• বাংলাদেশের ভারত সফর
  • " />

     

    নেট সেশন : বাংলাদেশের 'দ্বিতীয় ম্যাচ পয়েন্ট'

    নেট সেশন : বাংলাদেশের 'দ্বিতীয় ম্যাচ পয়েন্ট'    

    টি-টোয়েন্টি সিরিজ, ২য় ম্যাচ
    ভারত-বাংলাদেশ

    কবে, কখন
    ১০ নভেম্বর, ২০১৯ 
    বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ (১৯৩০)


    ভাবুন একবার, ভারতের মাটিতে গিয়ে তাদেরকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সেসবের অস্তিত্ব এখনও ভাবনার ডালপালায়। এখনও ঘটেনি, ব্যাপারটা আদৌ ঘটবে কিনা তাও ঝুলছে সম্ভাবনার পেন্ডুলামে। নাগপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি কার্যত এখন ফাইনাল, রাজকোটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? 

    ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারটি আগের ম্যাচে ছিল ভারতের ওপর। দিল্লীতে হেরে যাওয়া ভারত সেখানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দারুণভাবে। ব্যাটিং ট্র্যাকে পর্যাপ্ত রান তুলতে না পেরে হিটম্যান রোহিত শর্মার কবলে পড়েছিল বাংলাদেশ, তাতেই তারা হারিয়ে ফেলেছে ‘প্রথম ম্যাচ পয়েন্ট’টি। এবার বাংলাদেশের সামনে আরেকটি ম্যাচ পয়েন্টের সুযোগ। অবশ্য ‘ম্যাচ পয়েন্ট’ তো ভারতেরও! 

    দিল্লীর ধীরগতির টার্নিং উইকেটে বাংলাদেশ বোলাররা ছিলেন দারুণ কার্যকর, রাজকোটের ব্যাটিং উইকেটে তারা সুবিধা করতে পারেননি অনুমিতভাবেই। রানতাড়ার চাপ ভারতকে বুঝতেই দেননি রোহিত। অবশ্য বোলারদের আগে দায়টা বেশি ছিল বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের ওপর, সুযোগ পেয়েও খেই হারিয়েছে তারা বড় স্কোর গড়ার পথে। 

    বাংলাদেশকে আশা জোগাতে পারেন নাগপুরের উইকেটের রেকর্ড। যে রেকর্ড বলছে, খুব একটা রান-প্রসবা নয় এটি। কার্যকর ভূমিকায় তাই আবার দেখা যেতে পারে স্পিনারদের, অথবা আঁটসাঁট বোলিং করা পেসারদের। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বা আফিফ হোসেনদের সঙ্গে তাই বাড়তি একজন স্পিনার খেলানোর কথা কি ভাববে বাংলাদেশ? 

    স্পিনারদের সঙ্গে এমন উইকেটে কার্যকর হয়ে উঠতে পারেন মোস্তাফিজুর রহমানও। খুব একটা সুবিধার সময় যাচ্ছে না তার, বাংলাদেশের দারুণ প্রয়োজনের সময়ে জ্বলে উঠতে পারবেন তিনি?  

    চাইলে এমন অনেক প্রশ্নই হাজির করা যায় সামনে। সেসবের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হবে অবশ্যই। ব্যাটিং-বোলিংয়ের প্রত্যক্ষ লড়াইয়ের সঙ্গে স্নায়ুচাপও হয়ে উঠতে পারে বড় কিছু। ভারতকে ভড়কে দিতে বাংলাদেশের প্রয়োজন একটি ‘মারণাস্ত্রের আঘাত’, আর বাংলাদেশকে আরেকবার আটকে দিতে ভারতের প্রয়োজন আগের ম্যাচের মতো কোনও পারফরম্যান্স। 

    নাগপুরে হবে বাংলাদেশের ইতিহাস? নাকি ইতিহাসের পাট দিল্লীতেই চুকে গেছে তাদের? 

