• লা লিগা
  • " />

     

    সমানে সমান লড়াইয়ে মাদ্রিদে জিতল না কেউই

    সমানে সমান লড়াইয়ে মাদ্রিদে জিতল না কেউই    

    লা লিগা

    ফলাফল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ০-০ রিয়াল মাদ্রিদ


    লা লিগা টেবিলের শীর্ষে দু'দলের ব্যবধানটা মাত্র এক পয়েন্টের। স্প্যানিশ শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ এবং রিয়াল মাদ্রিদের লড়াইটাও হয়েছে সমানে সমান। গোল করার চেয়ে গোল না খাওয়ার দিকেই যেন মনযোগ ছিল দু'দলের। অ্যাটলেটিকো বা রিয়াল- হারতে চায়নি কেউই, শেষ পর্যন্ত হয়েছে তাই। ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে গোলশূন্য ড্র হয়েছে মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি।

    অ্যাটলেটিকোর সাথে ড্রয়ে ৭ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রিয়াল। অ্যাথলেটিক বিলবাও, ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় ২০১৯-২০ লা লিগায় একমাত্র অপরাজিত দল এখন রিয়ালই। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রানাদার চেয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় তিন-এ থাকল অ্যাটলেটিকো। ড্র নিয়ে ফেরায় হয়তো কিছুটা হতাশই হতে পারে রিয়াল। পুরো ম্যাচে ডিয়েগো সিমিওনের দলকে নিজেদের গোলে একবারও শট নিতে দেননি সার্জিও রামোসরা। গোলের সেরা সুযোগগুলো পেয়েছিল রিয়ালই। কিন্তু জিনেদিন জিদানের দল এবং জয়ের মাঝে রীতিমত দুর্ভেদ্য দেয়ালই হিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক।

    ৭৫ মিনিটে নাচো ফার্নান্দেজের ক্রস থেকে করিম বেনজেমার হেড অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। অবশ্য জিততে না পারায় নিজেদের ফিনিশিংকেও দুষতে পারেন জিদান। ৫৭ মিনিটে আবারও সেই নাচোর মাইনাসে ডিবক্সে জায়গা পেয়েও শট গোলে রাখতে পারেননি বেল। তবে ম্যাচের প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল স্বাগতিকরাই।

     

    "মাদ্রিদ ডার্বিতে স্বাগতম!"

    -হোয়াও ফেলিক্সকে সার্জিও রামোস

     

    ৮ মিনিটে ডিয়েগো কস্তার পাসে নিজের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বিতে অ্যাটলেটিকোকে লিড এনে দিতে পারতেন হোয়াও ফেলিক্স। কিন্তু তার শট চলে যায় গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে। প্রথমার্ধে সময় যত গড়িয়েছে, গোল করার চেয়ে মাঝমাঠের দখল নিজেদের করে নেওয়ার দিকে দু’দলেরই ঝোঁক বেড়েছে তত বেশি। ম্যাচের মত মাঝমাঠে ক্রুস-কাসেমিরো এবং কোকে-থমাসদের লড়াইটাও ছিল সমানে সমান। প্রথমার্ধে নিজেদের প্রথম সুযোগ পেতে তাই রিয়ালকে অপেক্ষা করতে হয়েছে একেবারে শেষ পর্যন্ত। অ্যাটলেটিকোর জমাট রক্ষণ ছোট ছোট পাসে ভাঙতে না পেরে দূরপাল্লার শটেই আশ্রয় নেয় রিয়াল। কিন্তু সেখানেও বাধ সাধেন ওবলাক।

    ৩৮ এবং ৪০ মিনিটে প্রথমার্ধে রিয়ালের সেরা ফুটবলার টনি ক্রুসের দুটি মাপা শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়েছেন স্লোভেনিয়ান গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে ক্রুসের মত নজর কেড়েছেন নাচোও। মার্সেলো-মেন্ডির অনুপস্থিতিতে লেফটব্যাক পজিশনে আক্রমণ এবং রক্ষণ- দু’দিকেই ছিলেন দুর্দান্ত। ম্যাচে রিয়ালের দুটি সেরা সুযোগও তৈরি করেছেন তিনিই। নাচো নজর কাড়লেও কিছুটা নড়বড়েই মনে হয়েছে প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি খেলতে নামা এডেন হ্যাজার্ডকে। পুরো ম্যাচে তার স্বভাবসুলভ ড্রিবলিংয়ের দেখা মেলেনি একেবারেই। তাকে মার্কিংয়ের কাজটা দক্ষতার সাথেই করেছেন অ্যাটলেটিকোর ইংলিশ ফুলব্যাক কিয়েরন ট্রিপিয়ের। পুরো ম্যাচে রিয়ালের জালে শট নিতে পারেনি অ্যাটলেটিকো। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে অ্যাটলেটিকোর সেরা সুযোগটা তৈরি করেছিলেন ট্রিপিয়েরই।

     

    বল দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত কারভাহাল এবং কোকে

     

    ৭২ মিনিটে তার মাপা কর্নারে রামোস-বেনজেমার ওপরে লাফিয়ে হেড করেন সল নিগুয়েজ। রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া নড়ার সুযোগ না পেলেও সলের হেড চলে যায় গোলের সামান্য ওপর দিয়ে। প্রথমদিকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দল সাজানো সিমিওনে শেষদিকে খেলেছেন কিছুটা রক্ষণাত্মক। আবার জিদানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ছিল উল্টো। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের আশায় হামেস রদ্রিগেজ, লুকা মদ্রিচ এবং লুকা ইয়োভিচকে নামিয়ে দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত অ্যাটলেটিকো রক্ষণদুর্গ ভেদ করা হয়নি।

    ফরোয়ার্ডদের কিছুটা নিষ্প্রভ থাকার দিনে রক্ষণ নিয়ে উচ্ছ্বসিতই হতে পারেন জিদান। বিশেষ করে রাফায়েল ভারান এবং নাচো ছিলেন দুর্দান্ত। সেভিয়া, ওসাসুনার পর এবার অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষেও ক্লিনশিট রাখল জিদানের দল। এই তিন ম্যাচে গোলে একটি শটেরও মুখোমুখি হতে হয়নি কর্তোয়া বা আরিওলাকে। রক্ষণ দুশ্চিন্তা কাটিয়ে উঠেছে রিয়াল। গোলমুখে বেল-হ্যাজার্ডদের স্বরূপে ফেরানোই হয়তো ম্যানেজার জিদানের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ।