• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে জাতীয় দল থেকে আগেই বাদ পড়ত: মাশরাফি

    আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে জাতীয় দল থেকে আগেই বাদ পড়ত: মাশরাফি    

    সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে তার যে ফর্ম, সেটি দিয়ে জাতীয় দলের ফেরার আশা করেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। আপাতত উপভোগ করে যেতে চান ক্রিকেট, তবে জাতীয় দলের জন্য নির্বাচকরা তাকে বিবেচনা করলে তিনি সবসময়ই প্রস্তুত, জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক। 

    ২০১৯ বিশ্বকাপের পর আর জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি মাশরাফি। অবশ্য বিশ্বকাপের পর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু শ্রীলঙ্কা সফরে তিনটি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। তবে সেখানে মাশরাফি যেতে পারেননি চোট থাকার কারণে। আবার জাতীয় দলে তার খেলার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলছেন, বিশ্বকাপে তার ফর্মের কথা। 

    বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে মাত্র ১টি উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, একসময় সম্ভাবনা জাগালেও দল বিদায় নিয়েছিল সেমিফাইনালের আগেই, বিশ্বকাপ শেষ করেছিল টেবিলে আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগে থেকে। এরপর থেকেই তার অবসর নিয়ে হয়েছে বিস্তর আলোচনা, সে আলোচনারই রেশ আরেকবার উঠলো বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সের বিপক্ষে ঢাকা প্লাটুনের পরাজয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে। 

    “৮ ম্যাচে ১ উইকেট পাওয়ার পর সত্যি বলতে আমি আশা করি না যে জাতীয় দলে খেলব। এটা দল নির্বাচনের ব্যাপার। নির্বাচকরা মনে করলে আমাকে সুযোগ দেবে, আমি আমার সেরাটা চেষ্টা করব। ৮ ম্যাচে ১ উইকেট পেয়ে আপনাদের সামনে কীভাবে বলব যে আমি আবার সুযোগ পাব। আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে তো আরও আগে বাদ পড়তো”, বলেছেন মাশরাফি। 

    তবে শ্রীলঙ্কা সিরিজে শুরুতে তাকে অধিনায়ক হিসেবে রেখেই দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। মাশরাফি বলছেন, সে সিরিজ ছিল তার নিজেকে প্রমাণ করার একটা সুযোগ, “শ্রীলঙ্কা সিরিজে ছিলাম, ফিরে আসার একটা সুযোগ ছিল। এখন তো একটা শূন্যতা তৈরি হয়ে গেছে। সে সফরে সাকিবও ছিল না। একটা সুযোগ এসেছিল সেবার।”
     


    বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিং করছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা


    “নির্বাচকদের চিন্তা আমি জানি না, আমার সঙ্গে কারও কোনও কথা হয়নি। আমি আসলে এক পক্ষ থেকে কীভাবে বলব, সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে যা চিন্তা করার তাই করছি। যদি ওয়ানডে আসে, উনারা মনে করেন যে আমার লা উচিত, তাহলে আমি থাকব সেখানে। ক্রিকেটই আমার কাছে সব। ক্রিকেটটা এখনও খেলছি, যতদিন খেলব মন দিয়ে খেলব। এটা ব্যাপার না যে জাতীয় দলে খেলতেই হবে। বাদ বাকি জিনিসটা, নির্বাচক, বোর্ডের ব্যাপার। যেহেতু অধিনায়ক আছি, অধিনায়কত্ব নিয়ে কী হবে সেটাও একটা ব্যাপার। উনারা সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি বলেন, আমি আমার মতো চিন্তা করব।”

    বিশ্বকাপের পর থেকে শুধু জাতীয় দল নয়, মাঠের বাইরেই ছিলেন তিনি। জাতীয় লিগে খেলেননি, ফিরেছেন বিপিএল দিয়ে। বিপিএল শুরুর সময়ও বলেছিলেন, খেলাটা উপভোগ করতে চান। আবারও বললেন সেটিই, “আমি একদম শুরুতে জাতীয় দল লক্ষ্য করে খেলা শুরু করিনি, কেউই করে না। আমি সে জায়গায় ফিরে গিয়েছি আবার। বিপিএল খেলছি, সামনে ঢাকা লিগ খেলব, উপভোগ করব। সবসময় জাতীয় দলকে প্রতিনিধিত্ব করলেই ক্রিকেটার, সেরকম তো না। মনে হয় না আমার নিজেকে এতো অগ্রাধিকার দেওয়ার দরকার আছে। সবাই আমাকে মাঠ থেকে বিদায় দেবেন, ফুলের তোড়া নিয়ে আসবেন, সেটা জরুরী না। যেমন আছি, ভাল আছি, উপভোগ করছি। খুশী আছি। জাতীয় দল অনেক দূরের ব্যাপার।”

    আপাতত বিপিএলটা উপভোগই করছেন। তার দল ঢাকার প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে গেছে, ১১ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৮ উইকেট। সিরিয়স হয়েই খেলছেন, সেটি বললেন আবারও, “আমি খেলতে চাই। আমি খেলাটা ভালবাসি। জাতীয় দলে খেলতে হবে, এটা জরুরী না। আমার জায়গায় যারা খেলছে, তারা ভাল করছে। যদি জাতীয় দলে খেলাতে চায়, অবশ্যই আমি খেলব। আর বাকিটা যেটা, আমি খেলছি খেলার জন্যই। আমি এখানে এসে ফাজলামো করছি, তা তো না। পারফরম্যান্স বলেন, যেটা বলেন- তারাও তো ভাববেন।”

    আর অবসরের ব্যাপারে তিনি বলেছেন, সবাই তাকে এরই মাঝে অবসর করিয়ে দিয়েছে, “অভিমান নিয়ে চলিনি আমি কখনোই। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের পর অনেক কারণ বলতে পারতাম। অভিমান নিয়ে চলিও না। অবসরের কথা যেটা বললেন, আমার জায়গা থেকে, সবাই আমাকে (দিয়ে) অবসর নিয়ে নিয়েছে। আমি খেলছি, সেটা উপভোগ করছি। মাঠ থেকেই অবসর নিতে হবে- এমন সিদ্ধান্ত নিইনি। ক্রিকেট বোর্ড মনে করলে করব।”