    রঙ্গমঞ্চ
    ভিদার্ভা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম, নাগপুর 

    ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কার ২১৫ রান দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল নাগপুরের এ স্টেডিয়ামের টি-টোয়েন্টি যাত্রা। এরপর ২০১৬ ওয়ার্ল্ড টি-টোয়েন্টির পর শেষ এখানে টি-টোয়েন্টি হয়েছে ২০১৭ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিল ভারত। শেষ ১১ ম্যাচের ৮টিতে এখানে জিতেছিল প্রথমে ব্যাটিং করা দল, ফলে আবারও টস হয়ে উঠতে পারে গুরুত্বপূর্ণ। টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে পর্যাপ্ত রান বোর্ডে, এরপর স্পিনারদের সহায়তা- এ ম্যাচের জয়ের রেসিপিটা এমন হতেই পারে। 


    যাদের ওপর চোখ

    লিটন দাস

    আগের ম্যাচে শুরুটা দারুণ করেছিলেন, তবে শেষ পর্যন্ত বিলিয়েই এসেছেন উইকেট। লিটন দাসের এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারটিই যেন এমন- আশা জুগিয়েই শেষ পর্যন্ত নিজের ‘মেধা’র সদ্ব্যবহারটা করা হয়ে ওঠেনি। নাগপুরে লিটন পারবেন ইতিহাসের অংশ হতে? 

    শিখর ধাওয়ান

    রোহিত শর্মার ইনিংসের দর্শক হয়ে ছিলেন রাজকোটে, তার আগে দিল্লীতে থিতু হয়েও ফিরতে হয়েছিল রান-আউট হয়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারত ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সুযোগ দিতে পারে অনেককেই। ধাওয়ান এই ফরম্যাটে নিজেকে অপরিহার্য প্রমাণ করার ইঙ্গিত দেবেন শেষ পর্যন্ত? 

    সম্ভাব্য একাদশ

    তিন পেসার, একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনারের সঙ্গে তিনজন অলরাউন্ডার নিয়ে এর আগে দুই ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। আরাফাত সানিকে একাদশে ভাবতে পারে বাংলাদেশ, সেক্ষেত্রে তাকে জায়গা করে দিতে পারেন মোসাদ্দেক হোসেন। 

    বাংলাদেশ 

    লিটন দাস, নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন/আরাফাত সানি, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন

    খলিল আহমেদকে আবারও সুযোগ দিয়েছিল ভারত, তবে সে সিদ্ধান্তর পেছনে যথার্থতা ঠিকঠাক প্রমাণ করতে পারেননি তিনি। উইনিং কম্বিনেশন ভাঙলে শারদুল ঠাকুরকে জায়গা করে দিতে হতে পারে খলিলের। 

    ভারত

    রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋশাভ পান্ট (উইকেটকিপার), শিভাম দুবে, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুঝভেন্দ্র চাহাল, দীপক চাহার, শারদুল ঠাকুর

    সংখ্যার খেলা 

    • ৫- এখন পর্যন্ত ৫টি দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ, ২৮টি খেলে
    • ৭- দেশের মাটিতে ১৬টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের (বাংলাদেশ সিরিজ বাদে) মাঝে ৭টি জিতেছে ভারত
    • ৫- দেশের মাটিতে ৫টি দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র করেছে ভারত 
    • ০- ভারত সিরিজের ২ ম্যাচে কোনও উইকেট পাননি মোস্তাফিজ 


    তারা বলেন 

    “কারও খারাপ দিন গেলেই যে সে পরের ছয় মাস দলের বাইরে থাকবে, তা নয়। এটা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেরই অংশ। আমরা বিশ্বাস করি, গত দুই ম্যাচে যারা খেলেছে তারা যথেষ্ট ভাল। কেউ আমাদের বিপক্ষে আদতেই খুব ভাল খেলেছে বলেই আমরা খুব বেশি ট্যাকটিক্যাল পরিবর্তন আনব না।” 

    রাসেল ডমিঙ্গো, হেড কোচ, বাংলাদেশ