• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগে : অন্যরকম সেমিতে লাইপজিগের বিপক্ষে পিএসজির ভরসা দলের শক্তি

    কিক অফের আগে : অন্যরকম সেমিতে লাইপজিগের বিপক্ষে পিএসজির ভরসা দলের শক্তি    

    কবে, কখন
    লাইপজিগ-পিএসজি
    চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল
    লিসবন
    ১৯ আগস্ট, রাত ১.০০


    পিএসজির ইতিহাসে দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনাল। ইউরোপের সবচেয়ে বড় ক্লাব প্রতিযোগিতায় শেষ চারের বাইরে যাওয়া হয়নি তাদের। লাইপজিগের ইতিহাসে প্রথম। পিএসজির ইতিহাস ৫০ বছরের, লাইপজিগ প্রতিষ্ঠাই হয়েছে ২০০৯ সালে। দুই ক্লাবের বিস্তর ফারাক থাকলেও এক জায়গায় মিলেছে দুই ক্লাবই।

    ২০১১ সালে কাতারি মালিকানার অধীনে যাওয়ার পর থেকেই দলবদলে চমক জাগিয়ে বিশ্বমানের খেলোয়াড় দলে ভিড়িয়েছে পিএসজি। আর লাইপজিগ জোর দিয়েছে অবকাঠামোতে। পিএসজি এই চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা তাড়া করছে বহুদিন হলো। লাইপজিগের জন্য সেমিফাইনাল নাটকীয়ই বটে।

    অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে দারুণ পাফরম্যান্সে লাইপজিগ উঠেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে। এর আগে টটেনহামকে দ্বিতীয় রাউন্ডে হারিয়েছিল জার্মান ক্লাবটি। ২০১৬ তে বুন্দেসলিগায় ওঠার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে লাইপজিগের এটি দ্বিতীয় অংশগ্রহণ। লাইপজিগ ফাইনালে উঠুক আর না উঠুক ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে তারা।

    পিএসজির অবশ্য পা হড়কানোর সুযোগ নেই। আটালান্টার বিপক্ষে আরেকটু হলেই বিপদে পড়তে পারত পিএসজি। শেষদিকে নেইমার-এমবাপে দলের ফেরায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর চুপ মোটিং করেছেন কাজের কাজটা। এতেই সন্তুষ্ট থাকার উপায় নেই পিএসজির।

    নেইমার একটা মিশন নিয়েই পিএসজিতে এসেছিলেন। ২২২ মিলিয়ন ইউরোও পিএসজি তার পেছনে খরচ করেছিল ওই একই মিশনে। কিলিয়ান এমবাপে রয়ে গেছেন একই আশায়। চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে চায় পিএসজি। গত তিন বছরে একের পর এক ব্যর্থতার পর গেরো যখন কেটেছে তখন এতো কাছ থেকে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই থমাস তুখলের দলের। নিদেনপক্ষে ফাইনালে উঠতেই হবে। নইলে চাকরি নিয়ে টানাটানি।

    আটালান্টার সঙ্গে জয়ের পর নেইমার দলের শক্তির কথা বলেছিলেন। দলকে বলেছিলেন পরিবারের মতো। নেইমারের সেই কথার ভিত্তি আছে যথেষ্ট। তুখল অবশেষে এই দলকে এক সুতোয় গাঁথতে পেরেছেন। পিএসজি এখন একটা দল হয়েই খেলে। তবে সেই দলের নেতা নেইমার, আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে হলে তাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে সামনে থেকে। তুখল সেই কথাই বলেছেন লাইপজিগের সঙ্গে ম্যাচের আগে, "আমি এখানে আসার আগে থেকেই নেইমার নেতা ছিল। ওর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, প্রবল ইচ্ছাশক্তিও আছে। নেতারা এমনই হয়। দলের ভেতর দারুণ সমন্বয় আছে, এসব নেইমারকে মাঠে আরও সাহায্য করছে। অবশ্য এটা দলগত খেলা, একা তো সব বদলানো সম্ভব না।"

