• ফুটবল, অন্যান্য
  • " />

     

    ক্রুইফ থেকে ফিগো: দলবদলের ১০ গোলমেলে গল্প

    ক্রুইফ থেকে ফিগো: দলবদলের ১০ গোলমেলে গল্প    

    ফুটবলে দলবদল নিয়মিত ঘটনা। শত্রুপক্ষেও নাম লেখানোর নজির আছে অহরহ। দলবদলে খেলোয়াড় নিয়ে দরকষাকষি প্রায়ই খবরের কাগজে শিরোনাম হয়। তবে ফুটবল ইতিহাসে এমন কিছু দলবদলের ঘটনা আছে যা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে 'কুখ্যাত' সব বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তেমন ১০ টি দলবদলের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে এই লেখায়। 

    ১০. জন ওবি মিকেল

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে চেলসি

    তার চেলসিতে আসার সময়ের কথা মনে করে জন অবি মিকেল নিজেই বলেছিলেন, “এটা জটিল বিষয় ছিল।” নরওয়েজিয়ান ক্লাব লিন অসলো থেকে ওবি মিকেলের চেলসিতে আসার বিষয়টি বর্ণনা করতে আক্ষরিকভাবেই জটিল শব্দটি ব্যবহার করা যায়। ২০০৫ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সী মিকেলের প্রতিভা দেখে তাকে দলে টানতে উদ্বুদ্ধ হয় দুই ইংলিশ ক্লাব চেলসি এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুটি ক্লাবই লিন অসলোর সঙ্গে তখন প্রাক-চুক্তিও করে বসে। তবে চূড়ান্তভাবে সাইন করানোর সময় মিকেলকে নিয়ে দুই ক্লাবের মাঝে তৈরি হওয়া জটিলতা নিরসনে তখন ফিফাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। ফিফা দুই ক্লাবের যেকোনো একটিকে বেছে নিতে পরামর্শ দেয় মিকেলকে। নাইজেরিয়ান মিডফিল্ডার মিকেল তখন চেলসিকে নিজের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন। তবে মিকেলকে দলে টানতে চেলসিকে তখন ফিফার নির্দেশে ম্যান ইউনাইটেডকে ১২ মিলিয়ন পাউন্ড দিতে হয়। অদ্ভুত জটিল সেই প্রক্রিয়ায় ম্যান ইউনাইটেড মিকেলকে আনুষ্ঠানিকভাবে সাইন না করিয়েও তার দলবদল থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করে।

     

    ৯. কার্লোস তেভেজ 

    ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ম্যানচেস্টার সিটি

    তৃতীয় পক্ষের মালিকানায় থেকে ২০০৭-০৯ সাল পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলেছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড কার্লোস তেভেজ। ম্যান ইউনাইটেড স্থায়ীভাবে তাকে দলে টানবে বলেও জানিয়েছিল। তবে ম্যানচেস্টার সিটি তখন ইংলিশ ফুটবলের এলিটদের চ্যালেঞ্জ জানাতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। আর ইউনাইটেডকে টপকে তেভেজকে দল টানতে পারাটা হবে সেই পথে বিশাল এক অর্জন। তৃতীয়পক্ষের কাছ থেকে তেভেজকে তখন কিনে নিয়েছিল তারা।


    এরপর রেড ডেভিলদের ঘাঁটি সালফোর্ডের দিকে মুখ করে তেভেজের ছবি সম্বলিত বেশ কয়েকটি বিলবোর্ডও স্থাপন করে সিটি। তখনকার ইউনাইটেড ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন সিটির সেই কাজে বেশ ক্ষুদ্ধ হয়েছিলেন, গণমাধ্যমে সিটিকে তখন ‘ক্ষুদ্র মানসিকতার ছোট ক্লাব’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন তিনি।

     

