• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    মিরাজ-রাব্বির পর তামিমের ৭৭*-এ রাজশাহীকে টপকাল বরিশাল

    মিরাজ-রাব্বির পর তামিমের ৭৭*-এ রাজশাহীকে টপকাল বরিশাল    

    মিনিস্টার রাজশাহী ১৩২-৯, ২০ ওভার (মাহাদি ৩৪, রাব্বি ৩১, শান্ত ২৪, রাব্বি ৪/২১, মিরাজ ২/১৮, তাসকিন ১/১৯)
    ফরচুন বরিশাল ১৩৬-৫, ১৯ ওভার (তামিম ৭৭*, ইমন ২৩, হৃদয় ১৭, মুগ্ধ ২/১৭, এবাদত ১/১৯)
    বরিশাল ৫ উইকেটে জয়ী 


    মেহেদি হাসান মিরাজ, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও তাসকিন আহমেদ কাজটা এগিয়ে রেখেছিলেন ফরচুন বরিশালের জন্য। মিনিস্টার রাজশাহীকে ১৩২ রানে আটকে দেওয়ার পর বরিশালের ব্যাটিং লাইন-আপের অবশ্য বেশ একটা পরীক্ষাই হয়ে গেল। সেখানে অধিনায়ক তামিম ইকবালের ৬১ বলে অপরাজিত ৭৭ রানে ভর করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম জয় পেলো বরিশাল, টানা দুই ম্যাচ জয়ের পর প্রথমবার হারলো রাজশাহী। 

    রানতাড়ায় বরিশালকে কয়েকদফা চাপে ফেলেছিল রাজশাহী। তবে বারবারই সেখান থেকে বের হয়ে এসেছে বরিশাল, সঙ্গে ক্যাচ মিসের খেসারতও দিতে হয়েছে রাজশাহীকে। ১৩৩ রান ডিফেন্ড করতে ইনিংসের প্রথম ওভারই অভিষেক করা রাজাকে দিয়েছিলেন রাজশাহী অধিনায়ক শান্ত। রাজা করলেন টানা দুটি ফ্রি-হিট, তবে সে ওভারে ৪ রানের বেশি দেননি তিনি। দ্বিতীয় ওভারে এবাদতের শর্ট বলে জোরের ওপর খেলতে গিয়ে থার্ডম্যান ক্যাচ দিয়েছেন মিরাজ। পরের দুই ওভারে এসেছে দুটি বাউন্ডারি, তখনও রাজশাহীর বিপক্ষে চাপেই ছিল বরিশাল। এবাদতের বলে একটা জীবনও পেলেন ইমন। 

    এরপরের ৯ বলে যা হলো, তাকে সেই ওল্ড-স্কুল ধাঁচে বলতে হয়-- বাউন্ডারি বৃষ্টি। সেই ৯ বলে হলো ৮টি বাউন্ডারি-- ৭টি চার, ১টি ছয়। মাহাদিকে তামিম মেরেছেন দুই চার, ইমন মেরেছেন ছয়-চার-চার ক্রমে। এরপর রাজার পরের ওভারে প্রথম ৩ বলে তামিম চার মারলেন আরও ৩টি। পাওয়ারপ্লের শুরুর অংশে চাপে থাকা বরিশালই তুলে ফেললো শেষ পর্যন্ত ৫৩ রান। 

    তামিম-ইমনের ৬১ রানের জুটি ভেঙেছেন মাহাদি, ফিরতি স্পেলে এসে। তার লেংথে ধন্দে পড়ে বোল্ড হয়েছেন ইমন, সময়মতো ব্যাট না নামাতে পেরে, ১৭ বলে ২৩ রান করে। ইমন যেমন ছিলেন, তৌহিদ হৃদয় শুরুতে ছিলেন ঠিক তার বিপরীত। 


