• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    টটেনহামকে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে নতুন রেকর্ড গড়ল লিভারপুল

    টটেনহামকে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে নতুন রেকর্ড গড়ল লিভারপুল    

    ফুল-টাইম

    টটেনহাম হটস্পার ০-১ লিভারপুল


    গত বছরের জানুয়ারিতে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারের পর থেকে প্রিমিয়ার লিগে আর হারেনি লিভারপুল। গত সপ্তাহে লিগে টানা অপরাজিত থাকার সময়টা এক বছর পেরিয়েছে তাদের। প্রিমিয়ার লিগে টানা জয়, অপরাজিত থাকার সব রেকর্ডই যেন নিজেদের করে নিতে বদ্ধপরিকর ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। সে পরিকল্পনায় আরও এক ধাপ এগুলো তারা। টটেনহাম হটস্পারকে তাদেরই মাঠে ১-০ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে ২১ ম্যাচ শেষে সর্বোচ্চ পয়েন্টের রেকর্ড এখন ‘অল রেড’দেরই (৬১)। লিগে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা ৩৮ ম্যাচে নিয়ে গেল তারা।

    এই মৌসুমে লিগে অ্যানফিল্ডে দেখা হয়েছিল দু’দলের। পিছিয়ে পড়েও জয় ছিনিয়ে এনেছিল লিভারপুল। অ্যানফিল্ডের মত এবারও ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল লিভারপুল। ২ মিনিটে দুর্দান্ত এক প্রতি-আক্রমণে মোহামেদ সালাহর পাস থেকে ডিবক্সে বল পান রবার্তো ফিরমিনো। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের শট ফিরিয়ে দেন টটেনহামের অভিষিক্ত ডিফেন্ডার জাফেত তানগাঙ্গা। ফিরতি বল আসে অ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইনের পায়ে। তার জোরাল শট স্পার্স গোলরক্ষক পাউলো গাৎজানিগাকে পরাস্ত করলেও প্রতিহত হয় বারপোস্টে। ম্যাচের শুরুতেই স্পার্সকে চাপে ফেলে দেওয়ার পর আর পেছনে ফিরতে হয়নি ক্লপের দলকে। প্রথম ২০ মিনিটেই গোলের আরও তিনটি সুযোগ পেয়েছিল লিভারপুল, কিন্তু সালাহ-মানেরা কাজের কাজটি আর করতে পারেননি।

     

     

    অ্যানফিল্ডে হারলেও লিভারপুলের সামনে রীতিমত দুর্ভেদ্য দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টটেনহাম গোলরক্ষক পাউলো গাৎজানিগা, নিজেদের মাঠেও তিনি ছিলেন দুর্দান্ত। ২২ মিনিটে ভার্জিল ভ্যান ডাইককে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে অবিশ্বাস্য সেভে ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে পজেশন, গোলের সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে থাকা লিভারপুলই অবশ্য লিড নিয়েছে শেষদিকে। ৩৭ মিনিটে সালাহর পাস থেকে টটেনহামের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁ-পায়ের দুর্দান্ত শটে দলকে এগিয়ে নেন ফিরমিনো।

    প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত ক্লপের দল। ডাভিনসন সানচেজকে কাটিয়ে গাৎজানিগাকে একা পেয়ে যান সালাহ, কিন্তু তাঁর বাঁকানো শট অল্পের জন্য চলে যায় স্পার্স গোলের বাইরে দিয়ে। প্রথমার্ধের পুরোটা সময়ই ডাগউটে আলি-সনদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করছিলেন টটেনহাম ম্যানেজার হোসে মরিনহো। নিষ্প্রভ প্রথমার্ধের মত তার হাফটাইম টিমটকে রীতিমত বদলে যায় টটেনহাম। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিটেই গোলের দুটি সুযোগ তৈরি করেছিল মরিনহোর দল, কিন্তু হ্যারি কেইনের ইনজুরিতে উইঙ ছেড়ে ‘ফলস নাইন’ রোলে খেলা লুকাস মউরা ব্যর্থ হয়েছেন প্রতিবারই। কেইনের ইনজুরিতে আক্রমণে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের দিকে তাকিয়ে ছিল টটেনহাম।

     

     

    কিন্তু নিজেকে একেবারেই মেলে ধরতে পারেননি তিনি, ৬৮ মিনিটে পিছিয়ে থাকলেও তাকে উঠিয়ে জিওভানি লো সেলসোকে নামিয়ে দেন মরিনহো। ড্যানি রোজের বদলি হিসেবে নামেন এরিক লামেলা। আক্রমণের ধার বাড়িয়ে ভ্যান ডাইকদের আরও চেপে ধরে টটেনহাম। লামেলা-লো সেলসো নামলেও দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন হিউঙ-মিন সন। কিন্তু মউরার মাইনাসে শট গোলেই রাখতে পারেননি তিনি। তবে শেষদিকে খুব সম্ভবত ম্যাচের সেরা সুযোগটা পেয়েছিলেন লো সেলসোই। আক্রমণের ডানপ্রান্ত থেকে সার্জ অরিয়েরের ক্রসে গোলের একেবারে সামনে থেকে ফাঁকা পোস্ট পেয়েও শট বাইরে মারেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার।

    গোলের দুটি সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করার পর আর ম্যাচে ফেরা হয়নি টটেনহামের, ব্যবধান বাড়াতে পারেনি লিভারপুলও। তাতে অবশ্য ভ্রূক্ষেপ হয়তো থাকবে না ক্লপের। লেস্টার সিটি হেরে যাওয়ায় প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষস্থানটা আরও সুসংহত হল তাদের। ‘ফক্স’দের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ক্লপের দলের লিড গিয়ে দাঁড়াল ১৬ পয়েন্টে। শুধু পয়েন্ট টেবিল নয়, মরিনহোর সাথে ব্যক্তিগত দ্বৈরথে আরও এগিয়ে গেলেন ক্লপ। জার্মান ম্যানেজারের বিপক্ষে ১১ দেখায় মাত্র ২বার জিতেছেন ‘দ্য স্পেশাল ওয়ান’, ক্লপের জয় ৬টি।