালের উত্তেজনা আরো ভালো করে গায়ে মাখানোর রসদই ছিলো কেবল। কাপালি সেই দায়িত্বও ঠান্ডা মাথায় পালন করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে প্রথমবার অংশগ্রহণেই শিরোপার স্বাদ এনে দেন।  

     

    দারুণ এই ইনিংসের জন্য 'ম্যান অফ দ্য ম্যাচ' হয়েছেন কাপালি; আর টুর্ণামেন্ট জুড়ে ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে 'ম্যান অফ দ্য টুর্ণামেন্ট' হয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের আসার জাইদি।