• পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সফর ২০২০
  • " />

     

    'ওয়ান্ডারফুল' ওল্ড ট্রাফোর্ডে 'পাকিস্তানের জয়' ছিনিয়ে নিলেন ওকস-বাটলার

    'ওয়ান্ডারফুল' ওল্ড ট্রাফোর্ডে 'পাকিস্তানের জয়' ছিনিয়ে নিলেন ওকস-বাটলার    

    ১ম টেস্ট, ওল্ড ট্রাফোর্ড
    পাকিস্তান ৩২৬ ও ১৬৯
    ইংল্যান্ড ২১৯ ও ২৭৭/৭ 

    ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী 


    কিপিংয়ে ক্যারিয়ারের অন্যতম বাজে একটা টেস্ট গেছে জস বাটলারের। টেস্ট দলে জায়গাটা প্রশ্নের মুখে পড়েছে আরেকবার। ক্রিস ওকসের ব্যাটিং-সামর্থ্য ছায়ায় ঢাকা আগে থেকেই, তার বোলিং-টাও তো প্রায়ই সেরকম। এদিন দুজনের সামনেই সুযোগ এলো ইংল্যান্ডের নায়ক হওয়ার। সেটি তারা কী দারুণভাবেই না নিলেন! দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৩৯ রানের জুটির পর ওকসের অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংসে ওল্ড ট্রাফোর্ডের অসাধারণ ম্যাচে পাকিস্তানকে হতাশ করেছে ইংল্যান্ড। 

    ওলি পোপ আউট হওয়ার সময় ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল আরও ১৬০ রান, ৫ উইকেট বাকি থাকতে। উজ্জীবিত পেস আক্রমণের সঙ্গে স্বীকৃত দুই লেগস্পিনার, পাকিস্তান আশায়। ১৯৯৯ সালে ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই বা ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসের আশায় হয়তো তারা। তবে সব গড়বড় করে দিলেন বাটলার-ওকস। এ দুজন মিলে পাকিস্তানের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। চেন্নাই বা লর্ডস নয়, '৯৯-এর হোবার্ট ফিরে এসেছে তাদের সামনে। 

    ২৭৭ রানের লক্ষ্য দেওয়াটা হয়তো প্রথম ইনিংসে ১০০-এর ওপরে লিড পাওয়া পাকিস্তানের জন্য একটু কমই, তবে ১১৭ রানের মাঝেই ইংল্যান্ডের প্রথম ৫ উইকেট নেওয়া পাকিস্তান জয় দেখছিল ভালভাবেই। বাটলার-ওকসের জুটিই বদলে দিল চিত্রটা, নিশ্চিতভাবেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিল তাদের। দুজনের জুটি খেলেছে ৩২টি পূর্ণ ওভার, এর মাঝে মেইডেন হয়নি একটিও। 
     


    ইয়াসির শাহর ওপর অতি-নির্ভরশীলতা ভুগিয়েছে পাকিস্তানকে, তাদের সংগ্রহ দ্বিতীয় নতুন বলকে দৃশ্যপটে আনতেও পারেনি। বাটলার-ওকস দুজন শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক, ‘হাফ-চান্স’ যে দুই-একটি তৈরি হয়েছে, তা গেছে পাকিস্তানের নাগালের বাইরে দিয়েই। দুজনের বিপক্ষে মরিয়া হয়ে দুটি রিভিউও নষ্ট করেছে পাকিস্তান, একসময় তাদের ভাঁড়ারে রিভিউ ছিল না আর। 

    তবে রিভিউ শেষদিকে নাটকে আসতে পারেনি সেভাবে। ক্রিজে অগুণিতবারের মতো রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন বাটলার ইয়াসিরের বলে, রিভিউয়ে দুটি আম্পায়ারস কল হলেও বাঁচেননি তিনি। এরপর ব্যাটিং অর্ডারে ‘প্রমোশন’ পেয়ে আটে উঠে আসা ব্রডও এলবিডব্লিউ হয়েছেন একই বোলারের বলে, কিন্তু ততক্ষণে আরও কাছে চলে গেছে ইংল্যান্ড। 

    রানতাড়ায় ওকস-বাটলারের আগে ইংল্যান্ডকে আশা জুগিয়েছিলেন অধিনায়ক জো রুট ও ডম সিবলির জুটি। মোহাম্মদ আব্বাসের বলে ররি বার্নস এলবিডব্লিউ হওয়ার পর এ দুজন তুলেছিলেন ৬৪ রান। ইয়াসিরকে বুনো ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সিবলি, আর দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইংলিশ অধিনায়ককে এজড করেছেন নাসিম শাহ। 

    ইয়াসিরের হুট করে লাফিয়ে ওঠা বলে গ্লাভড হয়েছেন স্টোকস, সে উইকেট পাকিস্তান পেয়েছিল রিভিউ নিয়ে। এরপর ওলি পোপ প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে আরেকটি খেলার-উর্ধ্বে ডেলিভারির মুখোমুখি, লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা শাহিন শাহ আফ্রিদির বলের কোনও জবাব ছিল না তার কাছে। 

    ইংল্যান্ডকে তখন খাদের কিনারে নিয়ে যাওয়া হয়ে গেছে ইংল্যান্ডের। হয়তো ইয়াসির-শাদাবকে লেলিয়ে দেবেন, ওল্ড ট্রাফোর্ডে রোমাঞ্চকর জয় আনবেন, এমনই ভেবেছিলেন আজহার আলি। বাটলার-ওকস তা হতে দিলেন না। 

    দিনের শুরুটা অবশ্য পাকিস্তানের জন্য একটু হলেও আশাজাগানিয়াই ছিল। ইয়াসির শাহর ঝড়ে শেষ ২ উইকেটে আরও ৩২ রান যোগ করেছিল তারা। তবে সেই ইয়াসির, বা পাকিস্তানের পেস আক্রমণ, কিংবা তারও আগে শান মাসুদ-- সবাইকে ছাপিয়ে এবার সব আলো কেড়ে নিলেন ওকস। সঙ্গে বাটলার।