    ৮. জন রবার্টসন

    নটিংহাম ফরেস্ট থেকে ডার্বি কাউন্টি

    নটিংহাম ফরেস্টে পিটার টেইলর এবং ব্রায়ান ক্লফ সোনালি সময় কাটিয়েছিলেন, নিজেদের প্রথম লিগ শিরোপাও জিতেছিলেন ফরেস্টের হয়ে। দীর্ঘ সময় একই ক্লাবে থেকে তাদের মাঝে দারুণ বন্ধুত্বে ছেদ পড়ে যখন টেইলর ১৯৮২ সালে ফরেস্টের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ডার্বি কাউন্টির ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তবে টেইলর সেখানেই থামেননি, ফরেস্টের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার জন রবার্টসনকে ডার্বিতে টানেন তিনি। দলবদলে খুব একটা সমস্যা ছিল না, রবার্টসনও তখন ক্যারিয়ারের শেষের দিকে ছিলেন। তবে এই দলবদল সম্পন্ন করার আগে ক্লফের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাই করেননি টেইলর। একটি দাতব্য কাজে ব্যস্ত থাকার সময় দলবদলের খবরটি কানে আসে ক্লফের। তখন থেকেই দুজনের মাঝে কথা-বার্তা বন্ধ হয়ে যায়। সেই দলবদলের কারণে টেইলরের ওপর এতটাই রেগে ছিলেন ক্লফ যে, একবার তো বলেই দিয়েছিলেন যদি কখনও দেখেন রাস্তায় টেইলরের গাড়ি নষ্ট হয়ে আছে, তিনি সাহায্য তো করবেনই না, উল্টো তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেবেন। যদিও ১৯৯০ সালে টেইলর মারা যাওয়ার পর টেইলরের সঙ্গে কথা-বার্তা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আফসোস করেছিলেন তিনি ক্লাফ।

     

    ৭. রবিন ফন পার্সি 

    আর্সেনাল থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

    প্রায় ৮ বছর আর্সেনালের হয়ে খেলার পর ২০১২ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে পাড়ি জমান ‘ফ্লাইং ডাচম্যান’ রবিন ফন পার্সি। ফন পার্সি যখন আর্সেনাল ছেড়ে গিয়েছিলেন ততদিনে আর্সেনাল সমর্থকরা ‘কিংবদন্তিদের বিদায়’ বিষয়টির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছিলেন অনেকটা। কারণ সোনালি সময়ের প্যাট্রিক ভিয়েরা, থিয়েরি অরি এমনকি সামির নাসরি সবাই একে একে বিদায় নিচ্ছিলেন এমিরেটস স্টেডিয়াম থেকে। তবুও ফন পার্সির বিদায় তাদের হৃদয়ে শেলের মতো বিঁধেছিল। এই দলবদলে একটা ব্যাপার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। আর্সেনাল আর সরাসরি ম্যান ইউনাইটেডের সমকক্ষ ক্লাব নয়, এখন বোধ হয় চাইলেই ইউনাইটেড গানারদের ডেরা থেকে নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড়টিকে নিয়ে যেতে পারে!


    তবে আর্সেনাল সমর্থকদের কষ্ট আরও বেড়ে যায় যখন ইউনাইটেডে গিয়ে ফন পার্সি বলেছিলেন, “এই ধরনের কঠিন সময়ে আমার মনে কোণে থাকা ছোট বাচ্চাটির কথাই শোনার চেষ্টা করি আমি, আর সেই বাচ্চাটি তখন ইউনাইটেডের জন্যই চিৎকার করছিল।”

     

    ৬. অ্যাশলি কোল

    আর্সেনাল থেকে চেলসি

    ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকা অবস্থায় সেই ক্লাবকে না জানিয়ে খেলোয়াড়ের সঙ্গে দলবদল নিয়ে আলোচনা করা ফুটবলারদের জন্য একরকম পাপই। তবে ২০০৫ সালে তখনকার আর্সেনাল ফুটবলার অ্যাশলি কোলকে দলে টানতে সেই 'গর্হিত' কাজটিই করেছিলেন হোসে মরিনহো এবং চেলসি। আর্সেনালে নিজের চুক্তি নিয়ে তখন সন্তুষ্ট ছিলেন না কোল। সেটি আঁচ করতে পেরে আর্সেনালকে না জানিয়ে দলবদল নিয়ে আলোচনার জন্য একটি রেস্টুরেন্টে কোলের সঙ্গে দেখা করেন মরিনহো।

