• ক্রিকেট, অন্যান্য
  • " />

     

    নো কান্ট্রি ফর ওল্ড গ্রাউন্ডস

    নো কান্ট্রি ফর ওল্ড গ্রাউন্ডস    

    সেই পুরোনো মাঠে দালান উঠেছে। স্কুলের বিল্ডিংটা বদলে গেছে, চত্বরের ভেতরের পুকুরটা শুকিয়ে গেছে, সেখানে উঠেছে নতুন বিল্ডিং। হোস্টেলে নতুন বিল্ডিং হলো, এরপর বন্ধ হয়ে গেল হোস্টেলটাই। অথবা বাড়ির সামনের রাস্তাটা- এখন আর বড় গাড়ি আসে না এদিকটায়। কিংবা জায়গাটার নামকরণ হয়েছিল এখানে একটা ঘাট ছিল বলে। সে ঘাট নেই, নামটা রয়ে গেছে। 

    ল্যান্ডস্কেপ বদলায়। বদলে যায় চারপাশ। হয়তো তাতে চাপা পড়ে ইতিহাস, বদলে যায় গল্পের চরিত্রগুলো। তৈরি হয় নতুন গল্প। 

    এ তালিকার ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোও খানিকটা তেমন। তাদের আছে আলাদা ইতিহাস, আছে কতশত গল্প। তবে তাদের সময় পেরিয়ে গেছে, একই শহরের অন্য ভেন্যুতে পাড়ি জমিয়েছে ক্রিকেট। কখনও সময়ের তাগিদে, যুগের চাহিদা মেটাতে, কখনও প্রাকৃতিক দূর্যোগের বলি হয়ে, কিংবা কখনও স্রেফ রেলস্টেশনের বর্ধিত অংশকে জায়গা করে দিতে।


    (ওল্ড) ওয়ান্ডারার্স, জোহানেসবার্গ 

    জোহানেসবার্গে গিয়ে ওয়ান্ডারার্সের খোঁজ করলেই সহজেই পেয়ে যাওয়ার কথা।

    তবে ‘ওল্ড ওয়ান্ডারার্স’ খুঁজে পাবেন না আপনি। অথচ সে ভেন্যুতে ১৮৯৬ থেকে ১৯৩৯ সালের মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলেছিল ২২টি টেস্ট, জোহানেসবার্গের প্রথম টেস্ট ভেন্যুই ছিল সেটি। যদি কেউ আপনাকে বলতে পারেন, অথবা গুগল করে আপনি ওল্ড ওয়ান্ডারার্সের খোঁজ পান, তখন আপনি জানবেন, সেখানে এখন ব্যাট-বলের ঝঙ্কার নেই। আছে ট্রেনের ব্যস্ততা। সেখানে এখন পার্ক স্টেশন- দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় রেলস্টেশন। 

    ‘সিটি অফ গোল্ড’-এর ধনীরা জনগণের জন্য একটা মাঠের কথা চিন্তা করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে ১৮৮৮ সালে গড়ে উঠেছিল ওয়ান্ডারার্স। টেস্ট ম্যাচ ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা ম্যাচ ফিগারের রেকর্ড এ মাঠেই- ১৯১৩ সালে ইংল্যান্ড পেসার সিডনি বার্নস ম্যাচে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট, ৪৩ বছর পর যে রেকর্ড ভেঙে জিম লেকার নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট।
     


    পাশের রেলস্টেশনকে (পার্ক স্টেশন) জায়গা করে দিয়েছে 'আদি' ওয়ান্ডারার্স


    এ মাঠ ‘বিখ্যাত’ আরেকটি রেকর্ডের জন্যও। কথিত আছে, দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার জিমি সিনক্লেয়ার একবার এক টেস্ট ম্যাচে একটি ছয় মেরেছিলেন, যা এসে পড়েছিল পাশের রেলস্টেশনে দাঁড়ানো ট্রেনের এক ওয়াগনের ওপর। সে বল দুদিন পর পাওয়া গিয়েছিল কেপটাউনে, জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ৯৫৬ মাইল দূরে। সে হিসেবে ইতিহাসের দীর্ঘতম ছয়ের রেকর্ড বোধহয় সিনক্লেয়ারেরই। 

