• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    'অপ্রতিরোধ্য' লেভানডফস্কিতে উড়ে গেল চেলসি

    'অপ্রতিরোধ্য' লেভানডফস্কিতে উড়ে গেল চেলসি    

    ফুলটাইম 

    বায়ার্ন মিউনিখ ৪ - ১ চেলসি

    দুই লেগ মিলিয়ে চেলসিকে ৭-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্ন


    প্রথম লেগের ফলাফলের পর বায়ার্ন মিউনিখকে টপকে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হলে অবিশ্বাস্য কিছু করতে হত চেলসিকে। নকআউট পর্বে প্রতিপক্ষের মাঠে গিয়ে ৩-০ তে জিতে ফিরে পরের রাউন্ডে যেতে পারেনি কোনো দল, এমন ঘটনা ঘটেনি কখনও। সেই রেকর্ডই  অক্ষুণ্ণ-ই থাকল, চেলসিকে আরও একবার নাকানিচুবানি খাইয়ে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা উঠে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।

    আরও নির্দিষ্ট করে বললে এক লেভানডফস্কির সঙ্গেই পেরে ওঠেনি ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। প্রথম লেগে ১ গোল, ২ অ্যাসিস্টের পর ঘরের মাঠে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ২ গোল এবং ২ অ্যাসিস্টে চেলসিকে অনেকটা একাই গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এই পোলিশ ফরোয়ার্ড।

    অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকে বলের দখল নিয়ে চেলসিকে শাসন করে খেলতে থাকে বায়ার্ন। আর শুরুর চাপের সুবাদে ফল পেতেও বেশি সময় লাগেনি স্বাগতিকদের। ৮ মিনিটে বক্সের ভেতর লেভানডফস্কিকে ফাউল করে বসেন চেলসি গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরো। একদিকে রেফারি পেনাল্টি দিয়েছিলেন আর অন্যদিকে সাইডলাইনের রেফারি লেভানডফস্কির বিরুদ্ধে অফসাইডের পতাকা তুলেছিলেন।


    তবে ভিএআরে দেখা যায় অনসাইড ছিলেন লেভানডফস্কি এবং পেনাল্টির সিদ্ধান্তও টিকে থাকে। এরপর স্পট কিক থেকে গোল করে এবারের আসরের সবচেয়ে বেশি গোল করাদের তালিকায় শীর্ষস্থানে নিজের অবস্থান আরও মজবুত করেছেন লেভানডফস্কি।

    চেলসির বিপক্ষে শেষ ষোলর প্রথম লেগেও পুরোদস্তর প্লেমেকার বনে গিয়েছিলেন লেভানডফস্কি। নিজে এক গোল করার সঙ্গে সার্জ গেনাব্রির দুটি গোলই বানিয়ে দিয়েছিলেন। এদিনও একই উদ্যমে খেলেছেন এই পোলিশ গোলমেশিন। পেনাল্টি থেকে গোল করার পর ২৪ মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোলটি বানিয়ে দিয়েছেন তিনি। কোভাচিচের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে লেভানডফস্কির পায়ে তুলে দিয়েছিলেন থমাস মুলার। বক্সের ডান পাশে ইভান পেরিসিচকে ফাঁকায় দেখে নিঃস্বার্থভাবে তার দিকে বল ঠেলে দেন তিনি। বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় কাবায়েরোকে বোকা বানিয়ে বল জালে পাঠান পেরিসিচ।

    দুই লেগ মিলে ৫-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে দিশেহারা হয়ে যায় চেলসি। সবটা উজাড় করে দিয়ে এরপর আক্রমণে যায় তারা। ২৯ মিনিটে গোল পেয়েও গিয়েছিল দলটি। প্রায় ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া ক্যালাম হাডসন-অডোয়ের শট ম্যানুয়েল নয়ারকে পরাস্ত করে জালে ঢুঁকে যায়। তবে গোলের বিল্ড আপে ট্যামি আব্রাহাম অফসাইড পজিশনে থাকায় বাতিল হয়ে যায় গোলটি।

    অবশ্য প্রথমার্ধের মিনিটখানেক বাকি থাকা অবস্থায় চেলসির সান্ত্বনাসূচক গোলটিও এসেছে আব্রাহামের পা থেকে। এমারসনের ক্রস সফলভাবে ঠেকাতে ব্যর্থ হন নয়ার। বল ক্লিয়ার করার বদলে উল্টো তুলে দেন আব্রাহামের পায়ে। সেখান থেকে বল জালে পাঠাতে আব্রাহামের বেগ পেতে হয়নি মোটেও।

    তবে এই গোলের পরেও দ্বিতীয়ার্ধে চেলসির জাগরণের সম্ভাবনা ছিল কমই। এই অর্ধেরও শুরু থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেয় স্বাগতিকরা। ৭৬ মিনিটে আবারও প্লেমেকার বনে যান লেভানডফস্কি, বাম পাশের বাইলাইন থেকে শুন্যে ভাসানো ক্রস করেন তিনি। গোলমুখে আনমার্ক অবস্থায় থাকা করেন্তিন তলিসো ডান পায়ের শটে এরপর বল জালে পাঠিয়ে দেন। গোলমুখে চেলসির তিনজন ডিফেন্ডার থাকার পরেও তাদের কেউই তলিসোকে মার্ক করতে পারেননি। আর দুই লেগ জুড়েই চেলসি রক্ষণের দুর্দশার ফায়দা তুলে নিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ।


    ৮৩ মিনিটে আবারও লেভানডফস্কি ম্যাজিক। এবার ডান পাশ থেকে আলভারো অদ্রিওজোলার দারুণ ক্রস, শুন্যে লাফিয়ে দুর্দান্ত হেডে বল জালে পাঠিয়ে দিয়েছেন এই পোলিশ ফরোয়ার্ড। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ ম্যাচে ৫৩ গোল করেছেন লেভানডফস্কি।

    দুই লেগের ইউরোপিয়ান টাইয়ে এই প্রথমবারের মতো ৭ গোল হজম করেছে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটির অনভিজ্ঞতার পূর্ণ ফায়দা তুলে নিয়ে দুই লেগেই তাদের ওপর দিয়ে রোলার কোস্টার চালিয়েছে হানসি ফ্লিকের বায়ার্ন।

    এদিকে দিনের অন্য ম্যাচে নাপোলিকে হারিয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বায়ার্নের প্রতিপক্ষ হচ্ছেন লিওনেল মেসিরা। ১৫ আগস্ট পর্তুগালে হবে সেই বার্সা-বায়ার্ন দ্বৈরথ।