    আর সেই বৈঠকের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্রিমিয়ার লিগ উলটো কোল, মরিনহো এবং চেলসিকে জরিমানাও করে। এর পরের বছর অবশ্য বৈধ পন্থাতেই কোল উত্তর লন্ডনের আর্সেনাল ছেড়ে পশ্চিম লন্ডনের চেলসিতে পাড়ি জমান, তবে আজও ইংলিশ ফুটবলে সেই দলবদলটিকে খুব একটা ভালো চোখে দেখে না কেউ।

     

    ৫. ইয়োহান ক্রুইফ

    আয়াক্স থেকে ফেয়েনুর্দ

    ইয়োহান ক্রুইফ এবং আয়াক্সকে পৃথক করা কঠিন। আয়াক্সের একাডেমি থেকে শুরু হয়েছিল ক্রুইফের ফুটবল যাত্রা, সিনিয়র পর্যায়ে ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় আয়াক্সে খেলেছিলেন এই ডাচ ফুটবল জাদুকর। ক্রুইফের হাতে ধরে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর মাঝে নিজেদের তুলে এনেছিল আয়াক্স। দ্বিতীয় দফায় ১৯৮১ সালে আবারও নিজের শৈশবের ক্লাব আয়াক্সে ফিরে এসেছিলেন, খেলছিলেনও দারুণ। তবে ৩৬ বছর বয়সী ক্রুইফকে নতুন চুক্তি দিতে আয়াক্স বোর্ড কিছুটা গড়িমসি করছিল, ক্রুইফ বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। বয়স বাড়লেও তার শিল্পের ধার এখনও অটুট আছে বোঝাতেই তখন আয়াক্সের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ফেইনুর্দে পাড়ি জমান ক্রুইফ।


    ফেয়েনুর্দের হয়ে এরপর ‘ডাবল’ জয় করেন তিনি, ‘ডাচ ফুটবলার অফ দ্য ইয়ারে’র পুরস্কারও তার হাতে ওঠে। পরবর্তীতে এক সাক্ষাৎকারে ক্রুইফ তার ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন নিজের আত্মজীবনীতে, “আয়াক্স যখন আমাকে তাচ্ছিল্য করে বিদায় করেছিল, আমি ফেইনুর্দের মাধ্যমে আয়াক্সকে আমার মূল্য বুঝিয়েছিলাম।” অবশ্য এরপর ১৯৮৫ সালে ম্যানেজার হিসেবে আয়াক্সে ফিরে এসেছিলেন এই কিংবদন্তি। ২০১৭ সালে ক্রুইফের নামেই নিজেদের বর্তমান স্টেডিয়ামের নামকরণ করে আয়াক্স।

     

    ৪. রবার্তো ব্যাজ্জিও

    ফিওরেন্টিনা থেকে জুভেন্টাস

    ইতালিয়ান ফুটবলে জুভেন্টাস এবং ফিওরেন্টিনার দ্বৈরথ খুব একটা সমাদৃত নয়। তাই এই দুই দলের মাঝে খেলোয়াড় বেচা-কেনা নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হওয়ারই কথা। তবে ১৯৯০ সালে ফিওরেন্টিনা যখন সে সময়ের বিশ্বরেকর্ড ৮ মিলিয়ন পাউন্ড ফি-তে রবার্তো ব্যাজ্জিওকে জুভেন্টাসের কাছে ছেড়ে দিয়েছিল, তখন ‘ভিওলা’ সমর্থকরা সেটি মেনে নিতে পারেননি। হাজারো ফিওরেন্টিনা সমর্থক ক্লাবের দপ্তরের সামনে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়ে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি বেগতিক থেকে ক্লাব সভাপতি তখন স্টেডিয়ামে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এরপর পুলিশে-সমর্থকে ভয়াবহ দাঙ্গা শুরু হয়, সেই দাঙ্গায় প্রায় ৫০ জন আহত হন এবং ৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