    ওল্ড ওয়ান্ডারার্সের ইতিহাসে মিলিয়ে যাওয়ার পেছনেও অবশ্য দায় আছে এই রেলপথেরই। বাড়তি চাপ মেটাতে বাড়াতে হয়েছিল রেলস্টেশনের পরিসর, ফলে জায়গা করে দিতে হয়েছিল ওয়ান্ডারার্সকেও। 

    'আদি' ওয়ান্ডারার্স থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠলো নতুন ওয়ান্ডারার্স। এই সময়ের মাঝে ক্রিকেটের ঠাঁই হয়েছিল জোহানেসবার্গের দ্বিতীয় টেস্ট ভেন্যু- এলিস পার্কে। সেখানেই হয়েছিল ৬টি টেস্ট, সঙ্গে ট্রান্সভালের ম্যাচও। তবে নতুন ওয়ান্ডারার্স গড়ে ওঠার পর এলিস পার্ক পাকাপাকিভাবে চলে যায় রাগবির কাছে। 

    ওয়ান্ডারার্স বলতে তাই এখন বুঝায় নতুনটিকেই, যার আরেক নাম ‘বুলরিং’।

     

    ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়াম, মুম্বাই 

    শহরটা নাম বদলেছে- বোম্বে থেকে হয়েছে মুম্বাই। তবে এখনও বোম্বে শব্দটা মুছে যায়নি ঠিক। মুম্বাই বা বোম্বের আন্তর্জাতিক ভেন্যুও বদলেছে বার তিনেক, বোম্বে জিমখানা বা এসপ্ল্যানেড ময়দান থেকে ব্র্যাবোর্ন, ব্র্যাবোর্ন থেকে ওয়াঙ্খেড়ে- ১০০ বছরের ব্যবধানে ১ কিলোমিটের গন্ডির ভেতর। 

    ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বোম্বে জিমখানা, তবে সেটি সীমাবদ্ধ ছিল ‘ইউরোপিয়ান’দের মাঝে। এমনকি রনজিতসিনজিকেও ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল সে ক্লাবে, ইউরোপিয়ানরা ছাড়া সেখানে প্রবেশাধিকার ছিল শুধু ‘চাকর’দের। ১৯৩৩ সালের ডিসেম্বরে অবশ্য সেসব কড়াকড়ি শিথিল করতে হলো, কারণ ভারত দেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেললো এখানেই। এ মাঠের কাঠামো, আবহই এমন- ঢুকলে মনে হতো যেন ইংল্যান্ডের কোনও কান্ট্রিসাইডের ক্রিকেট ক্লাবে চলে এসেছেন কেউ। লালা অমরনাথ ভারতের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন এ মাঠেই। 

    তবে জিমখানার একমাত্র টেস্ট হয়ে আছে ওই ভারতের দেশের মাটির প্রথম টেস্টই। এরপর তাদের ঠিকানা ছিল ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়াম, ক্রিকেট ক্লাব অফ ইন্ডিয়া বা সিসিআইয়ের ছিল যেটি। এর প্রতিষ্ঠাতাদের লক্ষ্য ছিল লর্ডসের আদলে কিছু বানানো। সিসিআইকে ধরা হয় ভারতের ‘এমসিসি’র সমকক্ষ। পাতিয়ালার মহারাজা এই প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাবোর্নে প্রথম টেস্ট হয়েছিল ১৯৪৮ সালে, ভারত খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। 
     


     ওয়াঙ্খেড়ের আওয়াজ হয়তো এখনও ঠিক পৌঁছায় ব্র্যাবোর্নে, শুধু প্রবেশ করে, নাকি ব্র্যাবোর্নের ঐতিহ্যের আবরণে আটকে যায়, সেটি বলা কঠিন একটু।/আইসিসি


