• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    কতদিন খেলব, সেই স্বাধীনতা তো আমার আছে : মাশরাফি

    কতদিন খেলব, সেই স্বাধীনতা তো আমার আছে : মাশরাফি    

    শুরুতে মিড-অফ, মিড-অনের দিকে ছিলেন, পরে এসেছিলেন ফাইন লেগে। মাশরাফি বিন মুর্তজার হাতেই গেল ক্রিস গেইলের ক্যাচটি, তিনি সেটি নিলেন এক হাতে। মোটামুটি বুকসমান উচ্চতায় ক্যাচ, সাধারণত যেটি নিতে দুই হাত বাড়ানোর কথা তার। তবে বাঁহাতে ভারী ব্যান্ডেজ মাশরাফির, একটু সময় পেয়েছিলেন বলে এক হাতে নিতে পেরেছেন। বলের গতি বেশি থাকলে কী হতো, সেটি জানতেন না তিনি। পরে মাহমুদউল্লাহ এসেও ‘কুর্নিশ’ জানিয়ে গেলেন মাশরাফিকে, হাতে ১৪টি সেলাই নিয়ে খেলা, ৪ ওভার বোলিং করা, ফিল্ডিংয়ে অমন ক্যাচ, এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা- মাহমুদউল্লাহ এসব কিছু ভাবতেই পারেন না। 

    তবে মাশরাফির সেই ক্যাচটি ঠিক আলোচনার বিষয় নয়। 

    টুর্নামেন্টে বেশ ভাল একটা পজিশনে থেকেও টানা দুই ম্যাচ হেরে ঢাকা প্লাটুনের বিদায় নেওয়া, মিরপুরে ব্যবহৃত উইকেটে খেলার পর শুরুর দিকে সেটি ব্যাটসম্যানদের জন্য কুরুক্ষেত্র বনে যাওয়া- আলোচ্য নয় ঠিক সেসবও। মাশরাফি বিন মুর্তজার ক্ষেত্রে ব্যাপারটি তাই হয়ে যাচ্ছে অবসরকেন্দ্রিক। মাশরাফি আগেরদিন যা বলেছিলেন, মোটামুটি তেমনই বললেন এদিনও। বললেন, জাতীয় দলের চিন্তা বাদ দিয়ে কতদিন খেলবেন, সে স্বাধীনতা তার থাকা উচিৎ। মাহমুদউল্লাহরও মত, অবসরের দায়টা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ সেই ক্রিকেটারের ওপরই। 

    রবিবার বিসিবি জানিয়েছে, মাশরাফির অনুরোধে তাকে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। নতুন ক্রিকেটারকে সুযোগ করে দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাশরাফি। আর অবসরের ব্যাপারে বিসিবি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, তারা আয়োজন করেই বিদায় দিতে চান মাশরাফিকে, তবে সেটি নেওয়া না নেওয়ার ভার তারই। 

    মাশরাফি বলছেন, এমন কোনও ভাবনা নেই তার, “ক্রিকেট বোর্ডে কাল পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছিলাম। আজ থেকে তো নেই। বিসিবি অভিভাবক- তাদের বিরুদ্ধে যাওয়াকে গর্ব মনে করিনি কখনোই। ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ প্রাধান্য হওয়া উচিৎ বোর্ড। তবে বিসিবিকে ধন্যবাদ, আমাকে অবসর (আয়োজন) দিতে চাওয়ার জন্য। আমি তো আগের দিনও বলেছি, ওইরকম ইচ্ছা আমার নাই। কার কাছ থেকে নেব, সেটাও একটা কথা। আমার তেমন কোনও ইচ্ছা নাই।”

    “আমি তো বলেছি, আমি খেলছি। আপনারা আমার খেলাটা নিয়ে এসেছেন জাতীয় দলের ক্ষেত্রে। একটা ক্রিকেটার তো জাতীয় দলকে কেন্দ্র করেই খেলে না। আমি আনন্দ পাচ্ছি বলেই খেলছি। 

    “আমার তো অতটুকু স্বাধীনতা আছে, আমি খেলতে চাই। কেউ জোর করলে তো আমি অবসর নেব না। অনেকেই আছে, মাঠ থেকে অবসর নেয়নি। হাবিবুল বাশার সুমন, বাংলাদেশের ক্রাইসিস মোমেন্টে অনেক রান করেছে, সেও তো নেয়নি। সুজন ভাই হয়তো করতে পেরেছে।” 

    অবশ্য একসময় মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার কথা চিন্তা করেছিলেন তিনি, “একটা  সময় হয়তো ভাবতাম যে মাঠ থেকে করবো কি করবোনা। দেখা যাক। এখন মনে হচ্ছে প্রয়োজন নেই।”

    অধিনায়কত্বের ব্যাপারে তিনি বলছেন, বিসিবি চাইলে সে দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন তিনি, “অধিনায়কত্ব যদি বিসিবি থেকে বলে এখনই ছেড়ে দিতে তাহলে ছেড়ে দেব। সমস্যা নাই। আমার সিদ্ধান্ত আমার কাছে থাক।”

    আর মাহমুদউল্লাহ বলছেন, “প্রথমে যেটা বলতে চাই, এটা মাশরাফি ভাইয়ের সিদ্ধান্ত। হয়তো কথা হয়েছে আমার সঙ্গে, তবে সেটা শেয়ার করতে পারব না। উনার সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, এরপর ভালবেসেছি, এরপর পেশা হয়েছে। কখনো ভাবিনি ক্রিকেটারই হবো। কারও কথায়ও খেলা শুরু করিনি, কারও কথায়ও শেষ করতে হবে- এমন পছন্দ করি না। এটা একান্ত আমার বিষয়, আমাকে এই দায়ের ভারটা ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। মাশরাফি ভাইয়ের ক্ষেত্রেও তাই।” 

    “মাশরাফি ভাইকে কুর্নিশ, ১৪টি সেলাই নিয়ে খেলেছেন, ভাল বোলিং করেছেন, ভাল ক্যাচ নিয়েছেন। বলটা স্পিন করছিল, গেইলের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ছিল।”