    তবে সেখানেই ব্যাজ্জিও-ফিওরেন্টিনা-জুভেন্টাস কাহিনী শেষ হয়নি। সেই দলবদলের পরের মৌসুমে যখন ফিওরেন্টিনা এবং জুভেন্টাস একে অপরের মুখোমুখি হয়।সে ম্যাচে ব্যাজ্জিওকে পেনাল্টি নিতে বলা হয়, তবে ফিওরেন্টিনা গোলরক্ষক জিয়ানমাত্তেও মারেজ্জিনি তার পেনাল্টি নেওয়ার কৌশল খুব ভালোভাবে জানেন উল্লেখ করে তিনি পেনাল্টি নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে সেই পেনাল্টি নিতে এসে মিস করেন আরেক জুভেন্টাস খেলোয়াড় লুইজি ডি আগস্তিনি, জুভেন্টাস সেই ম্যাচে ১-০ গোলে পরাজিত হয়। ম্যাচ শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় ফিওরেন্টিনা সমর্থকদের ছুড়ে দেওয়া একটি স্কার্ফ হাতে তুলে নেন ব্যাজ্জিও এবং বলেছিলেন তার ‘হৃদয় এখনও বেগুনি’ (ফিওরেন্টিনা ক্লাব মূলত বেগুনি রংকে নিজেদের হোম জার্সিতে ব্যবহার করে)। সেই ঘটনার কয়েকদিন পর প্রায় ৩০০ জুভেন্টাস সমর্থক ক্লাবের অনুশীলনের সময় হাজির হয়ে ব্যাজ্জিওর কথার প্রতিবাদ করেছিলেন।

     

    ৩. সল ক্যাম্পবেল

    টটেনহাম থেকে আর্সেনাল

    প্রায় ১২ বছর টটেনহামে খেলেছিলেন সল ক্যাম্পবেল, ক্লাব ছাড়ার সময় অধিনায়কত্বও করছিলেন দলের, এককথায় স্পার্স সমর্থকদের চোখের মধ্যমণি ছিলেন তিনি। ২০০০-০১ মৌসুমে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির শেষ দিকে ছিলেন ক্যাম্পবেল, নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তিনি। মূলত নিয়মিত চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার আশাতেই ক্লাব ছাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তিনি। তবে বারবার সমর্থকদের অভয় দিয়েছিলেন ক্যাম্পবেল- আর যাই হোক আর্সেনালে যাবেন না তিনি! কিন্তু শেষ পর্যন্ত টটেনহাম সমর্থকদের হৃদয় ভেঙ্গে দিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্সেনালকেই বানিয়ে ছিলেন নিজের গন্তব্য।


    সেই থেকে আজও টটেনহাম সমর্থকদের কাছে ক্যাম্পবেল ঘৃণিত, টটেনহামের অফিসিয়াল সাপোর্টার্স ট্রাস্ট ক্যাম্পবেলের আর্সেনালে যাওয়ার সিদ্ধান্তটিকে ‘বিশ্বাসঘাতকতার চূড়ান্ত নিদর্শন’ হিসেবে বর্ণনা করে।

     

    ২. লুইস ফিগো 

    বার্সেলোনা থেকে রিয়াল মাদ্রিদ

    লুইস ফিগোর বার্সেলোনা ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার বিষয়টিকে নিছক একটি বিতর্কিত দলবদল বললে মোটেই সুবিচার হবে, এটি ছিল তার চেয়েও বড় কিছু। ফিগো দলবদল করেছিলেন ঠিকই, তবে আজও এই দলবদলের ঘটনা মনে করলে প্রথম যেই নামটি আপনার সামনে আসবে তা হচ্ছে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। ২০০০ সালে রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি নির্বাচনে খুব একটা হালে পানি পাচ্ছিলেন না পেরেজ, তাই সব আলো নিজের দিকে কেড়ে নিতে অভাবনীয় কিছু একটা করে দেখানোর দরকার ছিল।


