গ্যাবায় ওয়ার্নারের দিন, অস্ট্রেলিয়ার দিন...
গ্যাবা টেস্ট
দ্বিতীয় দিন শেষে
পাকিস্তান ২৪০
অস্ট্রেলিয়া ৮৭ ওভারে ৩১২/১
অধিনায়ক বদলাল, বদলাল অনেক খেলোয়াড় কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানের দুর্দশা আর বদলাল না। ব্রিসবেনের গ্যাবায় দ্বিতীয় দিন শেষে যে অবস্থা, তাতে এই টেস্ট বাঁচাতে হলেও পাকিস্তানকে করতে হবে অবিশ্বাস্য কিছু। আর সেটার জন্য ‘দায়’ বলুন আর ‘কৃতিত্ব’ বলুন, অনেকটাই ডেভিড ওয়ার্নারের।
ওয়ার্নার আজকের দিনটা সারাজীবন আলাদা করেই মনে রাখবেন। কেপটাউনে বল টেম্পারিং কেলেংকারির এক বছর পর দলে ফিরে রঙিন পোশাকে নিজেকে খুঁজে পেলেও সাদা পোশাকে সময়টা কেটেছি্ল দুঃস্বপ্নের মতো। পুরো অ্যাশেজ মিলে মাত্র ৯৫ রান তুলেছিলেন, স্টুয়ার্ট ব্রড একাই ভুগিয়েছিলেন তাকে। আজ একদিনেই তার দ্বিগুণের কাছাকাছি রান করে ফেললেন। দেশের মাটিতে প্রায় দুই বছর পর পেয়েছেন সেঞ্চুরি, দিন শেষে সেটাকে করেছেন ড্যাডি সেঞ্চুরি। ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি সামনেই, স্মিথ তো এখনও নামেনইনি। অস্ট্রেলিয়ার লিড এর মধ্যেই হয়ে গেছে ৭২ রানের, পাকিস্তানকে রানের পাহাড়ে চাপা দিয়ে ফেলার সব আয়োজন সারা।
আজকের দিনে ক্রিকেটবিশ্বের চোখ ছিল আলাদা কারণে। ১৬ বছর বয়সী পেসার নাসিম শাহকে নিয়ে কদিন থেকেই চলছে তুমুল মাতামাতি, টেস্ট অভিষেকে কেমন করেন সেটা দেখার একটা অপেক্ষা তো ছিলই। নাসিম শাহ প্রথম দিন উইকেট পাননি বটে, দিনটা কেটেছে হতাশাতেই। তবে উইকেট প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। ওয়ার্নারের রান যখন ৫৬, নাসিমের দারুণ একটা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন রিজওয়ানকে। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল পরিষ্কার নো বল, অভিষেক উইকেট আর পাওয়া হলো না নাসিমের। গতি দিয়ে অবশ্য নজর কেড়েছেন আলাদা করে, পাকিস্তান তাকে নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতেই পারে।
বরং পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে অন্য কারণে। মোহাম্মদ আব্বাস লাল বলে গত কিছুদিন দলেই তাদের সেরা বোলার, কিন্তু তার সুযোগই হলো না একাদশে। তার জায়গায় মূলত যিনি এসেছেন, সেই ইমরান খান তেমন কিছু করতে পারলেন না আজ। সকালে ওয়ার্নার-বার্ন্সকে একটু অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন শাহীন আফ্রিদি আর ইমরান, কিন্তু দ্রুত সেটা কাটিয়ে তুলতে বেশি সময় নেননি দুই ওপেনার। ২৫ ওভারে ১০০ রান তুলে তুলে লাঞ্চে গেছেন দুজন।
লাঞ্চের পর নাসিমের ওই বল ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার জন্য হুমকি হয়ে আসার মুহূর্ত খুব বেশি ছিল না। এর মধ্যে ওয়ার্নার আর বার্নস দুজন পেয়ে গেছেন ফিফটি। ঠিক ৯৯ রান নিয়ে চা বিরতিতে গেছেন ওয়ার্নার, সেঞ্চুরিও পেয়ে গেছেন এরপর। হেলমেট খুলে নিজের ট্রেডমার্ক লাফে উদযাপন করেছেন। তবে তাতে উল্লাসের চেয়ে বেশি ছিল স্বস্তি। বার্নসও সেঞ্চুরির পথে এগুচ্ছিলেন, কিন্তু এর পরেই দিনে পাকিস্তানের একমাত্র মনে রাখার মুহূর্ত। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ইয়াসিরের বল সুইপ করতে গিয়েছিলেন বার্নস, লাইন মিস করে বোল্ড হলেন। ৯৭ রানে ফিরলেন, তিন রানের জন্য পাওয়া হলো না সেঞ্চুরি। মারনাস ল্যাবুশেন তিনে এসে দিনের বাকি সময় সঙ্গ দিয়ে গেলেন। দুজনের জুটিতে রান উঠে গেছে ৯০। ওয়ার্নার অপরাজিত আছেন ১৫১ রানে, ল্যাবুশেন ব্যাট করছেন ৫৫ রানে।