• অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান সিরিজ
  • " />

     

    ইয়াসিরের সেঞ্চুরি, তবে পাকিস্তানকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস-পরাজয়

    ইয়াসিরের সেঞ্চুরি, তবে পাকিস্তানকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস-পরাজয়    

    ৩য় দিন, স্টাম্পস
    অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ৫৮৯/৩ ডিক্লে. (ওয়ার্নার ৩৩৫*, ল্যাবুশেন ১৬২*, আফ্রিদি ৩/৮৮)
    পাকিস্তান ১ম ইনিংস ৩০২ অল-আউট (ইয়াসির ১১৩, বাবর ৯৭, স্টার্ক ৬/৬৬, কামিন্স ৩/৮৩) ও ২য় ইনিংস (ফলোয়িং অন) ৩৯/৩* 
    পাকিস্তান ২৪৮ রানে পিছিয়ে


    বারদুয়েক লাফ দিলেন, ব্যাটটা ঘুরিয়ে আনলেন। সঙ্গে গর্জন। যেন ডেভিড ওয়ার্নার। আগেরদিন ট্রিপল সেঞ্চুরির পর ওয়ার্নার যে উদযাপন করলেন, সেঞ্চুরির পর ইয়াসির শাহর উদযাপন তার চেয়ে কম রঙিন হলো না মোটেও। ওয়ার্নারের কাছে ট্রিপলের যা তাৎপর্য, ব্যাটসম্যান ইয়াসিরের কাছে একটা সেঞ্চুরির তাৎপর্য তো মোটামুটি একই! 

    ইয়াসির শাহ টেস্ট সেঞ্চুরি করেছেন। হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন। এই ইনিংসের আগে ৫৪ বার ব্যাটিং করে ইয়াসিরের গড় ছিল ১২। এই সেঞ্চুরির পর হয়েছে ১৪.০৬, যা তাকে নিয়ে গেছে সর্বনিম্ন গড় নিয়ে টেস্ট সেঞ্চুরির মালিকানার তালিকায় দুই নম্বরে। তার সেঞ্চুরির সঙ্গে বাবর আজমের দারুণ ৯৭ রানের দিনেও অবশ্য পাকিস্তানকে স্বস্তিতে রাখেনি অস্ট্রেলিয়া। তাদেরকে ফলো-অন করিয়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের দিকে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় দিনের পর তাদের প্রয়োজন আর ৭ উইকেট। 

    ৯৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তান শেষ ৪ উইকেটে এদিন যোগ করেছে আরও ২০৬ রান। বাবরের সঙ্গে ১০৫ রানের পর ইয়াসির ৮ম উইকেটে মোহাম্মদ আব্বাসের সঙ্গে যোগ করেছেন আরও ৮৭ রান। এরপরও অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে পেয়েছে ২৮৭ রানের বড় লিড। 

    চা-বিরতির আগে বাবরের সঙ্গে শাহিন শাহ আফ্রিদির উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান, মিচেল স্টার্কের পরপর দুই বলে। গুডলেংথে পড়ার পর সোজা হওয়া বলে কট-বিহাইন্ড হয়ে ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেছেন বাবর, পেইন নিয়েছেন আরেকটি এক হাতের ক্যাচ। এ উইকেট দিয়েই পাঁচ পূর্ণ হয়েছে স্টার্কের, ক্যারিয়ারে ১২ বার এই মাইলফলক হলো তার। 

     


    ৬ উইকেট পেয়েছেন স্টার্ক/ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া


    পরের বলে ১৪৫ কিলোমিটার গতির ইনসুইঙ্গারের জবাব দিতে পারেননি আফ্রিদি, রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি এলবিডব্লিউ থেকে। হ্যাটট্রিক বলে আব্বাসও লিডিং-এজ তুলেছিলেন, তবে পয়েন্টে ফাঁকা অঞ্চল দিয়ে গেছে সেটি। বিরতির আগেই ইয়াসির পেয়ে গেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। 

    ইনিংসজুড়েই ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছেন তিনি। বারদুয়েক সহজ ক্যাচ ছেড়েছেন মারনাস ল্যাবুশেন, স্টাম্পিংয়ের সুযোগ ছেড়েছেন টিম পেইন। এমনকি তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করা স্কোরিং শটও গেছে মিড-অনের নাগালের একটু বাইরে দিয়ে। তাতে অবশ্য ইয়াসিরের কিছু যায় আসে না। ন্যাথান লায়ন থেকে শুরু করে স্টার্ক- সবার সঙ্গে ভাগ্যের ওপর চড়াও হয়ে তিনি পেয়ে গেছেন সেই জাদুকরী তিন অঙ্ক। ২০০৬ সালের পর প্রথম পাকিস্তান ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮ নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। আর শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটেই ইয়াসিরের এটি প্রথম সেঞ্চুরি।

    ইয়াসির অবশেষে হার মেনেছেন প্যাট কামিন্সের শর্ট বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ধরা পড়ে। এর আগে করেছেন ২১৩ বলে ১১৩ রান, মেরেছেন ১৩টি চার। তার আগেই আব্বাসকে ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন কামিন্সই। 

    ফলো-অনে পড়ে আবারও আগের ধাঁচেই ফিরে গেছে পাকিস্তানের টপ অর্ডার। ডিনারের আগেই জশ হ্যাজলউডের বলে এলবিডব্লিউ ইমাম-উল-হক, ১ম ইনিংসে ২ রানের পর এবার তিনি ফিরেছেন শূন্যতেই। একপাশে শান মাসুদকে রেখে ফিরেছেন আজহার আলি ও বাবর আজমও। আজহার স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন স্টার্কের বলে, বাবর পেইনের হাতে ধরা পড়েছেন হ্যাজলউডের বলে। 

    আরেকদফা বৃষ্টি এসে খেলা থামিয়ে দেওয়ার আগে মাসুদের সঙ্গে ক্রিজে আছেন আসাদ শফিক। আর আছে ইনিংস পরাজয়ের চোখরাঙানি। যেটি আটকাতে হলে শুধু ইয়াসির শাহর ব্যাটিং-ও হয়তো যথেষ্ট হবে না পাকিস্তানের।