ব্রুকসের সেঞ্চুরি, কর্নওয়ালের ১০ উইকেটে লক্ষ্ণৌয়ের নিয়ন্ত্রণ ক্যারিবীয়দের
১ম দিন, স্টাম্পস
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস ১৮৭ অল-আউট (আহমাদি ৩৯, জাজাই ৩২, কর্নওয়াল ৭/৭৫, হোল্ডার ২/২২)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস ৬৮/২* (ক্যাম্পবেল ৩০*, ব্রুকস ১৯*, রশিদ ১/২৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১৯ রানে পিছিয়ে
লক্ষ্ণৌয়ে মাইলফলকের দিন ছিল আজ। শামার ব্রুকসের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি, আমির হামজার প্রথম পাঁচ উইকেট, জাভেদ আহমাদির প্রথম ফিফটির পর রাকিম কর্নওয়ালের প্রথম দশ উইকেটের মাইলফলক হয়েছে এদিন। তবে দ্বিতীয় দিনশেষেই ধুঁকছে আফগানিস্তান। চতুর্থ ইনিংসে ১০০-১৫০ রানের লক্ষ্যও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য হতো দারুণ চ্যালেঞ্জিং, তবে কার্যত এখন ১৯ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তানের কাছে তেমন লক্ষ্য সেট করা স্বপ্নের মতো। সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার খুব একটা লক্ষণও নেই আপাতত।
এ উইকেটে এমন কিছু হবে, সে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল আগের দিনই। লক্ষ্ণৌয়ের টার্নিং উইকেটে দ্বিতীয় দিন পড়েছে মোট ১৫ উইকেট, একটি রান-আউট বাদে সবকটিই নিয়েছেন স্পিনাররা। ব্রুকসের সেঞ্চুরির মর্যাদা তাই বেড়ে যাচ্ছে আরও। দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরুর পরও খেই হারিয়েছে আফগানিস্তান, প্রথম ইনিংসের মতো আবারও তাদের ওপর চড়ে বসেছেন কর্নওয়াল। আর শেষদিকে রসটন চেজের চোখের পলকে নেওয়া ৩ উইকেটে আফগানিস্তানের অবস্থা হয়ে গেছে আরও এলোমেলো।
সকালে প্রথম ব্রেকথ্রু পেতে আফগানিস্তানকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৮ ওভারের মতো, ফিফটির পর আমির হামজার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন জন ক্যামবেল। শিমরন হেটমায়ার ও চেজের সঙ্গে ব্রুকসের জুটি টেকেনি বেশিক্ষণ, লাঞ্চের আগে এই ৩ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লাঞ্চের আগে-পরে শেন ডওরিচের সঙ্গে ব্রুকসের ৭৪ রানের জুটি এগিয়ে দিয়েছে সফরকারিদের।
দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন ব্রুকস/উইন্ডিজ ক্রিকেট
৪২ রান করে ডওরিচ ফিরেছেন জাহির খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে, তবে ব্রুকস আউট হয়েছেন ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে। ১৯৮ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করা ব্রুকস শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন হামজাকে বড় শট খেলতে গিয়ে। এর আগে করেছেন ২১৪ বলে ১১১, ১৫ চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছয়। কেমার রোচের উইকেট দিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ পেয়েছেন হামজা, ৭৪ রান খরচ করেছেন এই বাঁহাতি অর্থোডক্স। ৯০ রানে এগিয়ে থেকে প্রথম ইনিংস শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ভাল শুরু করেছিলেন আহমাদি ও ইব্রাহিম জাদরান। ২৮ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রায় ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন কর্নওয়াল, আহমাদি স্লিপে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন কর্নওয়াল ওভারস্টেপ করায়। ওপেনিং জুটি পরে ছাড়িয়েছে ফিফটি, শেষ পর্যন্ত ব্রেকথ্রু এসেছে ওই কর্নওয়ালের বলেই। অফস্টাম্পের বাইরের লেংথ বল বুঝতে ভুল করে ছেড়ে দিয়েছিলেন জাদরান, হয়েছেন এলবিডব্লিউ।
কর্নওয়ালের পরের ২ ওভারে এসেছে ৩ উইকেট- ভুল বুঝাবুঝির পর রান-আউট হয়েছেন ইহসানউল্লাহ, শর্ট লেগে ধরা পড়েছেন রহমত শাহ, ব্যাট-প্যাডে ক্যাচ দিয়ে গোল্ডেন ডাক মেরেছেন আসগর আফগান। এ উইকেট দিয়েই ম্যাচে দশ পূর্ণ হয়েছে কর্নওয়ালের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে পঞ্চম ক্যারিবীয় স্পিনার হিসেবে এ কীর্তি হলো তার, এর আগে যা ছিল সনি রামাধিন, ল্যান্স গিবস, আলফ ভ্যালেনটাইন ও দেবেন্দ্র বিশুর।
আহমাদির সঙ্গে নাসির জামালের জুটি একটু ধাতস্থ করছিল আফগানিস্তানকে, চেজ এসে এলোমেলো করে দিয়েছেন সব। জোমেল ওয়ারিকানকে সরিয়ে চেজকে এনেছিলেন হোল্ডার, চেজ এনে দিয়েছেন ৩ ওভারে ৩ উইকেট। নাসির জামাল হয়েছেন বোল্ড, আহমাদি ও হামজা ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। আরেকবার সেশন শেষের ঠিক আগ দিয়ে উইকেট হারিয়েছে আফগানিস্তান, আর লক্ষ্ণৌয়ে নিজেদের ঠেলে দিয়েছে পরাজয়ের দিকে।