    এরপর থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত ভারতের মাটিতে সবচেয়ে বেশি টেস্ট হয়েছে ব্র্যাবোর্নেই- ভারতের ‘লর্ডস’-এ। তবে এটি ক্রমেই সামর্থ্য হারিয়ে ফেলছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের ধারণ করতে, মুম্বাই বা বোম্বে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এমসিএ) সঙ্গেও টিকেট নিয়ে চলছিল ‘দ্বন্দ্ব’। এমসিএ তাই নিজেদের স্টেডিয়াম বানানোর উদ্যোগ নিল, ১৯৭৪ সালে চালু হলো ওয়াঙ্খেড়ে, ব্র্যাবোর্ন থেকে গাড়িতে করে ৪ মিনিটের দূরত্বে। 

    অবশ্য ৩৬ বছর পর ২০০৯ সালে এক ম্যাচের জন্য টেস্ট ক্রিকেট ফিরেছিল ব্র্যাবোর্নে, ২০১১ বিশ্বকাপের জন্য ওয়াঙ্খেড়ে প্রস্তুত হচ্ছিল বলে সেখানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিল ভারত। কোনও ভেন্যুতে দুই টেস্টের মাঝে এতো বছরের ব্যবধান ছিল না এর আগে। আগের বছরই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট হওয়ার কথা ছিল ব্র্যাবোর্নে, মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার কারণে বাতিল হয়েছিল সে সিরিজ। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কয়েকটি ম্যাচের সঙ্গে ২০১৩ সালে উইমেনস বিশ্বকাপের ফাইনালসহ ১০টি ম্যাচ হয়েছিল এখানে। আর ২০১৮ সালে এমসিএ-র ঝামেলার কারণে হয়েছিল একটি ওয়ানডে। 

    আগে ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সদর দপ্তর ছিল ব্র্যাবোর্নে, সেটিও চলে গেছে ওয়াঙ্খেড়েতে। তবে এদের দূরত্বটা এমন, ওয়াঙ্খেড়ের আওয়াজ হয়তো এখনও ঠিক পৌঁছায় ব্র্যাবোর্নে। অবশ্য সেসব প্রবেশ করে, নাকি ব্র্যাবোর্নের ঐতিহ্যের আবরণে আটকে যায়, সেটি বলা কঠিন একটু। 
     

    বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম (ঢাকা স্টেডিয়াম), ঢাকা

    রাস্তার একদিকে দেয়ালের ওপাশে একটা চাতাল, সঙ্গে একটা পুকুর। আরেকদিকে দেয়াল উঠে গেছে উঁচুতে, ছাউনিটা একটু অন্যরকম। একটা চালকল, বন্ধপ্রায় যেটি। রাস্তার সঙ্গে ঘাসের আস্তরণ গিয়ে মিশেছে কংক্রিটের একটা ড্রেনে। সেই ঘাসের ওপর একটুকরো কাগজ। সংবাদপত্রের একটা অংশ, সেখানে একটা ছবি। সে কাগজ ব্যবহার করা হয়েছিল পান খিলি করে মোড়াতে, চুনের দাগ লেগে আছে সেখানে। ছবিতে তিনজন কোদাল হাতে উদ্যত, আরেকজন কোপ বসিয়ে দিয়েছেন। মাটি কাটছেন। 

    তবে সে মাটি সাধারণ নয়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ক্রিকেট পিচের মাটি। ক্রিকেট অফিশিয়ালি বিদায় নিয়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম থেকে, ক্রিকেট বোর্ড চেয়েছে বলে সে পিচের মাটি কেটে তাদের হস্তান্তর করা হবে, যা ব্যবহার করা হবে ক্রিকেটের নতুন ঠিকানা মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। 

    ক্রিকেট ততদিনে নতুন মাত্রা পেয়েছে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অন্যান্য ফেডারেশন ও খেলার সঙ্গে থাকার সময় পেরিয়ে গেছে। মিরপুরে নতুন সুযোগ-সুবিধাসহ শুধুই ক্রিকেটের জন্য স্টেডিয়াম ডাকছে তাদের। বঙ্গবন্ধু থেকে শের-ই-বাংলার দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। 

