• জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশ সফর
  • " />

     

    তামিমকে একবারের জন্য হলেও আউট করতে চান মুশফিক

    তামিমকে একবারের জন্য হলেও আউট করতে চান মুশফিক    

    রেকর্ডের প্রতি তামিম ইকবালের বাড়তি আগ্রহের কথা বাংলাদেশ দলের সতীর্থেরা সবাই কমবেশি জানেন। নিজের কোন ম্যাচে কত রান, কোন মাইলফলক টপকেছেন কবে- সেসবও তামিমের নখদর্পণে। মুশফিকুর রহিম যে তাকে টপকে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন, সেটা সবার আগে বোধ হয় তামিমই জেনে গেছেন। মুশফিক অবশ্য জানলেন ম্যাচের পর, তবে আসলে কথা হলো তামিমের সঙ্গে তার এই প্রতিযোগিতা নিয়ে। মিরপুর টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির পর সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক অকপটেই বললেন, দুজনের মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে। সেটার অংশ হিসেবেই তামিমকে একবার অন্তত আউট করতে চান!

    তামিম জানলেও মুশফিক অবশ্য জানেন না, অনেক অনেক দিন পর তামিমকে টপকে গেলেন মুশফিক। মুশফিক অবশ্যই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন আগে, তবে এক হাজার রানের ক্লাবে দুজন একই সঙ্গে ঢুকেছিলেন। এরপর তামিম দুই, তিন হাজার ক্লাবে ঢুকেছেন মুশফিকের আগেই। এরপর চার হাজারের পথে তামিম একটু পিছিয়ে পড়েছেন, তবে সেখানেও মুশফিকের আগেই ঢুকেছেন। তবে এরপর মুশফিক গিয়ার বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকখানি, ওদিকে তামিম খানিকটা পিছিয়ে গেছেন। আজকের ডাবল সেঞ্চুরিতে পেরিয়ে গেলেন সতীর্থকে।

    মুশফিক সবসময়েই তামিমের গুণমুগ্ধ। দুজনের এই দ্বৈরথেও সতীর্থকে নিয়ে সেই অনুরাগের প্রতিফলন, ‘আমি সব সময়ই বলে এসেছি তামিম আমার সবথেকে প্রিয় ব্যাটসম্যান। ওর সঙ্গে সব সময় আমার অন্যরকম একটা প্রতিযোগিতা থাকে। সেটা সুস্থই। আমি ওকে অনেক অনুপ্রাণিত করি,  ও আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে। আমি জানি আমার সাফল্যে ও অনেক খুশি এবং ওর সাফল্যে আমিও অনেক খুশি। এরকম স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকলে দলের জন্য ভালো। আমি মনেপ্রাণে চাই ও যেন সর্বোচ্চ রান করে এবং এটাও চাই ওর থেকে যেন এক রান আমি বেশি করি।’

     কিন্তু সর্বকালের সেরা হিসেবে কাকে মনে করেন মুশফিক? এখানেও তিনি অকপট, ‘আমি কখনো নিজেকে সর্বকালের সেরা মনে করি না। আপনারা অনেক সময়ই বলেছেন যে আমার টেকনিক,  ধৈর্য বা অনেক কিছু সেরা…এটা হতে পারে কিন্তু আমার কাছে কখনো মনে হয় না। আমার ব্যাটিংয়ের রিপ্লে বা হাইলাইটস দেখি তখন নিজের কাছে অতটা ভালো লাগে না। তখন মনে হয় তামিমের মতো ওই ড্রাইভটা যদি করতে পারতাম বা সাকিবের মতো ওই কাট বা অন ড্রাইভ করতে পারতাম। অনেক কিছু মনে হয়।’

    তবে নিজের সীমাবদ্ধতার সঙ্গে শক্তির জায়গাও জানা আছে মুশফিকের, ‘সব মিলে আমাকে আল্লাহ একটা জিনিস দিয়েছে, আমার মাথাটা অন্যজনের থেকে একটু হলেও বেটার। যেটা আমি সব সময় ব্যবহার করার চেষ্টা করি। আমি আমার সীমাবদ্ধতা জানি এবং কখন কী করার চেষ্টা করতে হয় সেটা জানি। সেগুলো থেকে আমি শিখতে পারি এবং সেগুলো করার চেষ্টা করি। এখন পর্যন্ত সেগুলোই করার চেষ্টা করি এবং যা হয়েছে সেগুলোর কম্বিনেশনের ফল।’

    একটা সময় বাংলাদেশের টেস্ট রেকর্ডের প্রায় সবই ছিল তামিমের। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডটা তামিমের কাছ থেকে হাতবদল হয়ে এখন মুশফিকের কাছে। সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড তো হয়েছেই। সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডেও এখন তামিমের সাথে আছে মুমিনুল। মুশফিকও সেটা জানেন। এই কদিন আগেই বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইনিংসটি খেললেন তামিম। মুশফিক সতাকে টপকাতেও চান। তবে আরেকটা চাওয়া আছে, তামিমকে একবারের জন্য হলেও বল হাতে আউট করার, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটে সব রেকর্ড কিন্তু ওর। ও একটা বেঞ্চ মার্ক সবসময় করেছে। ৩৩৪। একজন খেলোয়াড় ওটা করে দিলে সব সময় কথা হয় যে কে কত তাড়াতাড়ি ওটা ভাঙতে পারে।  আমরা হয়তো ওর কাছাকাছি যেতে পারি। আজ পর্যন্ত অবশ্য হয়নি। ইনশাআল্লাহ সামনের কোনো বার যেন ওকে টপকাতে পারি। আমরা ইচ্ছা আছে আমার বলে ওকে একবার যেন আউট করতে পারি।’

    মুশফিক অবশ্য বল যে একেবারে করেননি তা নয়। কদিন আগেই বিসিএলে বল করেছেন, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একটি উইকেটও আছে তার। বল অবশ্য তামিমও করেছেন প্রথম শ্রেণিতে, তবে উইকেট নেই কোনো। তামিম কি চ্যালেঞ্জটা নেবেন?