• বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ ২০২০
  • " />

     

    বরিশালকে দিয়ে চট্টগ্রামের তিনে তিন

    বরিশালকে দিয়ে চট্টগ্রামের তিনে তিন    

    গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১৫১-৭, ২০ ওভার (লিটন ৩৫, সৈকত ২৭, মোসাদ্দেক ২৮, শামসুর ২৬, রাহি ২/৪২, রাব্বি ১/২৩, মিরাজ ১/২৫)
    ফরচুন বরিশাল ১৪১-৮, ২০ ওভার (তামিম ৩২, আফিফ ২৪, সুমন ১৫*, শরিফুল ৩/২৭, মোস্তাফিজ ৩/২৩) 

    গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম ১০ রানে জয়ী 


    বেক্সিমকো ঢাকা ও জেমকন খুলনা পাত্তাই পায়নি। সে হিসেবে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে লড়াইটা অন্তত করলো ফরচুন বরিশাল। তবে শেষ পর্যন্ত হেরেছে তারাও। নাহিদুল ইসলামের শেষদিকের ক্যামিওতে ভর করে ১৫১পর্যন্ত যাওয়া চট্টগ্রাম বরিশালকে আটকে দিয়েছে ১৪১ রানেই, দুই বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের তোপে। ফলে টুর্নামেন্টে প্রথম তিন ম্যাচেই জিতল চট্টগ্রাম। 

    দুই দলেরই ছিল এটি তৃতীয় ম্যাচ। প্রথম দুটিতে দাপুটে জয় পাওয়া চট্টগ্রামের যেমন মিডল অর্ডারের একটা পরীক্ষা বাকি ছিল, তেমনি রাজশাহীর বিপক্ষে জয় পাওয়া বরিশালের দেখার অপেক্ষা ছিল তামিম ছাড়া বাকিদের পারফরম্যান্স। চট্টগ্রামের মিডল-অর্ডার যে খুব ভাল করলো তা নয়, অন্যদিকে বরিশালও পার হতে পারল না তামিমকে ছাড়া। ্মোস্তাফিজ-শরিফুলের ৬ উইকেটের সঙ্গে স্পিনারদের আঁটসাঁট বোলিং চট্টগ্রামকে এনে দিল তৃতীয় জয়। 

    ১৫২ রানের লক্ষ্য, বরিশালের অপরীক্ষিত ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য ছিল চ্যালেঞ্জ। ওপেনিংয়ে এদিন বারকয়েক সুযোগ পেয়েছিলেন মিরাজ-- প্রথমে ক্যাচ তুলেও বেঁচে গিয়েছিলেন মোসাদ্দেক ঠিক জাজ করতে না পারায়, এরপর বাউন্ডারির ভেতরে ক্যাচ নিয়েও সীমানাদড়ির ওপর পড়ে গিয়েছিলেন জিয়া। শেষ পর্যন্ত শরিফুলের শর্ট বল সামলাতে না পেরে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন, ২৩ রানের ওপেনিং জুটির পর। 

    মিরাজের পর ফিরেছেন পারভেজ হোসেন ইমন, ৮ম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিং করতে আসা মোস্তাফিজের শর্ট বলে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এর আগে পাওয়ারপ্লেতে বরিশাল তুলেছিল ৪১ রান, শরিফুলের পর নাহিদুলকে ছয় মেরে তামিম আশা জোগাচ্ছিলেন। তবে রান ও বলের ব্যবধান একটু বেড়ে যাওয়ার পর মোসাদ্দেককে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে লং-অফে ক্যাচ দিয়ে বরিশাল অধিনায়ক ফিরেছেন সমানসংখ্যক বলে ৩২ রান করে। 

