• এসএ গেমস
  • " />

     

    নেপালের কাছে হেরে ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো বাংলাদেশকে

    নেপালের কাছে হেরে ব্রোঞ্জ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো বাংলাদেশকে    

    ফুলটাইম
    নেপাল ১-০ বাংলাদেশ 


    নেপালের বিপক্ষে আর জেতা হলো না বাংলাদেশের। এসএ গেমসের ফুটবলেও তাই আর পদকের রঙ বদলানোর সুযোগ হচ্ছে না জামাল ভুঁইয়াদের। নেপালের বিপক্ষে প্রায় পুরো সময় খেলা নিয়ন্ত্রণ করেও ১১ মিনিটে সুনীল বালের একমাত্র গোল পার্থক্য গড়ে দিল ম্যাচে। ভুটানের সঙ্গে তাই আগামী ১০ অক্টোবরের ফাইনাল খেলছে স্বাগতিক নেপাল। আর ২০১৬ এর মতো এবারও ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো বাংলাদেশ অলিম্পিক ফুটবল দলকে। 

    বাংলাদেশের হতাশার ষোলকলা পুর্ণ হয়েছে ম্যাচের যোগ করা সময়ে গিয়ে। কর্নার ফ্ল্যাগের কাছাকাছি সময় নষ্ট করতে থাকা নেপাল ফুটবলারকে ধাক্কা দিয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। এর আগেই অবশ্য বাংলাদেশের সম্ভাবনা ফুরিয়ে গিয়েছিল।  

    ফাইনালে উঠতে কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে জিততেই হত বাংলাদেশকে। ৬ ডিফেন্ডার নিয়ে একাদশ সাজালেও শুরুতেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। বামদিক থেকে নেপাল অধিনায়ক সুজলের কাটব্যাক ঠেকাতে পারেননি পাহারায় থাকা দুই বাংলাদেশ ডিফেন্ডার। সিক্স ইয়ার্ড বক্সের কোনায় ছিলেন সুনীল বাল। আড়াআড়ি দারুণ ফিনিশে গোল করে তিনি এগিয়ে নেন নেপালকে। 

    শুরুতে গোল হজম করার অবশ্য ভালো-মন্দ দুইদিকই আছে। ম্যাচে ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় ছিল বাংলাদেশের হাতে। ৫ মিনিট পর দলকে সমতায় ফেরানোর  সেই কাজটা প্রায় করেও ফেলেছিলেন সাদ উদ্দিন। কিন্তু সল্টলেকের মতো রঙ্গশালাকে এদিন আর স্তব্ধ করা হয়নি আবাহনী ফরোয়ার্ডের। লম্বরা থ্রো এর পর বক্সের ভেতর  থেকে নেওয়া সাদের হাফ ভলি দারুণ এক ব্লক করে বাংলাদেশকে গোলবঞ্চিত করেন নেপাল ডিফেন্ডার।

     


    প্রথমার্ধে এর পর বাকিটা সময় নেপালকে তাদের অর্ধেই ব্যস্ত রেখেছিল বাংলাদেশ। নাবিব নেওয়াজ জীবন বাংলাদেশের একাদশে ফিরেছিলেন। কিন্তু ফাইনাল থার্ডে বাংলাদেশের দরকার ছিল দুর্দান্ত এক ফিনিশার। কর্নার, লম্বা থ্রো আর ফ্রি-কিক থেকে বারবার দারুণ সব ডেলিভারির পরও তাই খালি হাতেই ফিরতে হলো বাংলাদেশকে। নিষেধাজ্ঞার কারণে নেপালের বিপক্ষে খেলতে না পারা মাহবুবুর রহমান সুফিলের অভাবটাও ভোগালো বাংলাদেশকে। 

    দ্বিতীয়ার্ধে ভালো কিছু সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। আরও ৪৯ মিনিটে একবার সেটপিসই ছিল বাংলাদেশের মূল অস্ত্র। কিন্তু বাংলাদেশের নেওয়া কর্নার থেকে তখন অল্পের জন্য বেঁচে যায় নেপাল। দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল বুঝতে পেরেছিল নিজেদের অর্ধে বেশি ব্যস্ত থাকলে বাংলাদেশকে আটকানো কঠিনই হবে তাদের জন্য। সময়ে সময়ে কাউন্টার অ্যাটাকে তাই ইয়াসিন-রাফিদের চোখ রাঙিয়েছেন সুনীলরা। ৫৫ মিনিটে সুনীলই প্রায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলেছিলেন। কর্নারের বিনিময়ে তখন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে বাংলাদেশ।

    ম্যাচের সময় ঘন্টা পেরুনোর আগেই অকার্যকর জীবনকে উঠিয়ে মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে নামিয়েছিলেন জেমি ডে। কিন্তু ইব্রাহিমের দুর্বল ফিনিশ আরও একবার ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে। মাঠে নামার পর প্রথম শটেই গোল পেয়ে যেতে পারতেন তিনি। জামালের দারুণ এক পাস থেকে বক্সের ভেতর বল ধরলেও ইব্রাহিম তখন মেরেছেন বাইরে দিয়ে।

    বাংলাদেশের গোলের সামনে ব্যর্থ হওয়ার ফায়দা আরেকটু হলেই পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারতেন   সুনীল-সুজলরা। ৬৪ আর ৭০ মিনিটে দারুণ দুইটি সুযোগ থেকে গোল পেতে পারত নেপাল। তারাও ব্যর্থ, অন্যপ্রান্তে ব্যর্থ বাংলাদেশও। শেষে যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে সেসেহাংয়ের কাছ থেক বল দখল করতে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে বসেন জামাল। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে এর পর মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। এমনিতে পুরো ম্যাচেই রেফারিং নিয়ে বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও ডাগ আউটে থাকা ডেকে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। শেষে গিয়ে লাল কার্ডটাও দেখতে হয়েছে বাংলাদেশকে। 

    ম্যাচের আগে বাফুফে ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল নেপালকে হারাতে পারলে দলকে পুরস্কৃত করবে তারা। সেটাও আর আপাতত হচ্ছে না।    
     

    বাংলাদেশ একাদশ 
    আনিসুর রহমান জিকো, বিশ্বনাথ ঘোষ, রিয়াদুল হাসান রাফি, টুটুল হোশেন বাদশা, ইয়াসিন আরাফাত, সুশান্ত ত্রিপুরা, জামাল ভুঁইয়া, রবিউল হাসান, সাদ উদ্দিন, নাবিব নেওয়াজ জীবন