• লা লিগা
  • " />

     

    বদলি মেসির 'শাপমুক্তির' দিনে বেতিসকে হারাল বার্সেলোনা

    বদলি মেসির 'শাপমুক্তির' দিনে বেতিসকে হারাল বার্সেলোনা    

    লিওনেল মেসির জন্য ইদানীং অনেক অভিজ্ঞতা নতুন করে হচ্ছে। লিগের ম্যাচে শেষ কবে বেঞ্চে বসে ছিলেন, তার নিজেরও মনে নেই। কিন্তু আজকের ম্যাচের আগে হঠাৎ একাদশে চমক, মেসি নেই। আরও অন্যরকম ও তিক্ত অভিজ্ঞতা হচ্ছে আরও কিছুদিন ধরে। ওপেন প্লেতে গোল শেষ কবে পেয়েছেন, তিনি নিজেও হয়তো ভুলে গেছেন। সেই ভুলে যাওয়ার স্বাদও পেলেন আজ, তার আগে অবশ্যই পেনাল্টিতে পেয়েছেন গোল। সব মিলে দশ জনের রিয়াল বেতিসকে ৫-২ গোলে হারিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে বার্সা, আর অবশ্যই ঘাম দিয়ে একটু জ্বর ছেড়েছে রোনাল্ড কোমানের।

     সেই ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ লিগের কোনো ম্যাচে একাদশে ছিলেন না। টানা ৩৬ ম্যাচ খেলার পর আজ এই অভিজ্ঞতা হলো মেসির। বার্সার একাদশে তাই আনসু ফাতি ফলস নাইন, আর সামনে পেদ্রি, গ্রিজমান আর দেম্বেলে। আক্রমণ আর পালটা আক্রমণের ম্যাচে শুরু থেকেই সুযোগ পেতে থাকে দুই দল। গ্রিজমান শুরতেই মিস করে বসেন গোটা কয়েক সুযোগ। শেষ পর্যন্ত ২২ মিনিতে এগিয়ে দেন উসমান দেম্বেলে। বল পেয়ে ছিলেন ডান দিকে, কাট ইন করার পর বাঁ পায়ের গোলার মতো শটে জালে জড়িয়ে দিয়েছেন বল। এবার চোট থেকে ফেরার পর একটু একটু করে ফর্ম ফিরে পাচ্ছেন, তবে লা লিগায় গোল পেলেন ১১ মাস পর। এরপর বার্সা আবার সুযোগ পায় এগিয়ে যাওয়ার, আনসু ফাতিকে ফাউল করে পেনাল্টি পাইয়ে দেন মান্ডি। কিন্তু গ্রিজমানের শট ঠেকিয়ে দেন ক্লদিও ব্রাভো, দুঃস্বপ্নের প্রথমার্ধে আর গোল পাওয়া হয়নি বার্সার। উলটো শেষ দিকে খেয়ে বসে একটা। টের স্টেগেনও গোটা দুয়েক দারুণ সেভ করে ফেললেও শেষ পর্যন্ত আর অরক্ষিত রাখতে পারেননি জাল। বার্সারই সাবেক টনি সারাবিয়া গোল করে সমতা ফেরান প্রথমার্ধের শেষের দিকে। কোমানের কপালে তখন নিশ্চিতভাবেই ভাজ।

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নামিয়ে দেন মেসিকে। মিনিট চারেকের মধ্যেই এগিয়ে যায় বার্সা। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবার ক্রস ভেসে আসে, মেসির ডামির পর গ্রিজমান ফাঁকায় পেয়ে যান বল। ওখান থেকে মিস করলে নিজেই হয়তো মাঠ থেকে নেমে যেতেন। ভুল করেননি, গোল করে শাপমুক্ত হয়েছেন গ্রিজমান। মেসি মাঠে নামবেন আর পেনাল্টি থেকে গোল পাবেন না, সেটাও কী হয়? ৫৮ মিনিটে দেম্বেলের শট গোল লাইনে হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দেন মান্দি, ভিএআর থেকে রেফারি রায় দেন পেনাল্টির। এবার মেসি নিজেই গ্রিজমানকে দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে পেনাল্টি নিতে হয়। মান্দি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন, দশ জনের বেতিসের বিপক্ষে বার্সার জয়টা নিশ্চিত হয়ে যায় প্রায়।

    এর পরেই একের পর এক সুযোগ পেয়ে নষ্ট করতে থাকেন মেসি, পেদ্রিরা। ওদিকে বার্সা ডিফেন্ডাররা বোধ হয় বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার খবর শুনে মনযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন, সেই সুযোগে পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা মরেনোর পাস থেকে গোল করে ব্যবধান কমান মরন। তবে মেসির ওই মুয়হূর্তটাড় অপেক্ষা ছিল, সেটা আসে সার্জি রবার্তোর দুর্দান্ত এক ব্যাকহিল থেকে। এবার বাঁ পায়ে সামনে গোলরক্ষককে একা পেয়েও খানিক অপেক্ষা করেন মেসি, এরপর ধীরে সুস্থে গোলার মতো শট জড়িয়ে দেন জাল। উদযাপনে আনন্দ নয়, নির্লিপ্তির মধ্যে হয়তো ছিল ভারমুক্তির স্বস্তি। ৯১ দিন পর যে ওপেন প্লেতে গোল পেয়েছেন, আর এই মৌসুমে প্রথমবার। এরপর পেদ্রি আরেকটি গোল করে ব্যবধান বাড়িয়েছেন আরও, অফসাইড না হলে মেসির হ্যাটট্রিক অনায়াসেই হয়ে যায়। তবে সেটা নিয়ে বেশি মন খারাপ কথা নয়। দলের জয়টাই তো বড় দিন শেষে।