• লা লিগা
  • " />

     

    ৩ পেনাল্টির ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ায় বিধ্বস্ত রিয়াল

    ৩ পেনাল্টির ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ায় বিধ্বস্ত রিয়াল    

    ফুলটাইম
    ভ্যালেনসিয়া ৪-১ রিয়াল মাদ্রিদ


    ভ্যালেনসিয়ায় হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল রিয়াল মাদ্রিদ। চার ডিফেন্ডারের তিনজন পেনাল্টি দিয়েছিলেন, আরেকজন করেছেন আত্মঘাতী গোল। এমন দিনে ধ্বংসস্তুপে চাপা পড়াই নিয়তি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। ৩ পেনাল্টি থেকে গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেছেন ভ্যালেনসিয়ার কার্লোস সোলের। দারুণ এক জয়ে এই মৌসুমে ধুঁকতে থাকা ভ্যালেনসিয়া লাফ দিয়ে পয়েন্ট টেবিলের ১৬ থেকে ঢুকে গেছে শীর্ষ দশে।

    রিয়াল অবশ্য খারাপ কিছুর ইঙ্গিত আগেই পেয়েছিল। ম্যাচের আগের দিন কাসেমিরো ও এডেন হ্যাজার্ড করনাভাইরাসের কারণে ছিটকে গেলেন। কাসেমিরোকে ছাড়া এই মৌসুমে খেলা দুই ম্যাচে একটিতে ড্র ও আরেকটি হেরেছিল রিয়াল। গেল মৌসুমে লা লিগায় কাসেমিরোবিহীন রিয়াল ৫ ম্যাচের ৪ টিতেই জিততে পারেনি। হ্যাজার্ডের চেয়ে কাসেমিরো না থাকার অভাব যে রিয়ালকে বেশি ভোগাবে সেটাও অনুমেয় ছিল। কিন্তু রিয়াল ভেঙে পড়ল নাটকীয়ভাবে।


    মেস্তায়ায় রিয়ালের শুরুটা প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ছিল। সে তুলনায় ভ্যালেনসিয়া ছিল বাক্সবন্দী। ২৩ মিনিটে করিম বেনজেমার বক্সের বাইরে থেকে করা রকেট গতির শট জালে জড়ালে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। তখন বড় স্বস্তিও পেয়েছিলেন জিনেদিন জিদানও। কিন্তু বিরতির আগেই আবার স্বস্তি উবে যেতে সময়ও লাগেনি।

    বাম দিক থেকে আসা ক্রস গিয়ে লেগেছিল লুকাস ভাসকেজের হাতে। রেফারিও তখন বাজিয়েছেন পেনাল্টির বাঁশি। কিন্তু সেই পেনাল্টি নিয়ে নাটক হয়েছে কয়েক দফায়। কার্লোস সোলারের প্রথম শট থিবো কোর্তোয়া ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন, পরের চেষ্টায় সোলার বল মেরেছিলেন বারপোস্টে। তৃতীয় চেষ্টায় ইউনুস মুসা রিয়ালের জালে বল পাঠান। কিন্তু রেফারি মাঠের বাইরে রিপ্লে দেখে এসে সেই গোলও বাতিল করে পুনরায় স্পটকিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সোলার এবার সফল, ভ্যালেনসিয়াও ফেরে ম্যাচে।

    বিরতির ঠিক আগে রাফায়েল ভারান করে বসেন আত্মঘাতী গোল। অবশ্য তার তেমন কিছু করারও ছিল না। ম্যাক্সি গোমেজের শট গোললাইন পেরুনোর আগেই ঠেকাতে চেয়েছিলেন ভারান। ওই গোলেও আরেকবার মাঠের বাইরে রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে রেফারিকে। কোর্তোয়া বল ফেরত পাঠালেও, তার আগেই বল পেরিয়ে গিয়েছিল সীমানা।

    বিরতির পর রিয়ালের দুর্দশা কেবল বেড়েছে। ৪৭ মিনিটে কিং লির বক্সের বাইরে থেকে করা শট বারপোস্টে না লাগলে ব্যবধান তখনই বাড়াতে পারত রিয়াল। যদিও তা নিয়ে আফসোস করতে হয়নি ভ্যালেনসিয়াকে। কিছুক্ষণ পর কাঙ্খিত তৃতীয় গোলটি পেয়েই যায় তারা। এবারও সেই পেনাল্টি থেকেই। থিবো কোর্তোয়ার ভালো একটি সেভের পর গোলের সামনে বলের অপেক্ষায় ছিলেন গোমেজ। টার্ন নিয়ে ফাঁকা জালে বল পুরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্সেলো তাকে বাধা দিলে দ্বিতীয়বারের মতো পেনাল্টি পেয়ে যায় ভ্যালেনসিয়া। ৫৪ মিনিটে আরও একবার কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে সোলের ভ্যালেনসিয়াকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন।

    এরপর মিনিট দশেক না পেরুতেই আরেকবার পেনাল্টি পেয়ে যায় ভ্যালেনসিয়া। এবার দোষ করেন সার্জিও রামোস। বক্সের ভেতর মুসার পায়ে পাড়া দিয়েছিলেন রিয়াল অধিনায়ক। সোলের আরও একবার সফল স্পটকিক নিয়ে ভ্যালেনসিয়াকে ৬৩ মিনিটের ভেতরই নিয়ে গিয়েছিলেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

    জিদান ভ্যালেনসিয়ার বিপক্ষে মিডফিল্ডে চমক দেখিয়েছিলেন ইস্কোকে নামিয়ে, টনি ক্রুস ছিলেন বেঞ্চে। মদ্রিচ, ভালভার্দে আর ইস্কোর কেউ কাসেমিরোর অভাব পূরণ করতেও পারেননি। আক্রমণভাগে বেনজেমার আর আসেনসিওর সঙ্গী ছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। শুরুটা ভালো করলেও এরপর দুর্বল রক্ষণের দায় ঘোচাতে পারেননি কেউই। ম্যাচের ১৫ মিনিট বাকি থাকতে বেনজেমা কুঁচকির চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে জিদানের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছেন আরও। চার গোল খাওয়ার পর মার্টিন ওডেগার্ড, রদ্রিগো ,মারিয়ানো ডিয়াজ, টনি ক্রুস, লুকা ইয়োভিচদের মাঠে নামিয়েও কোনো লাভ হয়নি আর জিদানের।

    মৌসুমের দ্বিতীয় হারের পর ৮ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থাকা রিয়াল সোসিয়েদাদের চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে চারেই থাকল রিয়াল। ৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা আছে পয়েন্ট টেবিলের সাতে।