    ইতিহাসে একটি দিক দিয়ে বঙ্গবন্ধু বা আগের ঢাকা স্টেডিয়াম অনন্য- দুই দেশের প্রথম ‘হোম’ টেস্ট আয়োজন করেছিল এটি। ১৯৫৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তান তাদের প্রথম ‘হোম’ টেস্ট খেলেছিল ভারতের বিপক্ষে, তখনও ঢাকা ছিল পূর্ব পাকিস্তানের অংশ। ২০০০ সালের নভেম্বরে সেই ভারতের বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। 

    ১৯৭১ সালে এ মাঠেই ‘ইন্টারন্যাশনাল ইলেভেন’-এর বিপক্ষে ‘পাকিস্তান বোর্ড একাদশ’-এর হয়ে খেলতে নেমেছিলেন রকিবুল হাসান, ‘জয় বাংলা’ স্টিকারযুক্ত ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে। স্বাধীনতার আগে সে ম্যাচই হয়ে ছিল তখনকার ঢাকা স্টেডিয়ামে শেষ স্বীকৃত ম্যাচ, যেটিও শেষ হতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। ততক্ষণে যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রাম। 

    ১৯৫৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হয়েছে ১৭টি টেস্ট, ৫৮টি ওয়ানডে। বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে ও টেস্ট সেঞ্চুরি এ মাঠে-- ১৯৯৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন অপি হয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিয়ান, আর নিজেদের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। 

    ১৯৯৮ সালে এ মাঠে হয়েছিল আইসিসি নক-আউট ট্রফি (পরবর্তীতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি)। ক্রিকেট বিদায় নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধুতে ফিরেছিল একদিনের জন্য, যদিও ম্যাচের জন্য নয়- ২০১১ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়েছিল সেখানে। 
     


    ক্রিকেটের সময় পেরিয়ে মাঠ চলে গেল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের হাতে.../পেপারকাটিংয়ের ছবির ক্যাপশনের শুরুর লাইন


    এম এ আজিজ স্টেডিয়াম (চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম), চট্টগ্রাম 

    বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট, আর এখানে প্রথম টেস্ট জয়। এম এ আজিজেও শুধু স্মৃতি রয়ে গেছে, ক্রিকেট আর নেই সে অর্থে।

    ২০১৯ সালে এ ভেন্যুকে নিয়ে প্যাভিলিয়নকে বলেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক ব্যাটসম্যান আফতাব আহমেদ, ‘যেটা ফার্স্ট টেস্ট জিতলাম, সেটার সব কিছুই মনে আছে। এই এমন একটা মাঠ, যেখানে আমার অনেক স্মৃতি।’ ২০০৪ সালে এই মাঠে ভারতের সঙ্গে একটা ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচটা এখনও যেন স্পষ্ট দেখতে পান আফতাব, ‘ভারতের সঙ্গে যেদিন খেললাম,  সেদিন দর্শক এখানে ভেতরে যতজন ছিল, বাইরে ঠিক সেরকমই দর্শক ছিল। মাইকিং করে পরে বলে দেওয়া হয় যে এখানে আর জায়গা নেই আপনারা চলে যান। এত দর্শক। এটা আসলে অন্যরকম স্মৃতি।’ 

    চট্টগ্রামের খেলাধুলার অন্যতম কেন্দ্রস্থল এই ভেন্যুর ক্রিকেট ইতিহাসও বেশ পুরোনো। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে এখানে এসেছিল ভিনু মানকড়ের নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়ানস’ নামে ভারতের দল, খেলেছিল তখনকার পূর্ব পাকিস্তান দলের সঙ্গে। সব মিলিয়ে স্বাধীনতার আগে এখানে হয়েছে তিনটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, মানকড়ের ভারতের পর খেলে গেছে এমসিসির দল, ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফির ম্যাচও হয়েছে সেখানে।

    ১৯৮৮ সালে এশিয়া কাপে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে হয়েছে ১০টি ওয়ানডে। ২০০১ সালে টেস্ট ভেন্যুর মর্যাদা পেয়েছিল এম এ আজিজ- বাংলাদেশের দ্বিতীয় ভেন্যু হিসেবে। বাংলাদেশ এখানে টেস্ট খেলেছে ৮টি। যার শেষটি বাংলাদেশের ৩৫তম, যে ম্যাচেই প্রথম জয়। 

