• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    অ্যানফিল্ডে ভাগ্য ফিরল লিভারপুলের

    অ্যানফিল্ডে ভাগ্য ফিরল লিভারপুলের    

    ফুল টাইম
    লিভারপুল ২ - ১ বোর্নমাউথ


    প্রথম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা হাতছোয়া দূরত্বে, লিগে তাদের ধাওয়া করার মতো অবস্থায় নেই কেউ; সমীকরণ যখন সহজতম হয়ে গেছে, তখনই পা হড়কেছিল লিভারপুল। অবনমনের শঙ্কায় থাকা ওয়াটফোর্ডের কাছে তিন গোল খেয়ে হেরেছিল তারা। সেই হারের আগে-পরে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও চেলসির কাছে হারায় অ্যানফিল্ডের চারপাশে কেমন যেন একটা গুমোট আবহ তৈরি হয়েছিল। তবে শঙ্কার কালো মেঘ সরিয়ে আজ হাসি ফুটল অ্যানফিল্ড অন্তপ্রাণদের মাঝে। সমর্থকদের মনে ভয় ধরিয়ে ম্যাচ শুরু করলেও মোহাম্মদ সালাহ এবং সাদিও মানের গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে লিভারপুল, ১ গোলে পিছিয়ে পড়েও। লিগ শিরোপা থেকে আর মাত্র ৩ জয় দূরে আছে তারা, হাতে আছে আরও ৯ ম্যাচ। জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ৫ এপ্রিল ইতিহাদে প্রথম প্রিমিয়ার লিগ জয়োৎসব করতে পারবে অলরেডরা।

    সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ৪ ম্যাচের ৩ টিতে হেরে কোণঠাসা লিভারপুলের আশার নাম ছিল ‘অ্যানফিল্ড’। এই মাঠে টানা ৪২ ম্যাচে অপরাজিত তারা, তাই তো ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ক্লপের কথায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে ‘অ্যানফিল্ড ফ্যাক্টর’। যদিও ম্যাচের আগে চোটের কারণে অ্যালিসন এবং অ্যান্ড্রু রবার্টসনকে হারিয়েছিলেন ক্লপ, তবুও অ্যানফিল্ডে ভাগ্য ফিরবে, সেই বিশ্বাস ছিল লিভারপুলের। ম্যাচ শুরুর আগে থেকেই ক্লপের চাওয়া মতো উজ্জীবিত ছিল গ্যালারি। দারুণ সেই সমর্থন সঙ্গী করেই জয়ের ধারায় ফিরল লিভারপুল। বোর্নমাউথকে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠে টানা ২২ জয়ের নতুন রেকর্ডও গড়েছে লিভারপুল। ম্যাচ শেষে তাই কপ এন্ডের দিকে এগিয়ে গিয়ে সমর্থকদের বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন ক্লপ। বেশ কয়েক ম্যাচ পর আজ সাইডলাইনে চওড়া হাসি দেখা গেল তার মুখে। 

     


    অবশ্য আজও মন্থর গতিতেই শুরু করেছিল লিভারপুল। সেই সুযোগ নিয়ে প্রথমার্ধের ৯ মিনিটেই অ্যানফিল্ডকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন ক্যালাম উইলসন। মধ্যমাঠ থেকে বোর্নমাউথের লং বল ক্লিয়ার করতে পারেননি লিভারপুলের জো গোমেজ। সেই ভুলের মাশুল গুনেই টানা পঞ্চম ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়ে ক্লপের শিষ্যরা। ঐ ভুল থেকে উইলসন বল দখলে নেওয়ার পর ফিলিপ বিলিং ঘুরে সেই বল চলে যায় বক্সের ডান প্রান্তে থাকা জেফারসন লার্মার দিকে। তার সোজা ক্রসে গোলের একেবারে সামনে থেকে পা ছুঁইয়ে অলরেড সমর্থকদের বুকে কাঁপন ধরিয়েছিলেন উইলসন। 

    সেই গোলের পর গত কয়েক সপ্তাহের ‘ভূতুড়ে’ লিভারপুলের দেখা মিলছিল ক্ষণে ক্ষণে। লিভারপুলের বিপক্ষে শেষ পাঁচ ম্যাচে যে বোর্নমাউথ জালের ধারে কাছে ঘেষতে পারেনি, তারাই অলরেডদের দুর্গে তাদের পেয়ে বসেছিল প্রায়। তবে গোমেজের ভুলে পিছিয়ে পড়া লিভারপুল অপরপ্রান্তে বোর্নমাউথ ডিফেন্ডারদের ভুলগুলো কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে দিয়ে এরপর ম্যাচে ফিরে আসে। 

    ২৫ মিনিটে বদলি জ্যাক সিম্পসন বক্সের বাইরে পজেশন হারিয়েছিলেন। সেখান থেকে মানে বল বাড়ান সালাহর দিকে, যদিও বলের চেয়ে দৌড়ে কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিলেন সালাহ, তবুও দারুণভাবে বক্সের ভেতরে এসে বোর্নমাউথের বটম কর্নার কাঁপিয়ে দিয়ে লিভারপুলকে ম্যাচে ফেরান তিনি। লিভারপুলের হয়ে নিজের শততম ম্যাচ দলকে ছন্দে ফেরানো গোল দিয়ে স্মরণীয় করে রাখলেন সালাহ। 

    সালাহর গোলের পরই লিভারপুলের খেলায় প্রাণ ফিরে আসে। গত কয়েক সপ্তাহের স্লথ ফুটবল ছেড়ে মানে-ফিরমিনোরা স্বভাবজাত আক্রমণাত্মক ধাঁচে খেলা শুরু করেন। অঙ্গভঙ্গি আর মানসিকতার আমূল পরিবর্তনে চড়েই কিনা এরপর ম্যাচে লিড পেতে বেশি ক্ষণ গুনতে হয়নি লিভারপুলের। ৩৩ মিনিটে  বোর্নমাউথের লুইস কুকের ভুল পাস ধরে সোজা মানের দিকে বল বাড়ান ভার্জিল ফন ডাইক। সফরকারী গোলরক্ষক অ্যারন রামসডেলকে বোকা বানিয়ে সেই বল জালে পাঠাতে মানের বেগ পেতে হয়নি মোটেও। 

    যদিও এরপর ৬১ মিনিটে গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের ভুলে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল বোর্নমাউথ। তবে গোললাইন থেকে দারুণভাবে বল ক্লিয়ার করে লিভারপুলকে জয়ের পথে রাখেন জেমস মিলনার। ২৯ ম্যাচ শেষে ৮২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের এখন আছে ২৫ পয়েন্টের বড় লিড।