• " />

     

    বাংলাদেশের ভুলে যাওয়ার ২৯ ফেব্রুয়ারি

    বাংলাদেশের ভুলে যাওয়ার ২৯ ফেব্রুয়ারি    

    ২৯ ফেব্রুয়ারি। সৌরবর্ষের সাথে বিশ্বব্যাপী প্রচলিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সঙ্গতি রাখতে প্রতি চার বছর অন্তর ফিরে আসা একটি দিন। এই দিনে যারা পৃথিবীর আলো দেখেন তাঁদের জন্য ব্যাপারটায় একদিকে যেমন প্রতি বছর জন্মদিন না পাওয়ার কষ্ট আছে, আবার বিশেষত্ব লাভের একটা আনন্দও আছে বোধহয়! একই কথা প্রযোজ্য হতে পারে এই দিনে ঘটে যাওয়া যে কোনো স্মরণীয় ঘটনার ক্ষেত্রেও। প্যাভিলিয়নের আজকের আয়োজনে ইতিহাস ঘুরে এসে আলো ফেলা যাক ২৯ ফেব্রুয়ারির ক্রীড়াঙ্গনে।

     

    বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভুলে যাওয়ার দিন

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ বনাম দ. আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। টস জিতে সফরকারীদের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন নীল ম্যাকেঞ্জি ও অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ। বাকিটা মাশরাফি-শাহাদাত-রফিক-রাজ্জাক-সাকিবদের উপর জোহানেসবার্গের একই স্কুলের দুই সাবেক ছাত্রের একটু একটু করে চড়ে বসার ইতিহাস। দিনের খেলা যখন শেষ হল, প্রোটিয়াদের স্কোরবোর্ডে রান বিনা উইকেটে ৪০৫। পরদিন জুটিতে আরও ১০ রান যোগ করে স্মিথ যখন আউট হলেন, ততোক্ষণে ভেঙে গেছে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম উইকেট জুটিতে সবচেয়ে বেশী রানের (৪১৩) বায়ান্ন বছরের পুরনো রেকর্ডটি। স্মিথ-ম্যাকেঞ্জির সে রেকর্ড অক্ষত আছে আজতক।

     

     

    অবশ্য প্রথম দিনের পঁচাত্তরতম ওভারে রফিকের বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ তুলেছিলেন ম্যাকেঞ্জি। তাঁর ব্যক্তিগত রান তখন ১৩১, জুটির সংগ্রহ ৩১৪। দিনভর বোলিংয়ে ক্লান্ত রফিক ঝাঁপিয়ে পড়েও ক্যাচটা হাতে রাখতে পারেন নি। ভুলে যাওয়ার মতো এক ইতিহাসের অংশ না হওয়ার একমাত্র সুযোগটিও সেখানে হাতছাড়া হয়ে যায়। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ হেরে যায় ইনিংস ও ২০৫ রানে, টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে ইনিংস ব্যবধানে সবচেয়ে বড় পরাজয়ের তালিকায় যেটি আছে ৪২ নম্বরে।

     

    মনে রাখার মতো একটি ঘটনাও অবশ্য আছে সে ম্যাচে। দ. আফ্রিকার ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রবিন পিটারসেনকে আউট করে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মোহাম্মদ রফিক ছুঁয়ে ফেলেন ১০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক। সেটিই ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রফিকের শেষ ম্যাচও। ওই একই ম্যাচে আবার ১০০তম টেস্ট উইকেট পেয়েছিলেন প্রোটিয়া পেসার ডেল স্টেইনও।

     

     

    ক্যারিবিয়দের কাঁপিয়ে দিলো কেনিয়া

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬। উপমহাদেশের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে এ দিনটিতেই পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয় আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ কেনিয়া। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে ১৬৬ রানে অল আউট হয়ে যায় কেনিয়া। সহজ লক্ষ্যে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

     

     

    রজব আলীর ডানহাতি পেস আর মরিস ওদুম্বের অফ স্পিনে স্যার রিচি রিচার্ডসন, ব্রায়ান লারা, চন্দরপল, জিমি অ্যাডামসের মতো ব্যাটসম্যানরা রীতিমতো উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিল শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ৩৫.২ ওভারে ৯৩ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। চতুর্থ সহযোগী দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মর্যাদা সম্পন্ন কোনো ম্যাচ জিতে যায় কেনিয়া।

     

    যুক্তরাষ্ট্রের ইতালি জয়

    ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১২। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় টর্নেডোর আঘাতে প্রাণ হারান ১২ জন মানুষ। জাতীয়ভাবে শোকাবহ দিনটি অবশ্য আমেরিকার ফুটবল ইতিহাসে আলাদা করে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আনন্দদায়ক একটি কারনে। চার বছর আগের এই দিনটিতেই প্রথমবারের মতো ফুটবল মাঠে ইতালিকে হারায় যুক্তরাষ্ট্র, সেটিও আবার ইতালির মাটিতে, একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে।

     

     

    ইতিপূর্বে ১০ বারের মুখোমুখিতে ৩টি ড্র আর বাকিগুলো জিতে নেয় আজ্জুরিরা। আবার যে শহরে খেলাটি হয়, সেই জেনোয়াতে ১৯২৪ সালের পর সেটিই ছিল ইতালির প্রথম পরাজয়।

     

    শুভ জন্মদিন, বেনেডিক্ট হাওয়েডেস!

    ২৯ ফেব্রুয়ারি জন্ম নিয়ে বিশ্বকাপ জেতা একমাত্র ফুটবলার তিনি। অল্পের জন্য অবশ্য বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করার সৌভাগ্যটা হয় নি। বলা হচ্ছে জার্মান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার বেনেডিক্ট হাওয়েডেসের কথা। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গত বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁইয়েছিলেন, হেডটা অবশ্য জালে না জড়িয়ে আঘাত হানে গোলপোস্টে।

     

     

    বয়সের খাতায় আজ আটাশ পূর্ণ করা হাওয়েডেস বুন্দেসলিগার দল এফসি শালকের অধিনায়কও। গত বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে মাত্র তিনজন খেলোয়াড় প্রতিটি ম্যাচই পুরো সময় ধরে খেলে গেছেন। গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার আর অধিনায়ক ফিলিপ লামের সাথে তৃতীয় ব্যাক্তিটি এই বেনেডিক্ট হাওয়েডেস।