    চট্টগ্রামেও আলাদা ভেন্যুর চাহিদা হিসেবে এরপর সাগরিকায় জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে পাড়ি জমিয়েছে ক্রিকেট। এরপর ২০১৩ সালে এম এ আজিজে হয়েছে বিপিএলের কিছু ম্যাচ, মাঝে মাঝে হয় বয়সভিত্তিক কিংবা কোনও সিরিজের আগে দলের প্রস্তুতি ম্যাচ। 

    তবে এম এ আজিজ এখন মূলত ব্যবহৃত হয় ফুটবলের ভেন্যু হিসেবেই, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মতোই। 


    অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড, সেন্ট জনস

    ল্যাবন কেনিথ ব্ল্যাকবার্ন লিউইটলাইন বুকোনোন বেনজামিন, বাবা নাম রেখেছিলেন। মা ডাকনাম রেখেছিলেন ‘গ্রেভি’। ১৯৮৮ থেকে ২০০০- অ্যান্টিগার ক্রিকেটের অন্যতম পরিচিত মুখ ছিলেন ‘গ্রেভি দ্য এন্টারটেইনার’। 

    অ্যান্টিগার রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ডের ক্রিকেট মানেই ছিল গ্রেভির সরব উপস্থিতি। অদ্ভুত সব পোশাক, অদ্ভুত সব নাচ-গানে মাতিয়ে রাখতেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে ১২ বছর কাজ করে দেশে ফিরেছিলেন, দেশের জন্য ১২ বছর কাজ করেছেন- অ্যান্টিগার দর্শক-ক্রিকেটারদের বিনোদন দিয়ে। 

    গ্রেভি ছিলেন অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড বা ‘রেক’ বা ‘এআরজি’-এর সমার্থক। কখনও বোর্ড বা কোনও স্পন্সরের সহায়তা পাননি, টিকেট কেটেও ঢুকেছেন মাঠে। আগেই বলে রেখেছিলেন, ২০০০ সালে অবসরে যাবেন। এরপর ‘রেক’-এর বাইরে একটা সুভেনির শপ চালান। 
     


    'গ্রেভি অ্যাট দ্য রেক'/ক্রিকইনফো


    গ্রেভির অবসরের ৭ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও ছেড়ে গিয়েছিল ‘রেক’। ১৯৮১ সালে টেস্ট ভেন্যুর মর্যাদা পেয়েছিল এটি, দীর্ঘদিন এ মাঠের বিশেষত্ব ছিল আরেকটি- এর গ্রাউন্ডসম্যান হিসেবে কাজ করতেন নিকটস্থ কারাগারের কয়েদিরা। যে কারাগারের ওয়ারডেন ছিলেন আবার ভিভ রিচার্ডসের বাবা। ঘরের ছেলে ‘কিং’ ভিভই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন এ মাঠে।

    ২০০৭ বিশ্বকাপে জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে বাড়তি সুবিধাসহ নতুন স্টেডিয়াম বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়, রাজধানী থেকে একটু দূরে নর্থ সাউন্ডে। সে স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয় অ্যান্টিগার সবচেয়ে বিখ্যাত ক্রিকেটারের নামে- স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম। সে বিশ্বকাপের সুপার এইট ম্যাচ দিয়ে অভিষেক হয় সেটির। 

    ভিভ গ্রেভিকে বলেছিলেন, “যেটা করছো সেটা থামিও না। কারণ তুমি যখন এসব করো, পৃথিবী সুখী থাকে।” 
     


    অ্যান্টিগা রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড, 'রেক', 'এআরজি'


    গ্রেভি গিয়েছিলেন বিশ্বকাপের সময় নতুন স্টেডিয়ামে। তবে ‘রেক’ থেকে ক্রিকেট সরানোটা মানতে পারেননি। অ্যান্টিগাবাসীও ঠিক খুশি ছিলেন না। নতুন মাঠে শুরুর দিকে দর্শক উপস্থিতিও ছিল বেশ কম। দ্বিতীয় টেস্টে যেন এ মাঠে লেগেছিল অ্যান্টিগাবাসীর ‘অভিশাপ’, আউটফিল্ডের চরম বাজে অবস্থার কারণে ১০ বল পরই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় টেস্ট।

    ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড বাধ্য হয় ‘রেক’-এর দ্বারস্থ হতে। ৪৮ ঘন্টার নোটিশে টেস্ট ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হয় ‘রেক’। তবে এই ‘বিখ্যাত ও জনপ্রিয়’ মাঠে ২২ টেস্টের শেষ হয়ে আছে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওই ড্র ম্যাচই। 

    অ্যান্টিগার এই মাঠেই ব্রায়ান লারা তার দুই অমর কীর্তি গড়েছিলেন- ৩৭৫ আর ৪০০*, যার মধ্যে ৩৭৫ গ্রেভির অন্যতম প্রিয় ইনিংস। সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও এখানেই গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 


    ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক (এএমআই স্টেডিয়াম), ক্রাইস্টচার্চ 

    ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি, স্থানীয় সময় বেলা ১২.৫১ মিনিটের ৬.২ মাত্রার এক ভূমিকম্প ক্রাইস্টচার্চে কেড়ে নিয়েছিল ১৮৫ জনের প্রাণ। ২০১৯ সালে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার আগে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি ছিল সেটি সেই শহরের। সে ভূমিকম্প কেড়ে নিয়েছিল তাদের শত বছরের এক ঐতিহ্য- ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক বা এএমআই স্টেডিয়াম। 

    ১৮৮৬ সালে অফিশিয়ালি খুলে দেওয়া হয়েছিল এই ভেন্যু, পরবর্তিতে যা হয়ে উঠেছিল ক্রাইস্টচার্চের অন্যতম আইকনিক এক কাঠামো। ক্রিকেট ও রাগবি নয় শুধু, এখানে হয়েছে অ্যাথলেটিকস, টেনিস, সাঁতারও। বিশ্বযুদ্ধের সময় কিছুদিন আলুর খামারও ছিল এটি! 

    ১৯৩০ সালে নিজেদের প্রথম টেস্ট নিউজিল্যান্ড খেলেছিল এ মাঠেই। এ মাঠকেই নিজের করে নিয়েছিলেন স্যার রিচার্ড হ্যাডলি, ১৪ টেস্টে ৭৬ উইকেট নিয়ে। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ড এখানে খেলেছিল ৪০টি টেস্ট। 
     


    শত বছর ধরে ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক হয়ে উঠেছিল ক্রাইস্টচার্চের ঐতিহ্যের অংশ


    তবে ২০১১ সালের সেই মঙ্গলবার বদলে দিল ক্রাইস্টচার্চের অনেক কিছু। 

    সে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ল্যাঙ্কাস্টার পার্কে আর কোনো খেলা গড়ায়নি, ক্রিকেট চলে গেছে হ্যাগলি ওভালে। হ্যাগলি পার্কে মাঠ আগে থেকেই ছিল, তবে আন্তর্জাতিক খেলা হতো না সেখানে। ২০১৪ সালে হ্যাগলি ওভালের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে, ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের ম্যাচও হয়েছে সেখানেই। 

    হ্যাগলি ওভাল যখন মুখর হয়ে উঠছে, ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক তখনও দাঁড়িয়ে ছিল। পুনর্গঠনের কাজ শুরু নিয়ে চলছিল জটিলতা। এরপর ২০১৬ সালে ঘোষণা করা হয়, সেটি সংস্কারের উপায় নেই আর, ধ্বংস করে দেওয়া ছাড়া। প্রায় ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের বাজেট শুধু এটি ধ্বংসের জন্যই দেওয়া হয়, যদিও শেষ পর্যন্ত লেগেছিল ১২ মিলিয়ন। কোনও স্থাপনা ধ্বংসে এতো বাজেট- নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে যা সবচেয়ে বেশি। 

    ২০১৯ সালের অক্টোবরের আরেক মঙ্গলবারে ল্যাঙ্কাস্টার পার্কের শেষ পর্দা নামে। শুধু বিশ্বযুদ্ধের বীরদের সম্মানে রাখা স্মারক প্রবেশদ্বারটি থাকে, নতুন করে যে স্থাপনার পরিকল্পনা আছে, তাতেও সেটি থাকবে। তবে ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক নতুন করে স্থাপনের পরিকল্পনা এখনও আলোর মুখ দেখেনি, শীঘ্রই দেখবেও না। 

