স্টার্ক, কামিন্সের তোপের দিন শফিকের প্রতিরোধ এবং নো বল বিতর্ক
পার্থ টেস্ট
১ম দিন শেষে
পাকিস্তান ৮৬.২ ওভারে ২৪০ অলআউট (শফিক ৭৬, আজহার ৩৯, রিজওয়ান ৩৭; স্টার্ক ৪/৫২, কামিন্স ৩/৬০, হ্যাজলউড ২/৪৬)
এক্সপ্রেস গতির বোলিং, দুর্দান্ত কিছু ডেলিভারি, ১৬ বছর বয়সী একজন কিশোরের টেস্ট অভিষেকে স্টার্কের মুখোমুখি হওয়া, তার আগে আবার নো বল বিতর্ক...- পার্থে প্রথম দিনটা কেটেছে ঘটনাবহুল। অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মের শুরুটা এর চেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর বোধ হয় হতে পারত না!
প্রথম দিন শেষে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে থাকবে অবশ্যই। পার্থের উইকেট খুব কঠিন ছিল না, ২৪০ রানকে তাই এখনই যথেষ্ট বলার উপায় নেই। বরং পাকিস্তানি ওপেনাররা যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে সেটা কমই মনে হবে। আবার ৯৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তান, সেই হিসেবে তাদের জন্য এটা মন্দ নয়।
শফিক করেছেন ৭৬ রান
আজহার আলী ও শান মাসুদ নতুন বলটা দেখেশুনেই পার করে দিয়েছিলেন। স্টার্ক, হ্যাজলউড, কামিন্স সকালে খুব ভালো লেংথে বল করতে পারছিলেন না। দুই ওপেনার রান বেশি না তুলতে না পারলেও লাঞ্চ পর্যন্ত দেখেশুনেই পার করে দিয়েছিলেন। ৭৫ রানের মাথায় মনযোগ হারালেন মাসুদ, কামিন্সের বলে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলেন স্মিথকে। দুই বল পরেই আবার আঘাত, এবার হ্যাজলউডের। অফ স্টাম্পের ঠিক বাইরে প্রায় নিখুঁত বলটা না খেলাটাই ছিল কঠিন। সেটা করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলে দিলেন আজহার, ৭৫ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারাল পাকিস্তান। হারিস সোহেল শুরু থেকেই ছিলেন নড়বড়ে, শরীর থেকে দূরে শট খেলতে গিয়ে স্টার্কের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন উইকেটের পেছনেই। ১ রানেই ফিরলেন, ৭৭ রানে নেইই৯ তৃতীয় উইকেট।
তবে পাকিস্তান সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেল এরপর। বাবর আজমের জণ্য এই সিরিজকে ধরা হচ্ছিল নিজেকে ফিরে পাওয়ার একটা মোক্ষম উপলক্ষ। কিন্তু হ্যাজলউডের বলে স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে আত্মহত্যা করে এলেন ১ রান করে। ইফতেখার আহমেদ টি-টোয়েন্টির ফর্ম টানতে পারলেন না আজ, লায়নের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দিলেন ল্যাবুশেনকে। বিনা উইকেটে ৭৫ রান থেকে ৯৪ রানে ৫ উইকেট নেই পাকিস্তানের।
এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান শুরু করলেন পাল্টা আক্রমণ। দারুণ কিছু শট খেলে দ্রুত তুলে ফেললেন ৩৩ বলে ৩৭ রান। তার পরেই দিনের সবচেয়ে বিতর্কিত মুহূর্ত। কামিন্সের বলে ক্যাচ তুলে দিলেন পেইনকে। রিপ্লেতে দেখা গেল, কামিন্সের বুটের কোনো অংশ লাইনের পেছনে ছিল না। কিন্তু পাকিস্তানকে হতম্ভব করে আম্পায়ার মাইকেল গফ নো বল দিলেন না। আসাদ শফিক এরপর ইয়াসির শাহকে নিয়ে হাল ধরেছেন, সপ্তম উইকেটে যোগ করেছেন ৮৪ রান। তার পরেই স্টার্কের ওই ছোট্ট স্পেল। ইয়াসিরকে দারুণ এক ইয়র্কারে এলোমেলো করে দিলেন স্টাম্প, পরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানালেন শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। সেটা অবশ্য রিভিউ নিয়েই উইকেট পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। হ্যাটট্রিক বলে মুখোমুখি ১৬ বছর বয়সী অভিষিক্ত নাসিম শাহ, কিন্তু কীভাবে কীভাবে যেন আউট হওয়া থেকে বেঁচে গেলেন।
এরসব চাপের মধ্যে এক প্রান্তে ছিলেন আসাদ শফিক। কিন্তু তার মনযোগও নড়ে গেল। কামিন্সের আরেকটি দুর্দান্ত বল ব্যাট প্যাডের ফাঁক গলে ভেঙে দিল স্টাম্প, শফিক ফিরলেন ৭৬ রানে। নাসিম শাহকে আউট করে নিজের চতুর্থ উইকেট পেয়েছেন স্টার্ক, দিনের খেলাও শেষ হয়েছে সেখানে।