পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলেন 'ফ্রিক' স্মিথ
পাকিস্তান ২০ ওভারে ১৫০/৬
অস্ট্রেলিয়া ১৮.৩ ওভারে ১৫১/৩
ফলঃ অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী
বাবর আজমের ব্যাটিং দেখে মাইকেল ভন টুইট করেছিলেন, কবিতা বুঝি এরকমই হয়। স্টিভ স্মিথের ব্যাটিংকে ঠিক কবিতা বলা কঠিন।ভন অবশ্য ‘ফ্রিক’ শব্দটা ব্যবহার করলেন, স্মিথের জন্য এর চেয়ে যুৎসই শব্দ খুঁজে পাওয়া কঠিন। অ্যাশেজে এই বছর নিজেকে অতিমানবের উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, সেই ফর্মের কিছুটা টেনে নিয়ে এসেছেন টি-টোয়েন্টিতে। বলতে গেলে তার কাছেই তো হেরে গেল পাকিস্তান!
যদিও আপনি বলতে পারেন রানটা একটু কমই হয়ে গিয়েছিল। ক্যানবেরায় ফ্লাডলাইটের ম্যাচে ১৫১ রান আসলে খুব বেশি নয়। সেটা আরও কম মনে করালেন স্মিথ। দেড় ওভার আর সাত উইকেট হাতে রেখে অস্ট্রেলিয়ার এগিয়ে যেতে তাই খুব একটা সমস্যা হয়নি।
শ্রীলংকা সিরিজে বাকি কাউকে তেমন বেশি কিছু করার সুযোগ দেননি ওয়ার্নার, তাকে আউটই করা যায়নি। বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ফিঞ্চ খেলছিলেন দারুণ। আজ দুজনের কেউই তেমন বড় কিছু করতে পারলেন না। ওয়ার্নার অবশ্য শুরুটা ঝড়োই করেছিলেন, ইমাদ ওয়াসিমের এক ওভার থেকেই নিলেন ১৬ রান। তিন ওভারের মধ্যে ৩০ রানও উঠে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার। এর পরেই আমিরের লেংথ বলে বোল্ড হয়ে গেলেন ১১ বলে ২০ রান করে। ফিঞ্চ অবশ্য আরও কিছুক্ষণ ছিলেন, শেষ পর্যন্ত ১৪ বলে ১৭ রান করে আউট হয়ে গেলেন ইরফানের বলে।
স্মিথ শুরুটা করেছিলেন আমিরের প্রায় গুড লেংথের একটা বল ব্যাকওয়ার্ড স্কয়্যারের ওপর পুল করে ছয় মেরে। গিয়ার বাড়ানো শুরু করলেন অষ্টম ওভারে ইরফানের বলে দুই চার মেরে। অস্ট্রেলিয়ার রান রেট অবশ্য ভালোই ছিল, স্মিথের তাই তাড়াহুড়ো দরকার ছিল না। মিড উইকেট দিয়ে অবিশ্বাস্য এক শটে সেই ফিফটি চলে এলো ৩৬ বলে। এর পরেই ঠিক করলেন, মানুকা ওভালকে স্তম্ভিত করে দেবেন দারুণ কিছু শটে। আমিরকে এক ওভারে যে তিন চার মারলেন, প্রতিটি শটই চোখে লেগে থাকার মতো। পরের ওভারে ওয়াহাবকে মারলেন আরও দুই চার। ৫১ বলে ৮০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন, অর্ধেকেরও বেশি রান করেছেন একাই!
স্মিথের মতো ওয়ান ম্যান শো না হলেও পাকিস্তানের ইনিংসটা দাঁড়িয়ে ছিল দুজন ব্যাটসম্যানের ওপর। বাবর আরও একবার প্রমাণ করেছেন, কেন তিনি টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটসম্যান। ফাখার জামান ২ রানেই আউট হয়ে গেছেন কামিন্সের বলে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়ে। রিচার্ডসনকে পুল করতে গিয়ে উল্টো ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন হারিস সোহেল। মোহাম্মদ রিজওয়ান কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছিলেন বাবরকে, ফিরেছেন ১৪ রানে। এরপর আসিফ আলীও ফিরে গেলে ৭০ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
বাবর ৩৮ বলে এরপর পেয়েছেন ফিফটি, কিন্তু সেই বলেই দুই রান নিতে গিয়ে ওয়ার্নারের অবিশ্বাস্য থ্রোতে হয়েছেন রান আউট। পাকিস্তানের তখন ১৩০ নিয়েই সংশয়। তবে ইফতেখার আহমেদ সাতে নেমে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন তার আরও ওপরে ব্যাট করা উচিত। ৩৪ বলে ৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন, পাকিস্তানের ইনিংসের তিনটি ছয় এসেছে তার ব্যাট থেকেই। শেষ পর্যন্ত ১৫০ রানের পুঁজিটা যথেষ্ট হয়নি যদিও।