• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    কিক অফের আগে: ভুটানের বিপক্ষে শুধুই কি র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি লক্ষ্য বাংলাদেশের?

    কিক অফের আগে: ভুটানের বিপক্ষে শুধুই কি র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি লক্ষ্য বাংলাদেশের?    

    বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে এবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কাতার ও ভারত। অক্টোবরের ১০ তারিখ ঘরের মাঠে কাতার ও এর পাঁচদিন পর কলকাতায় ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ দুইটি ম্যাচের আগে বাংলাদেশ প্রীতি ম্যাচ খেলছে দুইটি। দুটোই ভুটানের বিপক্ষে। 

    কবে, কখন 
    বাংলাদেশ-ভুটান 
    প্রীতি ম্যাচ 
    বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, সন্ধ্যা ৭টা 

    বাংলাদেশ 
    আফগানিস্তানের সঙ্গে গ্রুপের প্রথম ম্যাচের পরপরই কোচ জেমি ডে বাফুফের কাছে নিজের চাহিদার কথা জানিয়েছিলেন প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যাপারে। সম্ভাব্য দলগুলোর ভেতর ছিল ভুটানও। আপাতত ভুটান বাংলাদেশের চেয়ে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে আছে দুই ধাপ। বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৭। আফগানদের কাছে হারের পর পিছিয়েছে বাংলাদেশ। জেমি ডের দলের জন্য প্রস্তুতি ম্যাচই, কিন্তু আড়ালে আছে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি করার ভাবনাও, "ওরা বিশ্বকাপ বাছাই খেলছে না। তবে আমাদের চেয়ে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে আছে। ওদেরকে হারিয়ে র‍্যাংকিংয়ে পয়েন্ট পাওয়ার একটা ভালো সুযোগও এটা।"  

    "আমি অনুশীলনের চেয়ে ম্যাচ খেলতে পছন্দ করি। আমার মনে হয় খেলোয়াড়েরাও সেটাই চায়।"

    ম্যাচের আগেরদিন বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি করার ইচ্ছাটা সরাসরিই জানিয়েছেন  বাংলাদেশ কোচ। তবে আসলে আত্মবিশ্বাসটাও ফেরত পাইতে চাইছেন তিনি। গ্রুপ 'ই'-তে বাংলাদেশই সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ। এখান থেকে খালি হাতে ফেরার সম্ভাবনাও প্রবল। মনোবল চাঙ্গা রাখতেও তাই ভুটানের মতো প্রতিপক্ষ দরকার ছিল বাংলাদেশের। 

    এই দুইটি প্রীতি ম্যাচের ওপর নির্ভর করেই বাংলাদেশ কোচ একাদশ বাছাই করবেন কাতারের বিপক্ষে। দলের সবাইকে তাই  ভুটানের বিপক্ষেও সেরাটা দেওয়ার তাগাদা দিয়ে রেখেছেন তিনি, "আমি ছেলেদের বলেছি, নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। ওরা যদি এই দুই ম্যাচে পারফর্ম করে তাহলে কাতারের বিপক্ষে একাদশে থাকবে, পারফর্ম না করতে পারলে সুযোগ হবে না।"  

    জেমি ডের অধীনে গোল পেতে ধুঁকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। গোলের জন্য মূলত সেটপিস ও লং থ্রো এর নির্ভরশীল জামাল ভুঁইয়ারা। প্রতিপক্ষ বেশিরভাগ সময়ই বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী হওয়ায় কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবলে অবশ্য সাফল্যও পেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু এই প্রতিপক্ষ তো ভুটান। বাংলাদেশ কোচ বলছেন হুট করে পুরো ছক বদলে ফেলছেন না তিনি, কারণ তার লক্ষ্য কাতার ও ভারত ম্যাচ, "আমরা হয়ত বল একটু বেশি পাব এবার। আমি আশা করব আমরা আরেকটি নিখুঁত পাসিং করতে পারব আগামীকাল। এখন বাকিটা খেলোয়াড়দের ওপর। তবে আমি এখনই আমূল পরিবর্তন আনব না কৌশলে। যেহেতু কাতারের ম্যাচটা সামনেই।" 

    "আমরা আরেকটু ফুটবল খেলতে চাই। হয়ত আমরা বল পায়ে এবার সময়ও বেশি পাব। সুযোগ তৈরি করতে চাই আরও বেশি। যেমনটা অধিনায়ক চাইছে যে সুযোগ তৈরি করে দলের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো আমিও সেটাই চাই।"

    অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়াও কথা বলছেন একই সুরে। জয়টাই মুখ্য তার কাছে। কাতারের মুখোমুখি হওয়ার আগে দলে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি চাইছেন না কেউই। কাতার আর ভারতের মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তো বাংলাদেশের ভরসা ওটুকুই। 

    ভুটান 
    বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নেই ভুটান। বাংলাদেশে তারা এসেছে মূলত সাফ অনুর্ধ্ব-২৩ দলের প্রস্তুতিকে সামনে রেখে। দলেও তাই তরুণদের আধিক্য। ভুটান কোচ জানিয়েছেন দলের ১০-১১ জন খেলোয়াড়রাই অনুর্ধ্ব-২৩ দলের। তবে দলের অধিনায়ক চেনচো গিলতশেন আছেন দলে। ভুটান ফুটবলের পোস্টার বয়ও ২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।

    বাংলাদেশ আর বাংলাদেশের ফুটবল তার কাছে অপরিচিত নয়। গতবার সাফে এই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই বাংলাদেশের কাছে তার দল হেরেছিল ২-০ ব্যবধানে। সেই স্মৃতি অবশ্য মনে করতে চান না চেনচো, বাংলাদেশকে হারানোর প্রত্যয় নিয়েই এসেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

    গত মৌসুমে চেনচো খেলেছেন ভারতের ক্লাব বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে। আপাতত কোনো ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি নেই তার। তাহলে বাংলাদেশেের কোনো ক্লাবে কেন নয়? সংবাদসম্মেলনে প্রশ্ন শুনে চেনচো হেসেছেন, জানিয়েছেন কেউ যোগাযোগ করলে হয়ত খেলতেও পারেন বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের হয়ে। চেনচো ছাড়াও আর একজন আছেন ভুটান দলে যিনি ক্লাবের হয়ে ফুটবল খেলেন দেশের বাইরে। লেন্দুপ দর্জি। 

    দলের খবর 
    বাংলাদেশের প্রাথমিক স্কোয়াডে ২৬ জন খেলোয়াড় থাকলেও ২৩ জন নিয়ে শুরু করতে হবে ডে কে। ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা ছুটিতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়েছেন। তাই দল থেকেই বাদ পড়ছেন তিনি। মাশুক মিয়া জনিও ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন। নতুন করে দলে ডাকা হয়েছে ঢাকা আবাহনীর রায়হান হাসানকে।  

    হেড টু হেড
    সবশেষ ৫ দেখায় বাংলাদেশ জিতেছে তিনবার। এক ম্যাচ ড্র। আর কুখ্যাত সেই হার ২০১৬ সালে। যে হারের পর বাংলাদেশকে প্রায় দুই বছর নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল ফুটবল থেকে।