• অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    ল্যাবুশেইন-রথে গ্যাবায় পিষ্ট পাকিস্তান

    ল্যাবুশেইন-রথে গ্যাবায় পিষ্ট পাকিস্তান    

    ব্রিসবেন টেস্ট 

    তৃতীয় দিন শেষে 

    পাকিস্তান ২৪০ ও ৬৪/৩ 

    অস্ট্রেলিয়া ৫৮০ অলআউট 

     

    ব্রিসবেন টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে যদি আপনি স্কোরকার্ডটা দেখেন, খুব একটা চমকে ওঠার কথা নয়। পাকিস্তানকে রানের পাহাড়ে চাপা দেবে অস্ট্রেলিয়া, তার পর সেই চাপের সুযোগ নিয়ে কিছু উইকেটও তুলে নেবে দিন শেষে- এমন চিত্রনাট্যে তো বিস্ময় নেই কোনো। অস্ট্রেলিয়ায় এই অভিজ্ঞতা অনেক বারই হয়েছে পাকিস্তানের। তবে সেই পাহাড়ের স্থপতি স্টিভ স্মিথ তো নয়ই, তার কোনো অবদানই নেই। বরং মারনাস ল্যাবুশেন নামের ব্যাটসম্যানটাই আজ দিনটা নিজের করে নিয়েছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটাকেই প্রায় ডাবল করে ফেলেছিলেন, শেষ পর্যন্ত পারেননি। আর দিন শেষে স্টার্ক আর কামিন্স মিলে তৃতীয় দিন শেষেই অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিচ্ছেন জয়ের সুবাস। 

    ডেভিড ওয়ার্নার অবশ্য কিছুটা হতাশ হতে পারেন। ড্যাডি সেঞ্চুরি পেয়ে গিয়েছিলেন আজ, ঘুমোতে গিয়েছিলেন ডাবল সেঞ্চুরির স্বপ্ন চোখে এঁকে। সকালের সেশনে তাঁকে আটকে রেখেছিলেন পাকিস্তানের পেসাররা, প্রথম এক ঘন্টায় নিয়েছিলেন ৩ রান। তরুণ নাসিম শাহর দুর্ভাগ্য, কাল উইকেট পাননি। তবে সকালের সেশনে দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার পেয়েছেন। দুর্দান্ত এক ওভারে ওয়ার্নারকে দিয়েছিলেন শর্ট বল, সেটা ডিফেন্স করতে গিয়ে বটম এজ হয়েছে ওয়ার্নারের। ক্যাচ ধরেছেন রিজওয়ান, টেস্ট অভিষেকে প্রথম উইকেট পেয়েছেন নাসিম। 

    স্মিথ ক্রিজে এসেছেন, মঞ্চটা তার জণ্য সাজানো ছিল আরেকটি বড় ইনিংসের। কিন্তু কোনো চাপ নেই বলেই কি না, স্মিথ ব্যর্থ হলেন। ইয়াসির শাহর লেগ স্পিনটা অন সাইডে খেলতে গিয়ে পুরোপুরি লাইন মিস করে বোল্ড স্মিথ, ফিরলেন ৪ রানে। টেস্টে এ নিয়ে সপ্তমবার আউট হলেন ইয়াসিরের বলে, এর চেয়ে স্মিথকে বেশি আউট করেছেন শুধু স্টুয়ার্ট ব্রড। 

    ৩৫৮ রানে ৩ উইকেট পড়ে গেছে তখন অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু পাকিস্তানের ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দূরে নিয়ে গেছেন ল্যাবুশেন ও ম্যাথু ওয়েইড। দুজন মিলে এরপর যোগ করেছেন ১১০ রান। এর মধ্যেই ল্যাবুশেন পৌঁছে গিয়েছিলেন নব্বইঘরে ঘরে। সকাল থেকে দারুণ খেললেও সেঞ্চুরির স্নায়ুচাপ পেয়ে বসে তাকে, শাহীন আফ্রিদির বলে এজ থেকে চার হয়েই পেয়েছেন নিজের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি করেই ওয়েইডকে নিয়ে গেছেন লাঞ্চে।

    এরপর পার্ট টাইম স্পিনার হারিস সোহেল পাকিস্তানকে এনে দিয়েছেন জোড়া সাফল্য। শুরুতে ওয়েইড ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ৬০ রান। ট্রাভিস হেড দ্রুত ২৪ রান তুলে ফেলেছিলেন, তিনিও ২৪ রানে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটকিপার রিজওয়ানকে। দুর্দান্ত একটা ক্যাচ ধরার জন্য কৃতিত্ব রিজওয়ানেরও প্রাপ্য। ততক্ষণে ৫০০ পেরিয়ে গেছে পাকিস্তান। টিম পেইন টেকেননি বেশিক্ষণ, তাকে আউট করে আফ্রিদি পেয়েছেন প্রথম উইকেট। তবে গ্যাবা অপেক্ষা করছিল ল্যাবুশেনের ডাবলের জন্য। সেটা আর হয়নি। ১৮৫ রান করে আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন গালিতে। এরপর দ্রুত উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, অলআউট হয়ে গেছে ৫৮০ রানে। 

    তবে দিন শেষে সেটা শাপেবরই হয়েছে, শেষ ঘন্টায় পাকিস্তানকে ব্যাট করানো গেছে। স্টার্ক শুরুতেই ফিরিয়েছেন আজাহার আলীকে, হারিস সোহেলও তার বলে বাজে শটে উইকেট দিয়ে এসেছেন। কামিন্স এসে স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন আসাদ শফিককে। তবে বাকি সময়টা পার করে দিয়েছেন শান মাসুদ ও বাবর আজম। ইনিংস পরাজয় বাঁচাতেই এখনও পাকিস্তানকে করতে হবে ২৭৬ রান, হাতে আছে ৭ উইকেট।