• ভারতের নিউজিল্যান্ড সফর
  • " />

     

    সেই সুপার ওভারেই আবারও তরী ডুবল নিউজিল্যান্ডের

    সেই সুপার ওভারেই আবারও তরী ডুবল নিউজিল্যান্ডের    

    ভারত ২০ ওভারে ১৭৯/৫

    নিউজিল্যান্ড ২০ ওভারে ১১৭৯/৫

    ভারত সুপার ওভারে জয়ী


    লর্ডস ফিরে এলো হ্যামিল্টনে, তবে একটু অন্যভাবে। সুপার ওভারে এবারও কপাল পুড়ল নিউজিল্যান্ডের। তবে সেবার দুর্ভাগ্যকে দায়ী করতে পারত কিউইরা, এবার শুধু নিজেদেরই দায়ী করতে পারে। নইলে ৬ উইকেট হাতে রেখে যখন ৪ বলে ২ রান দরকার, সেটা নিতে না পারার জন্য আসলে তো কোনো অজুহাত থাকে না নিউজিল্যান্ডের।

    ভারতের আসলে এই ম্যাচ জেতারই কথা ছিল না। আজকের দিনটা হওয়ার কথা ছিল একজনেরও। কেন উইলিয়ামসনকে টি-টোয়েন্টিতে কখনো হটকেক হিসেবে দেখা হয় না, তার ব্যাটিংয়ে এমন কোনো দানবীয় ব্যাপারও নেই। তবে আজকের ইনিংসটা ঝড় বললেও আসলে ঠিক বলা হবে না। প্রায় ২০০ ছুঁই স্ট্রাইক রেটে ৪৮ বলে ৯৫ রানের ইনিংসটা উইলিয়ামসনের তো বটেই, টি-টোয়েন্টির মনে রাখার মতো ইনিংসগুলোর একটি। কিন্তু উইলিয়ামসন সেটি মনে রাখবেন ভুল কারণে, ইতিহাসও যে পরাজিতদের বেশিদিন মনে রাখে না!

    অথচ শেষ ওভারে যখন ৯ রান দরকার, ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের দিকে হেলে। রস টেলর শামির বলে ছয় মেরে সেটি প্রায় পকেটে নিয়ে এলেন। চার বলে দুই রান দরকার, উইলিয়ামসন স্ট্রাইকে। নিউজিল্যান্ড জয় নয়, কিউই অধিনায়ক সেঞ্চুরি পাবেন কি না সেটি নিয়েই তখন জল্পনা কল্পনা। কিন্তু শামির বাউন্সারটা স্টিয়ার করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন উইলিয়ামসন।  পরের বলে সেইফের্ট ব্যাট লাগাতে পারলেন না। দুই বলে দরকার দুই। এরপরের বলটাও ব্যাটে লাগাতে পারলেন না সেইফের্ট, তবে এবার টেলর প্রান্তবদল করে এক রান নিয়ে নিলেন। রাহুল স্টাম্পে লাগাতে পারলে অবশ্য অন্য কিছুও হতে পারত। শেষ বলে ১ রান দরকার, কিন্তু টেলর মারতে গিয়ে বল টেনে নিয়ে এলেন স্টাম্পে। ম্যাচ সুপার ওভারে।

    সেখানেও আবার নাটক। বুমরা বল করতে এলেন। আজ নিজের ৪ ওভারে আগে ৪৪ রান দিয়েছিলেন, বুমরাকে একদমই বুমরা মনে হচ্ছিল না অনেক দিন পর। সুপার ওভারেও বুমরার হতাশা কাটল না। প্রথম দুই বলে দুই রান, পরের বলে উইলিয়ামসন স্কয়্যার লেগের ওপর দিয়ে ছয় মারলেন। পরের বলে আরও একটি দুর্দান্ত শট, এবার স্কুপ করে চার। শেষ বলে আবার চার মারলেন গাপটিল। এক ওভারেই হয়ে গেল ১৭ রান।

    সেই রান তাড়া করতে গিয়ে নামলেন আজকে ভারতের ইনফর্ম রাহুল আর রোহিত। কিন্তু ম্যাচটা মুঠো গলে বেরিয়ে যাআচ্ছিল, প্রথম চার বলে হলো মাত্র ৮ রান। সাউদির শেষ দুই বলে দরকার ১০ রান, স্ট্রাইকে রোহিত। পঞ্চম বলটা ইয়র্কার দিতে গিয়ে মিস করলেন সাউদি, লং অনের ওপর দিয়ে ছয় মারলেন রোহিত। পরের বলটা ইয়র্কার দিতে গিয়ে আবারও ভুল করলেন সাউদি, রোহিত এবার লং অফ দিয়ে মারলেন ছয়। ক্যারিয়ারে প্রথমবার সুপার ওভারে ব্যাট করেই জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন হিটম্যান।

    অথচ তার আগে উইলিয়ামসনের ইনিংসটা নিয়েই গল্প হতে পারত। ১৮০ রানের লক্ষ্যটা সহজ ছিল না মোটেই, ৫২ রানের ভেতর ফিরে গিয়েছিলেন দুই ওপেনার। উইলিয়ামসন খেলতে শুরু করলেন দারুণ সব শট। বুমরাকে ইনসাইড আউট করে চার মেরেছেন, আবার জাদেজার বলে জায়গা বানিয়ে স্লগ সুইপ আর ড্রাইভের মাঝামাঝি অবিশ্বাস্য একটা শটও খেলেছেন। স্যান্টনার ও ডি গ্র্যান্ডোম ফিরে গেলেও উইলিয়ামসন ভারতের বোলারদের থিতু হতেই দিচ্ছিলেন না। ৬ ওভারে ৬৬ রান দরকার যখন, জাদেজার পর পর দুই বলে দুইটি ছয় মেরেছেন। যখন ৪ ওভারে ৪৩ রান দরকার, বুমরার বলে পর পর তিনটি চার মেরেছেন। কিন্তু এতকিছুও আর যথেষ্ট হয়নি। সুপার ওভারে সেই হতাশাই যে সঙ্গী হয়েছে!