• নিউজিল্যান্ডের অস্ট্রেলিয়া সফর
  • " />

     

    লায়নের দশের বিষে চার দিনেই শেষ নিউজিল্যান্ড

    লায়নের দশের বিষে চার দিনেই শেষ নিউজিল্যান্ড    

    অস্ট্রেলিয়া ৪৫৪ ও ২১৭/২ ডিক্লে

    নিউজিল্যান্ড ২৫৬ ও ১৩৫

    ফলঃ অস্ট্রেলিয়া ২৭৯ রানে জয়ী


    ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সিডনি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দর্শকদের প্রবেশ উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো। একদম কাছ থেকে লায়ন-লাবুশেনদের পুরস্কার নিতে দেখার এই সৌভাগ্য তো সবসময় হয় না। অস্ট্রেলিয়ান গ্রীষ্মের এমন দারুণ শেষটাও তাই কাছ থেকেই দেখতে পেলেন দর্শকেরা। নিউজিল্যান্ডকে চার দিনের মধ্যেই উড়িয়ে দেওয়ার দিন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতের সঙ্গে ব্যবধান আরেকটু কমিয়ে এনেছে অজিরা।

    তৃতীয় দিন শেষে ম্যাচের ফলাফল একরকম ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। জিততে হলে নিউজিল্যান্ডকে করতে হতো প্রায় অবিশ্বাস্য কিছু। বিনা উইকেটে ৪০ রান দিয়ে দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। জো বার্নস আর ডেভিড ওয়ার্নারের জুটি শতরান পেরিয়ে গেছে সকালেই। রান তোলার দিকে মনযোগ ছিল দুজনেরই, যদিও সিডনির উইকেট ক্রমেই কঠিন হয়ে আসছিল শট খেলার জন্য। বার্নস দুইটি ছয়ও মেরেছিলেন, কিন্তু ফিফটি পর্যন্ত আর যাওয়া হলো না। টড অ্যাস্টলের বলে অবশ্য শুরুতে এলবিডব্লু দেননি আম্পায়ার আলিম দার। রিভিউ নিয়েই উইকেট পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।

    তবে ওয়ার্নার আর লাবুশেন লাঞ্চ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি। ৮২ বলে ফিফটি আগেই হয়ে গিয়েছিল ওয়ার্নারের, এরপর আরও দ্রুত রান তুলছিলেন ১৪৭ বলে পেয়ে গেছেন সেঞ্চুরি, ঘরের মাঠে দুর্দান্ত গ্রীষ্মের শেষটাও হলো দারুণ। ওদিকে স্বপ্নের মতো মৌসুম কাটাতে থাকা মারনাস লাবুশেইনও এরপর পেয়ে গেছেন ফিফটি। প্রায় ওয়ানডের স্ট্রাইক রেটে রান তুলছিলেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাট হেনরিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন লং অনে। ৫৯ রান করে আউট হন। ওদিকে ১১১ রানে অপরাজিত ছিলেন ওয়ার্নার। নিউজিলান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৬ রান।

    অসম্ভব না হলেও ভীষণ কঠিন লক্ষ্যের শুরুটাই এমন হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার জয়টা কিছুক্ষণের মধ্যে হয়ে গেছে সময়ের ব্যাপার।শুরুটা হয়েছে টম ব্লান্ডেলকে দিয়ে। স্টার্কের বাইরের বলটা তাড়া করেছিলেন, পয়েন্টে দারুণ এক ক্যাচ নিয়েছেন লায়ন। ২ রানেই ফিরেছেন ব্লান্ডেল। পঞ্চম ওভারে আবার স্টার্কের আঘাত। এবার আরেক টম, ল্যাথাম। ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন ল্যাথাম, ৪ রানের মধ্যে দুই উইকেট নেই কিউইদের।

    জিট রাভাল তিনে নেমে টিকতে পারেনি বেশিক্ষণ, লায়নের বলে ১২ রান করে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পর আবার লায়নের আঘাত, এবার প্রথম ইনিংসে আলো ছড়ানো নবাগত গ্লেন ফিলিপস। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন, এবারও নিয়ে বাঁচতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। রস টেলরের একটা দারুণ অর্জন হয়েছে এরপর। স্টিভেন ফ্লেমিংকে টপকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন। তবে অর্জনটা উদযাপন করতে পারেননি খুব একটা। প্যাট কামিন্সের দারুণ এক বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ২২ রান করে। ৩৮ রানে তখন ৫ উইকেট নেই নিউজিল্যান্ডের।

    এরপর কলিন ডি গ্র্যান্ডোম বেশ কিছুক্ষণ পালটা আক্রমণ করেছিলেন। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ১০০ করে ফেলল কিউইরা। খেলাটা যখন পঞ্চম দিনে যেতে পারে বলে মনে হচ্ছিল, তখনই লায়নের বলে ৫২ রানে বার্নসকে ক্যাচ দেন ডি গ্র্যান্ডোম। টড অ্যাস্টল তেঁড়েফুড়েই খেলছিলেন, তবে আউটটার জন্য কৃতিত্ব প্যাটিনসনের। লায়নের বলটা উড়িয়ে মেরেছিলেন, লং অন থেকে মিড উইকেটে অনেকতা দৌড়ে লাফিয়ে মনে রাখার মতো একটা ক্যাচ নিয়েছেন প্যাটিনসন। এরপর সমারভিলের স্টাম্প রিভার্স ইন্সুইঙ্গিং ইয়র্কারের এলোমেলো করে দিয়েছেন স্টার্ক, আর ওয়াটলিং সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন লায়নকে। ঘরের মাঠে প্রথমবার ১০ উইকেট হয়েছে লায়নের, ম্যাচসেরার পুরস্কার অবশ্য পেয়েছেন লাবুশেইন। আর ম্যাট হেনরি ব্যাট করতে না নামায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংসও শেষ হয়ে গেছে ওখানেই।