    প্রথম ১১ বলে তিনি করেছিলেন মাত্র ২ রান, রেজাকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে একটা ছয় মেরে সে চাপ একটু আলগা করেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে ১৭ করে ফিরেছেন মুগ্ধকে পুল করতে গিয়ে। সে ওভারেই এ ম্যাচ হুট করেই একটু উত্তেজনা ছড়ালো। হৃদয়ের পর আফিফ খোঁচা মেরে ক্যাচ দিলেন উইকেটকিপারকে, সে ওভারেই জীবন পেলেন তামিম। 

    এরপর হুট করে আসা চাপ একটু আলগা করলেন তামিম, প্রথমে শান্তকে ছয় মেরে। ইরফান শুক্কুর রান-আউট হলেন, এরপর মুগ্ধকে ওয়াইড লং-অন দিয়ে ফ্ল্যাট একটি ছয় মেরে আবারও রাজশাহীকে হতাশ করলেন তামিম।  পিএসএল থেকেই ভাল শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি, তামিম এদিন সেটি করলেন। শান্তকে চার মেরে, ৪৫ বলে ফিফটি করেছিলেন, ম্যাচ শেষ করেই আসলেন। 

    এর আগে অধিনায়ক তামিমকে বেশ স্বস্তিই দিয়েছিলেন তার বোলাররা। মিরাজ-রাব্বি-তাসকিন-- এ ৩ জন মিলে ১২ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৫৮ রান, নিয়েছেন ৭ উইকেট। ৬ষ্ঠ উইকেটে মাহাদি হাসান ও ফজলে রাব্বির জুটিতে উঠেছিল ৬৫ রান, বরিশাল ১৩২ পর্যন্ত গিয়েছিল মূলত সে জুটিতে ভর করেই। 

    টানা দুই ম্যাচ জিতে আসা রাজশাহীকে এদিন আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন তামিম। পাওয়ারপ্লে উইকেটশূন্য কাটাতে হয়েছে তাদের, নাজমুল হোসেন শান্ত ও আনিসুল হোসেন ইমন অবশ্য ৩৯ রানের বেশি তুলতে পারেননি। পাওয়ারপ্লের পর ঠিক প্রথম বলেই এ ম্যাচে দলে আসা রাহিকে স্লট থেকে তুলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন শান্ত। 

    পরের ওভারে রনি তালুকদার বেশ ক্লোজ থেকে কাট করতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হয়েছেন মিরাজের বলে। ইমনের সঙ্গে আশরাফুলের জুটি একটু মোমেন্টাম আনার ইঙ্গিত দিলেও আশরাফুলের রান-আউটে হয়নি, মিসফিল্ডে ডাবলস চুরি করতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে আশরাফুলকে। ইমনও টেকেননি, মিরাজের সে ওভারেই তুলে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন। পরের ওভারে রাব্বিকে পুল করতে গিয়ে একই দশা হয়েছে নুরুল হাসান সোহানের।  

    মাহাদি-রাব্বির জুটি এরপরই। এর আগেই তাসকিনকে একটা চার মেরেছিলেন রাব্বি, এরপর আফিফের প্রথম বলে ছয় মেরে শুরু করেছিলেন মাহাদি। এরপর আরও দুটি ছয় মেরেছেন মাহাদি, একটি রাব্বিকে, আরেকটি সুমন খানকে। 

    এ দুজনের জুটি অবশ্য রাজশাহীকে যে আশা জুগিয়েছিলেন, সেটি পূরণ করতে পারেননি, ১৮তম ওভারে রাহিকে কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি তারা। তাসকিনকে তুলে মারতে গিয়ে ১৯তম ওভারে ধরা পড়ার আগে রাব্বি করেছেন ৩২ বলে ৩১। শেষ ওভারে রাব্বি নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম ও শেষ বলে ক্যাচ দিয়েছেন যথাক্রমে রেজা ও রাজা, মাঝে তৃতীয় বলে বোল্ড হয়েছেন ২৩ বলে ৩৪ করা মাহাদি।