• ইংল্যান্ডের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর
  • " />

     

    কারানের ৪ উইকেটের আঘাত, ডি ককের ৯৫-এর জবাব

    কারানের ৪ উইকেটের আঘাত, ডি ককের ৯৫-এর জবাব    

    ১ম দিন, স্টাম্পস
    দক্ষিণ আফ্রিকা ২৭৭/৯* (ডি কক ৯৫, হামজা ৩৯, কারান ৪/৫৭, ব্রড ৩/৫২) 


    ব্যাটটা সামনে বাড়িয়েই হয়তো কুইন্টন ডি কক বুঝেছিলেন- ভুলটা হয়ে গেছে তার। স্যাম কারানের ব্যাক অফ আ লেংথ বলটা সেঞ্চুরিয়নের মুভমেন্ট অফার করা উইকেটে পড়ে হালকা ডেভিয়েট করলো, ডি ককের সামনে বাড়ানো ব্যাটের আউটসাইড-এজ ছুঁয়ে সেটা গিয়ে ধরা পড়ল জস বাটলারের হাতে। ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করে হতাশায় ডুবলেন ডি কক, আর ইনিংসে নিজের চতুর্থ উইকেট নিয়ে উল্লাসে মাতলেন কারান। 

    সেঞ্চুরিয়নে বক্সিং ডে টেস্টের প্রথম দিনের হাইলাইটস শেষ পর্যন্ত ডি কক ও কারান- এ দুজনই। মার্ক বাউচারের ‘আহত মহিষ’-এর মতো লড়াই যা করার করলেন ডি কক, আর ইংল্যান্ড পেসারদের মধ্যে আলাদা করে নিজের স্কিল আর তা প্রয়োগে আলো ছড়ালেন কারান। টসে জিতে বোলিং নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ৯ উইকেট নিয়েছে ইংল্যান্ড, ডি ককের ইনিংসে ভর করে ২৭৭ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। দিনশেষে দুই দলের মাঝে কে বেশি স্বস্তিতে থাকবে- সে প্রশ্নের উত্তরটা ঠিক সোজাসাপটা নয়। ইংল্যান্ড ফিল্ডাররা এদিন লড়াই করেছেন পানিশূন্যতার সঙ্গে, আর দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানরা ইনিংস শুরু করেও বড় করতে না পারার আক্ষেপের সঙ্গে।

    অ্যাশেজের পর প্রথম ও ক্যারিয়ারের ১৫০তম টেস্ট খেলতে নামা জেমস অ্যান্ডারসন ম্যাচের প্রথম বলেই পেয়েছিলেন উইকেট, অবশ্য তিনি যতটা পেয়েছিলেন, এর চেয়ে বেশি সে উইকেটটা ডিন এলগার দিয়েছেন তাকে। লেগস্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ৯ম ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসেছিলেন কারান, চার মেরে তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এইডেন মার্করাম। দুই বল পরই নিজের কথাটা বলে ফেলেছেন কারান, ব্যাক অফ আ লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন মার্করাম। 
     


    ডি ককের ৫ রানের আক্ষেপ/আইসিসি


    এরপরের কিছু সময় ছিল জুবায়ের হামজার, দারুণ কয়েকটি শটে দারুণ টাচে ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। স্টুয়ার্ট ব্রডের লেংথ বলটা ছেড়ে দিতে পারতেন, তবে শেষ পর্যন্ত দিয়েছেন খোঁচা। বাকি কাজটা স্লিপে সেরেছেন বেন স্টোকস। অভিষিক্ত রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে খুব একটা সময় মাঝে কাটাতে দেননি কারান, তার দারুণ শেপের বলটা আবারও ব্যাট ছুঁয়ে গেছে স্লিপ কর্ডনে। চা-বিরতির পর প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিও ফিরেছেন, এবার তার ঘাতক ব্রড, উইকেটের স্টাইলটা অবশ্য এতক্ষণে পরিচিত হয়ে ওঠা সেটিই- স্লিপে ক্যাচ। 

    কুইন্টন ডি ককের আগমন অবশ্য ঘটেছে এর আগেই। মুখোমুখি হওয়া প্রথম ৫ বলের ৩টিতেই বাউন্ডারি মেরেছেন এই বাঁহাতি। শুরুতে অবশ্য ছিলেন নড়বড়েই, তার এজ কখনও গ্যাপে গেছে, কখনও ফিল্ডারের সামনে পড়েছে। তবে ৪৫ বলে ৯ চারের পৌঁছে গেছেন ফিফটিতে, সে ফিফটি সেঞ্চুরিয়ন উদযাপনও করেছেন বেশ কলেবর নিয়েই। 

    ফিফটির পর একটু ধীরগতির হয়ে গিয়েছিলেন তিনি, ওপাশে আরেক অভিষিক্ত ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন ভালই। তবে তাদের ৮৭ রানের জুটিটা ভেঙেছেন কারান। ভ্যান ডার ডুসেনের উইকেটের মতো ডেলিভারিতে অনিশ্চয়তায় পড়ে যাওয়া প্রিটোরিয়াসও দিয়েছেন স্লিপে ক্যাচ। 

    ডি কক শীঘ্রই থামেননি, ফিফটির পর মেরেছেন আর ৫টি চার, নিজের শেষ সিরিজে নামা ভারনন ফিল্যান্ডারের সঙ্গে যোগ করেছেন আরও ৪৭ রান। এরপরই কারানের ওই বল, আর তার হতাশায় ডুবে যাওয়া। ডি ককের পর কেশভ মহারাজ স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন এতক্ষণে ফিল্ডিংয়ে ফিরে আসা বেন স্টোকসের হাতে, আর ৮২.৪ ওভারের দিনের শেষ বলে ব্রডের ডেলিভারিটা আটকে রাখতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন কাগহিসো রাবাদা।