    পেরেজ ঠিক সেই কাজটাই করলেন, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার অমূল্য রত্ন ফিগোকে দারুণ লোভনীয় এক প্রস্তাব দিলেন। ফিগোর সঙ্গে ১.৬ মিলিয়ন পাউন্ডের এক চুক্তি করলেন পেরেজ। চুক্তি অনুযায়ী যদি পেরেজ সভাপতি নির্বাচনে হেরে যান, তাহলে ফিগো সেই অর্থ রেখে দেবেন। আর যদি পেরেজ জয় পান তাহলে হয় ফিগো বার্সা ছেড়ে রিয়ালে আসবেন। নয়ত পেরেজকে ১৯ মিলিয়ন পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেবেন। পেরেজ জয়ী হবেন না মনে করে তখন সেই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন ফিগো।

    পরবর্তীতে পেরেজ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ৩৮ মিলিয়ন পাউন্ড রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে ফিগোকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নিয়ে এসেছিলেন। ২০০২ সালে যখন রিয়ালের হয়ে ন্যু ক্যাম্পে খেলতে গিয়েছিলেন ফিগো, বার্সেলোনা সমর্থকরা গ্যালারি থেকে তখন ক্রমাগত দুয়োধ্বনি তো দিচ্ছিলেনই, কুখ্যাতভাবে শূকরের মাথাও তার দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন।


    ১. মো জনস্টন 

    নঁতে থেকে রেঞ্জার্স

    স্কটিশ ফুটবলার মো জনস্টন নিজ দেশের ক্লাব সেল্টিকের হয়ে ১৯৮৪-৮৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০০ ম্যাচ খেলেছিলেন, ১৯৮৬ সালে ক্লাবের হয়ে লিগও জিতেছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালে নতুন চ্যালেঞ্জের আশায় ফ্রেঞ্চ ক্লাব নঁতের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন। তবে বছর দুয়েক পরেই আবারও নিজভূম স্কটল্যান্ডে ফেরার বাসনা ব্যক্ত করেন তিনি। স্বাভাবিকভাবে সেল্টিক তাকে দলে আবারও টানার সব আনুষ্ঠানিকতা প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছিল, বিষয়টি নিয়ে প্রেস কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন জনস্টন, সেল্টিক পার্কের বাইরে ক্লাবের জার্সি হাতে ফটো সেশনও হয়ে গিয়েছিল। তবে এরপরই জানা গেল আসলে সেল্টিকে যাচ্ছেন না জনস্টন, বরং আরেক স্কটিশ ক্লাব রেঞ্জার্সে নাম লেখাচ্ছেন তিনি। সেল্টিকের প্রস্তাবিত অর্থের চেয়ে মাত্র ৩ লাখ পাউন্ড বেশি দিয়ে জনস্টনকে দলে নিয়েছিল রেঞ্জার্স।


    তবে এই দলবদল কোনও পক্ষেরই মনঃপুত হয়নি। শেষ মুহূর্তে দলবদলের বিষয়টি ভেস্তে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নাখোশ ছিল সেল্টিক, তবে কট্টর রেঞ্জার্স সমর্থকরাও এই দলবদলটি মেনে নিতে পারেননি, কারণ জনস্টন ছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রোটেস্ট্যান্ট সমর্থক সমৃদ্ধ ক্লাব রেঞ্জার্সের হয়ে খেলা প্রথম হাই-প্রোফাইল ক্যাথলিক ফুটবলার। বিষয়টি এতটাই স্পর্শকাতর ছিল যে, সেল্টিকের বিপক্ষে রেঞ্জার্সের হয়ে প্রথম গোল করার আগ পর্যন্ত তাকে ক্লাবের জার্সি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল রেঞ্জার্সের কিট ম্যান, এমনকি খেলার সময় তাকে চকোলেট বারও দেওয়া হত না। রেঞ্জার্সের হয়ে খেলা দুই বছরে সেল্টিকের বিপক্ষে ৩ গোল করেছিলেন জনস্টন, এমনই একটি গোল করার পর রাগের বশে সেল্টিক সমর্থকরা তার মুখের দিকে পাই ছুড়ে মেরেছিল।