    লাইপজিগের খেলোয়াড়রা তরুণ। অভিজ্ঞতায় অনেক পিছিয়ে পিএসজির চেয়ে। টিমো ভার্নারের যা একটু অভিজ্ঞতা ছিল, তিনিও চেলসিতে যোগ দিয়েছেন। তবে উলিয়ান নাগেলসমানের দল অ্যাটলেটিকোকে হারিয়েছে ভার্নারের সাহায্য ছাড়াই। আপাতত ভার্নার অধ্যায় তার দলের জন্য অতীত হয়ে গেছে।

    দলের তরুণ খেলোয়াড়রাই তরুণ কোচের ভরসা। ৩৩ বছর বয়সী নাগেলসমানের সঙ্গে ৪৬ বছর বয়সী তুখলের মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য আরেকটি গল্প আছে। নাগেলসমান খেলোয়াড় হিসেবে খেলতেন অসবার্গে, তখন তার কোচ ছিলেন তুখল। ইনজুরির কারণে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ার পর তুখল তাকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সেই তুখলের সঙ্গে যে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে দেখা হয়ে যাবে তা কখনও ভাবতে পারেননি নাগেলসমান, "আমি তুখলের অধীনে খেলেছি- আমাকে তখন খেলোয়াড়ের বেতন দেওয়া হত। কিন্তু চোটের কারণে আমার খেলা বন্ধ হয়ে গেল। তখন পড়াশুনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি স্কাউটিং আর প্রতিপক্ষকে বিশ্লেষণ করার সুযোগ পেয়ে যাই। আমি জীবনেও ভাবিনি আমি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে উঠব, আর আমার আবার থমাস তুখলের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে।"

     


    এই আবেগের প্রভাব অবশ্য ম্যাচে পড়তে দেবেন না নাগেলসমান। তিনি কতোখানি তুখোড় তা সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে তুখলের। দুই কোচই ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা নিজেদের খেলাটা খেলবেন, প্রতিপক্ষকে আটকানো বা তাদের নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নাকি তাদের নেই! দুইজনের দর্শনই আক্রমণাত্মক ফুটবল। আরও একটু ধুন্ধুমার ম্যাচের আশা আপনি তাই করতেই পারেন।  


    আরও পড়ুন
    ট্যাকটিকসে হাতেখড়ি ১১ : নাগেলসম্যান, মিনি মরিনহোর মেগা বিপ্লব


    দলের খবর
    পিএসজির দলে ফিরছেন আনহেল ডি মারিয়া। সেটা বড় স্বস্তির খবর। কিলিয়ান এমবাপেও হয়ত একাদশে থাকবেন। তবে ঝামেলা পেকেছে অন্য জায়গায়। কেইলর নাভাস ছিটকে গেছেন। প্রথম পছন্দের গোলরক্ষককে ছাড়াই তাই খেলতে হবে পিএসজিকে। আর মার্কো ভেরাত্তিও আগের ম্যাচের মতোই এবারও নেই চোটের কারণে।

    সম্ভাব্য একাদশ
    লাইপজিগ

    গুলাকসি, ক্লস্টারমান, উপামেকানো, হালস্টেনবার্গ, অ্যাঞ্জেলিনো, লাইমের, কাম্পেল, সাবিতজার, অলমো, এনকনকু, পলসেন

    পিএসজি
    রিকো, কেহরের, সিলভা, কিমপেম্বে, বের্নাট, ডি মারিয়া, পারেদেস, মার্কিনিয়োস, নেইমার, এমবাপে, ইকার্দি


    হেড টু হেড
    দুইদলের দেখা হচ্ছে প্রথমবারের মতো।

    প্রেডিকশন
    অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ট্যাকটিক্যালি এগিয়ে থাকলেও, ফাইনাল থার্ডে লাইপজিগের সমস্যাটা প্রকট। শেষ পর্যন্ত পিএসজির মানের সঙ্গে পেরে ওঠার সম্ভাবনা কমই তাদের।

    লাইপজিগ ১-৩ পিএসজি