    এদিনও তাই মিঠুনের জন্য কাজে লেগেছে মোসাদ্দেক-টোটকা। একটু খরুচে হলেও কাজের কাজ করেছেন সৌম্য সরকারও, ছয়-চার মারা তৌহিদ হৃদয়কে ফিরিয়ে। সৌম্যর সে ওভারের পর শেষ ৩০ বলে বরিশালের লাগতো ৫০ রান, আফিফ-ইরফান শুক্কুর-মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনরা যেটি পারেননি। শুক্কুর ও অঙ্কন ক্যাচ দিয়েছেন মোস্তাফিজের বলে, আর শরিফুলকে স্টাম্প ছেড়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন আফিফ। 

    ১৯তম ওভারে শরিফুলকে দুই চারের পর শেষে গিয়ে মোস্তাফিজকে একটা ছয় মেরেছিলেন সুমন, তবে সেটি শুধু ব্যবধানটাই কমিয়েছে বরিশালের। যে ব্যবধান বলছে, শেষদিকে সৈকত আলির ১১ বলে ২৭ রানের সঙ্গে নাহিদুলের দুই চারও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রামের জন্য। 

    টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা চট্টগ্রাম ওপেনিং জুটি খেলেছে এদিন আগের দুই দিনের চেয়ে তুলনামূলক মোটামুটি চাপ ছাড়াই, ১০০-এর নিচে রানতাড়ায় সৌম্য সরকার ও লিটন দাস তুলেছিলেন যথাক্রমে ৭৯ ও ৭৩। এদিন তারা তুলতে পারলেন ২২ রান। ফরচুন বরিশালকে প্রথম ব্রেকথ্রু দিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহি, তার শর্ট অফ আ লেংথে পুল করতে গিয়ে টপ-এজড হয়ে ফিরেছেন সৌম্য, ৬ বলে ৫ রান করেই। 

    টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ব্যাটিংয়ে নামা মোহাম্মদ মিঠুন ছিলেন আক্রমণাত্মক। তবে অতি-আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। সুমন খানকে চার-ছয় মারার পর আবারও বড় শটের চেষ্টায় ক্যাচ তুলেছেন তিনি, ১৩ বলে ১৭ রান করে। 

    ২ উইকেট হারালেও পাওয়ারপ্লেতে ৫২ রান তুলেছিল চট্টগ্রাম, একদিকে ছিলেন লিটন দাস। তবে মিঠুনের উইকেটের পর টানা ২৬ বল কোনো বাউন্ডারি পায়নি চট্টগ্রাম, উলটো ফিরেছেন লিটনও। মিরাজকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেছেন ২৫ বলে ৩২ রান। পাওয়ারপ্লের পর ১৬ ওভার পর্যন্ত-- এই ১০ ওভারে চট্টগ্রাম বাউন্ডারি মারতে পেরেছে মাত্র ২টি।

    চট্টগ্রামের বাউন্ডারিখরা কাটিয়েছিলেন শামসুর, তবে দুই চারই শেষ হয়ে থেকেছে তার ২৮ বলের ইনিংসে। কামরুল ইসলাম রাব্বির বেশ বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে কট-বিহাইন্ড হয়েছেন তিনি ২৬ রান করে। নামার পর থেকে বারকয়েক বড় শট খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, শেষ পর্যন্ত রাহির বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিতে হয়েছে তাকে ৯ বলে ২ রান করার পর।

    চট্টগ্রাম এরপর মোমেন্টাম পেয়েছে সৈকত আলির ব্যাটে। নামার পর প্রথম বলেই রাহিকে ফ্লিক করে চার মেরেছিলেন তিনি, একই বোলারের করা ১৯তম ওভারে মেরেছেন তিনটি ছয়-- ওয়াইড লং অন থেকে লং-অনের মাঝ দিয়ে। অবশ্য এজন্য তাসকিনকে একটু ধন্যবাদ দিতে পারেন সৈকত, ওভারের প্রথম বলেই তিনি যে ক্যাচ ছেড়েছেন তার থার্ডম্যানে। এর আগে ১৮তম ওভারে মোসাদ্দকে রাহিকে ছয় মেরেছিলেন একটি, আর শেষ ওভারে তাসকিনকে দুটি চার মেরেছেন নাহিদুল। তাতেই দেড়শ পেরিয়েছিল চট্টগ্রাম।