    ১৩৮ বছর ধরে ধীরে ধীরে ক্রাইস্টচার্চের প্রতীক হয়ে ওঠা এ স্টেডিয়ামে এখন তাই এক সমুদ্র শূন্যতা আর অজস্র স্মৃতি ছাড়া আর কিছু নেই আপাতত। এটির না থাকাই এখন সব থাকার অস্তিত্ব অস্বীকার করে চলেছে যেন। 
     


    চলছে ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক ধ্বংসের কাজ


    অ্যাসগিরিয়া স্টেডিয়াম, ক্যান্ডি

    “অ্যাসগিরিয়া স্টেডিয়ামে হেলিকপ্টারের শব্দ টেস্ট ক্রিকেটের নাটকীয়তাকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। গাঢ় সবুজ রঙা এ মহাপতঙ্গরূপী মেশিন আবির্ভূত হলো পাহাড় আর গাছপালা চিড়ে, যেন অ্যাপোক্যালিপস নাউ-এর দৃশ্য। মাঠের পেছনে নিচু হয়ে একটা চক্কর দিল, মাটি স্পর্শ করল, এরপর চলে গেল কলম্বোর দিকে। এর সঙ্গে চলে গেল হয়তো অস্ট্রেলিয়ার শেষ আশাটুকুও, এ টেস্টে জয় অবশ্য শ্রীলঙ্কার প্রাপ্য ছিল সবসময়ই। 

    সেই হেলিকপ্টারে ছিলেন ভাঙা নাক নিয়ে স্টিভ ওয়াহ, আর ভাঙা পা নিয়ে জেসন গিলেস্পি- যে চোট গিলেস্পিকে পুরো অস্ট্রেলিয়ান মৌসুমেই মাঠের বাইরে ছিটকে দেবে পরে। দুজনের সংঘর্ষ হয়েছিল বিভৎসরূপে, স্কয়ার লেগ থেকে পেছন দিকে ছুটছিলেন ওয়াহ, বাউন্ডারি থেকে আসছিলেন গিলেস্পি। দুজনই চেষ্টা করছিলেন শ্রীলঙ্কা সহ-অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনের ক্যাচ ধরতে, তবে সে বল ওই দুজনের মাঝে পড়বে এমনই যেন ঠিক ছিল আগে থেকেই, সবসময়ই।” 
     


    ছবির মতো সুন্দর ট্রিনিটি কলেজের মাঠ


    স্টিভ ওয়াহ-জেসন গিলেস্পির ‘বিখ্যাত’ সংঘর্ষের বিবরণ বাদ দিলে উইজডেনের ম্যাচ রিপোর্টে কি ক্যান্ডির অ্যাসগিরিয়া স্টেডিয়ামের সৌন্দর্যের আঁচ পাওয়া যায়? পাহাড়ঘেঁষা এই মাঠ ক্রিকেটের সবচেয়ে ‘সুন্দর’ ভেন্যুগুলির একটি, যা শ্রীলঙ্কার বিখ্যাত ‘ট্রিনিটি কলেজ’-এর। কুমার সাঙ্গাকারা পড়েছিলেন এখানেই। 

    এসএসসি, গল বাদ দিলে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছিল ক্যান্ডির এই অ্যাসগিরিয়া স্টেডিয়ামেই, যে সংখ্যা পি সারা ওভালের সমান। ক্যান্ডি সাঙ্গাকারা ছাড়াও শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বিখ্যাত আরেকজন ক্রিকেটার- মুত্তিয়া মুরালিধরনের হোম ভেন্যু, ১৯৮৩ সালে যেটির টেস্ট অভিষেক। ২০০৭ সাল পর্যন্ত ২১টি টেস্ট হয়েছে এখানে, সঙ্গে ৬টি ওয়ানডে। 

    তবে এরপরই ট্রিনিটি কলেজের মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়, ক্যান্ডির মূল আন্তর্জাতিক ভেন্যু এখন পাল্লেকেলে, অ্যাসগিরিয়া থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে। 


    ওয়াকা, পার্থ 

    নুলারবোর। পার্থ আসার পথে পড়ে দীর্ঘ এই সমতলভূমি, গাছগাছালি প্রায় নেই সেখানে। যতদূর চোখ যায়, চোখে ভাসবে শুধু শূন্যতা। 

    ১৯৫০ সালের আগ পর্যন্ত পার্থে রেলপথে আসতে পাড়ি দিতে হতো এই শূন্যভূমি। ইংল্যান্ড থেকে যাওয়া ক্রিকেটার, সাংবাদিকদের স্মৃতিতে নুলারবোরের 'ভয়ঙ্কর' সব বর্ণনা আছে। 

    ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ওয়াকায় প্রথম টেস্ট হয়েছিল ১৯৭০ সালে, কারণ অস্ট্রেলিয়ার অন্য জায়গা থেকে পার্থে যাতায়াতের কঠিন ব্যবস্থা। নিয়মিত ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর। তবে ওয়াকা শীঘ্রই হয়ে উঠেছিল ক্রিকেটের অন্যতম আইকনিক এক ভেন্যু। এর ফাস্ট ও বাউন্সি উইকেটের কারণে এটি হয়ে উঠেছিল ‘ফাস্ট বোলার’দের মক্কা, ব্যাটসম্যানদের বিভীষিকা। গ্লেন ম্যাকগ্রা, মিচেল জনসন, ব্রেট লি, মার্ভ হিউজ বা ডেনিস লিলি- ওয়াকায় তাদের মুখোমুখি হওয়া নিঃসন্দেহে ব্যাটসম্যানদের দুঃস্বপ্নের এক অংশ। 

    আর ছিল প্রচন্ড তাপমাত্রা। কথিত আছে, প্রচন্ড তাপে নাকি ফুলে উঠতো বলের সিম। 
     


    ওয়াকা, পেসারদের মক্কা


    ওয়াকার পাশেই সোয়ান নদী, বিকেল গড়ালে সে নদী থেকে বয়ে আসা বাতাসে কমতো তাপমাত্রা। সে বাতাসের আলাদা একটা নামও আছে- ‘ফ্রিম্যান্টল ডক্টর’ বা শুধু ‘ডক্টর’। অস্ট্রেলিয়ান পেসাররা দিনের পর দিন সে ডক্টরকে নিজেদের কাজে লাগানোর উপায় বের করেছেন। পার্থের বাতাস আর তাপমাত্রা মিলেমিশে তৈরি করেছে রূপকথা। 

    তবে ওয়াকার পেস আর বাউন্স কমে এসেছে ধীরে ধীরে। ওয়াকা হয়ে পড়েছে ‘অকেজো’। একসময় এএফএল, রাগবিও হয়েছে ওয়াকায় ক্রিকেটের পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ার আরও সব ভেন্যুর মতোই। তবে ‘যুগের চাহিদা’ মেটাতে একসময় ‘অক্ষম’ হয়ে পড়েছে ওয়াকা,বিভিন্ন সময় নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সফল হয়নি সেসব।  তৈরি হয়েছে তাই ‘আধুনিক’ ‘বহুমুখী’ পার্থ স্টেডিয়াম। 

    অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের ছুঁয়ে গেছে ওয়াকার ‘শেষ’, ডেনিস লিলি পদত্যাগ করেছিলেন তার পদ থেকে।

    বলা হয়েছিল, ‘বড়’ দলগুলি বাদে ‘ছোট’ দলগুলির বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ আর শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচ হবে শুধু ওয়াকায়। ২০১৮ সালেই অভিষেক হয়ে গেছে নতুন পার্থ স্টেডিয়ামের, ২০১৭ অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের পর একটি ওয়ানডে হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তানের। ২০১৮ সালের পর হয়নি বিগব্যাশও। 

    ওয়াকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একরকম নির্বাসনে তাই। বিকাল গড়ানোর সময়ে ডক্টর ঠিকই বয়ে যান, তবে যা কিছু ‘উৎসব’, সবই এখন সোয়ান নদীর ওপারে।